গোবিন্দ রায়: আস্থা নেই সিবিআইয়ে! নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে অভয়ার বাবা-মা। বৃহস্পতিবার সকালে নতুন মামলার আর্জি জানান তাঁরা। তাঁদের কথায়, "বর্তমানে যে তদন্ত চলছে তাতে আস্থা নেই। তাই নতুন করে খুনের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক।" তদন্তের নামে তথ্য প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ মৃতার বাবা-মায়ের।
আগস্ট থেকে চর্চায় আর জি কর। তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিল গোটা বাংলা। তবে তিনমাসের মাথায় এই ঘটনায় জামিন পেয়েছেন আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, চার্জশিট পেশ করতে পারেনি সিবিআই। এর পরই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এসবের মাঝে বৃহস্পতিবার সকালে নতুন করে তদন্তের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভয়ার বাবা-মা। তাঁরা বলেন, "তদন্তের নামে তথ্যপ্রমাণ লোপাট হয়েছে। ইতিমধ্যেই ট্রায়াল শুরু হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এখনই আদালত হস্তক্ষেপ না করলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।" এর পরই সিবিআইকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
এক সময়ে সিবিআই তদন্তের আবেদনে হাই কোর্টে গিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। এখন আবার তাঁরাই সিবিআই তদন্তে অনাস্থা দেখাচ্ছেন। যা নিয়ে না না প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি অন্য কোনও শক্তি নির্যাতিতার বাবা-মা কে সামনে রেখে আর জি কর কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রাই কে বাঁচানোর চেষ্টা করছে ? এনিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তৃণমূলের তরফেও। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "কলকাতা পুলিশে আস্থা নেই, সিবিআই তে আস্থা নেই, হচ্ছেটা কী ? এটা কি কোনও কোনও মহল বাবা-মাকে সামনে রেখে সঞ্জয় রায়কে বাঁচানোর চেষ্টা করছে ?" আশঙ্কা প্রকাশ করে কুণাল বলেন, "যেখানে সঞ্জয় নামে এই লোকটি পৈশাচিক ঘটনায় যুক্ত, সেটা কলকাতা পুলিশ ও সিবিআই তদন্তে প্রমাণিত। এখন যদি বাবা-মায়ের আবেগকে বিভ্রান্ত করে জল ঘোলা করা হয়, তাহলে তো আশঙ্কা থাকে এই সঞ্জয় রাইকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে না তো ?" কুনালের মতে, "বিচার প্রায় শেষের মুখে এখন যদি অন্য কোনও কেস 'অ্যাকসেপ্ট' হয়ে যায়, তাহলে এই বিচারের রায় জটিলতার মধ্যে পড়ে যাবে।"
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ আগস্ট, নাইট শিফট ছিল আর জি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের। পরদিন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। এই ঘটনায় প্রথমে তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে। এর পর ধর্ষণ ও খুনের মামলার জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে। সিবিআই ঘটনার তদন্তভার পায়।