রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গ বিজেপির ব্যাটন বদল হতেই একাধিক নয়া সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ-আলোচনা, গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। শমীক ভট্টাচার্য নতুন রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর ব্যতিক্রমী ভাষণে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, সংগঠনে ব্যাপক রদবদল হতে চলেছে। উগ্র হিন্দুত্বের লাইন থেকেও সরে আসছে বিজেপি। বরং 'সবকা সাথ' বার্তা দিয়েছিলেন শমীক। এই গুঞ্জনও শোনা গিয়েছিল, শমীকের হাতে দায়িত্ব যাওয়ার ফলে এবার সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে দিলীপ ঘোষ গোষ্ঠী। এনিয়ে এবার মুখ খুললেন শমীক ভট্টাচার্য। বললেন, ''দিলীপ ঘোষকে যেখানে কাজে লাগানোর সেখানেই লাগানো হবে।''
ইতিমধ্যে ৬, মুরলীধর সেন লেনের দলীয় কার্যালয়ের ভোলবদল করে ফেলেছেন রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। শনিবার কার্যালয় থেকে সমস্ত নেতার ছবি সরিয়ে বড় করে লাগানো হয়েছে দলের প্রতীক পদ্মের ছবি। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার ছবিও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কারণ, তিনি মনে করেন যে ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। এবার রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিয়েও মুখ খুললেন বর্তমান শমীক ভট্টাচার্য।
দিন দুই আগে শমীকের শপথ অনুষ্ঠানে ব্রাত্য ছিলেন দিলীপ ঘোষ। ওইদিন দলের কারও মুখে তাঁর নামটুকুও শোনা যায়নি। ফলে এই জল্পনা আরও উসকে উঠেছিল যে তবে কি দল আর দিলীপকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না? শনিবার তা স্পষ্ট করে দিলেন শমীক। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, বুঝিয়ে দিলেন। তাঁর কথায়, ''দিলীপ ঘোষ কোথাও যাননি। উনি কোথাও যাবেনও না। দিলীপ ঘোষ কোনও সেলেবেল কমোডিটি নয়। দল ঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। দিলীপ ঘোষকে যেখানে কাজে লাগানোর, সেখানেই লাগানো হবে। দিলীপ ঘোষ ছিলেন, আছেন, থাকবেন।''
এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়েও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন নয়া সভাপতি। মুরলীধর সেন লেনের দলীয় কার্যালয় থেকে শুভেন্দু-সহ নেতাদের ছবি সরানো নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর উত্তর, ''আমি এটা বিশ্বাস করি না যে তিনি শুধু বিজেপির হৃদয়ে রয়ছেন, তৃণমূলের হৃদয়েও আছেন। তৃণমূল সারাদিনে বারবার শুভেন্দু-শুভেন্দু করে, তা থেকেই স্পষ্ট।'' তাঁর এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। হিন্দুত্ব নিয়ে শমীক-শুভেন্দুর ভিন্নমত প্রকাশ্যে এসেছে ইতিমধ্যে। অনেকেই বলছেন, রাজ্য সংগঠনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটার বদলে জিইয়ে রইল। আর বর্তমান রাজ্য সভাপতির এহেন মন্তব্যে আরও একটি বিষয়ও স্পষ্ট হয়ে গেল, গেরুয়া সংগঠনের আদি নেতৃত্বকেই ফের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।