রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) সভাপতি হওয়ার পথে মূল কাঁটা এখন কেশব ভবন। আরএসএস চাইছে আদি বিজেপির কাউকে সভাপতি করা হোক। কোনও দলবদলু বা তৎকাল বিজেপির কেউ রাজ্য সভাপতির পদে বসুক তা চাইছে না কেশব ভবন। দিল্লি অবশ্য শুভেন্দু অধিকারীকেই রাজ্য সভাপতি করার ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দিয়ে দিয়েছে।
সুকান্ত মজুমদারকে বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি পদে রাখতে চায় না দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু শুভেন্দুর ক্ষেত্রে আরএসএস (RSS) আবার নারাজ হলেও, শুভেন্দুর বিকল্প কোনও নামও দিল্লিকে দিতে পারছে না কেশব ভবন। দিলীপ শিবিরও চাইছে সভাপতি বদল হলে সেখানে আদি বিজেপির কেউ বসুক। গেরুয়া শিবির সূত্রে এমনই খবর। কাজেই, শুভেন্দুকে সভাপতি পদে বসাতে কেশব ভবন রাজি না থাকায় রাজ্যে দলের কাণ্ডারী বদলের প্রক্রিয়াটা কিছুটা জটিল হয়ে রয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত যা খবর, দিল্লি শুভেন্দুকে অধিকারীকেই চাইছে। ফলে নিশ্চিত অপসারণের মুখে রয়েছেন সুকান্ত এবং দলের রাজ্য সভাপতিত্বের পথে এগিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু।
[আরও পড়ুন: প্রাথমিক টেটে বেনজির, প্রথমবার সিলেবাস, মডেল প্রশ্নপত্র-সহ গাইডলাইন প্রকাশ পর্ষদের]
এদিকে, কেশব ভবনের মন পেতে আরও উগ্র হিন্দুত্ব দেখাতে চাইছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিভিন্ন কর্মসূচিতে ভাষণ দিতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে উগ্র হিন্দুত্বের পক্ষে তাঁকে সওয়াল করতে দেখা যাচ্ছে। সুকান্ত সভাপতি পদ থেকে সরছেন এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই শুভেন্দুর সভাপতি হওয়া আটকাতে প্রবল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আদি বিজেপি শিবির। আদি বিজেপিরা মনে করছে, শুভেন্দু রাজ্য সভাপতি হলে দলবদলু অর্থাৎ তৃণমূলের হাতেই দলের রাশটা চলে যাবে। যারা পরে দলে এসেছে বা কোনও দলবদলু, এমনকী যাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থেকে রাজ্যস্তরে একসময়ে বিজেপির অভিযোগই ছিল। তারাই দলে ঢুকে ছড়ি ঘোরাবে। জেলায় জেলায় যারা আদি বিজেপি তারা পিছনের সারিতে হয়ে যাবে। আদি বিজেপির একাংশ ও সংঘ ঘনিষ্ঠ নেতারা এই বিষয়টা কেশব ভবনের কর্তাদেরও বুঝিয়েছে।
একইসঙ্গে আদি বিজেপি শিবির দিল্লিকেও বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, সুকান্ত মজুমদার থাকুক। বিরোধী দলনেতা হিসেবেই বেশি কাজ করুক শুভেন্দু অধিকারী। মূলতঃ মেদিনীপুর বা শুভেন্দু যে যে জেলাগুলিতে তৃণমূলের তরফে দায়িত্বে ছিলেন, সেইসব জেলায় তো একসময় শুভেন্দুর বিরুদ্ধেই বিজেপি আন্দোলন করেছে। এখন সেই জেলাগুলিতে আদি বিজেপিরা মুখ দেখাতে পারছে না। যার রেশ ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে কিছুটা দেখা গিয়েছে। এই বিষয়টাও দিল্লিকে বোঝাতে চাইছে আদি বিজেপি শিবির। এসব সত্ত্বেও দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতারা কিন্তু এখনও পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীকেই বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছেন।