রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গ বিজেপির এখন 'শাঁখের করাত' দশা। দলের সাংসদই দলের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। এক টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ঠারেঠোরে রাজ্যের গেরুয়া শিবিরকে একহাত নিয়েছেন। তমলুকের বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলেছে শমীক ভট্টাচার্য, সুকান্ত মজুমদারদের। এনিয়ে শুক্রবার বঙ্গ বিজেপি কোর কমিটি বৈঠক করে। জানা গিয়েছে, সাংসদের মন্তব্যের ব্যাখ্যা চাইবেন দলের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। এনিয়ে তিনি কথা বলবেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কার্যত দলের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরণ ঘটান তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিজেপি আদৌ তৃণমূলকে হারাতে চায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। তাঁর দাবি, মোদি সরকারের কার্যকলাপ দেখে তাঁর মনে হয়েছে বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি বদলাতে চায় না কেন্দ্র। পাশাপাশি হিন্দি বলয় থেকে নেতাদের এনে প্রচারেরও তীব্র বিরোধিতা করেছেন তিনি। তাঁর মতে, হিন্দি বলয়ের নেতারা বাংলার মানুষের মন বোঝেন না। এখানকার জলহাওয়া-মানুষ উত্তর ভারতের সঙ্গে মেলে না। তাই দিল্লির নেতাদের বাংলায় পাঠিয়ে ভোটে জেতার ভাবনা অবাস্তব বলে কড়া সুরেই সমালোচনা করেছেন বিজেপি সাংসদ। বঙ্গে ৩৫৫ ধারা জারি নিয়ে বঙ্গ বিজেপির মৌন অবস্থানও তাঁকে যথেষ্ট আলোড়িত করেছে বলে জানান।
ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে দলীয় সাংসদের এসব বক্তব্য পদ্ম শিবিরকে যে বেশ অস্বস্তি ফেলেছে, তা বলাই বাহুল্য। এনিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠকেও বসেছে বিজেপির কোর কমিটি। সূত্রের খবর, সেখানেই ঠিক হয়েছে, রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এ বিষয়ে কথা বলবেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি কী বলতে চেয়েছেন, কী তাঁর ব্যাখ্যা - এসব জানতে চাইবেন শমীক। তবে দলের কারও কারও মতে, প্রাক্তন বিচারপতি তথা বর্তমান সাংসদ আবেগপ্রবণ মানুষ। আবেগের বশে হয়ত নিজস্ব মতামত প্রকাশ করে ফেলেছেন। তবে এর জন্য তাঁকে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে জবাবদিহি করতে হবে কি না, জানা যায়নি। ওয়াকিবহাল মহলের মত, সবটাই নির্ভর করছে শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে অভিজিৎবাবুর কথোপকথনের উপর।
