অর্ণব আইচ: সোমবার নবম-দশম শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে জীবনকৃষ্ণ সাহা, আলি ইমাম, শাহিদ ইমাম, কৌশিক ঘোষ, প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিংকে তোলা হয়। অন্য দুই অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিংহ ও সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে ‘ভার্চুয়াল পদ্ধতি’তে পেশ করা হয় আদালতে। মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন করেননি। শান্তিপ্রসাদ ও সুবীরেশের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানান। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে অভিযুক্তদের ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। এদিনের শুনানিতেই চার্জশিটে থাকা দুই অভিযুক্তকে ছেড়ে রাখা হয়েছে কেন? সিবিআইকে প্রশ্ন করল আদালত।
এদিন কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় রিপোর্ট দিয়ে সিবিআই আদালতে জানায়, হাই কোর্ট এই মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এদিকে, এদিন জীবনকৃষ্ণকে তাঁর মোবাইলে ‘বিস্ফোরক’ কোনও তথ্য ছিল কি না, সেই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘এই সবই ষড়যন্ত্র।’’ নারদা মামলায় শুভেন্দু অধিকারীকে ডাকা হতে পারে কি না, সেই প্রসঙ্গে জীবনকৃষ্ণ ‘‘কোর্ট মনিটর বিষয়’’ বলে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
[আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোয় রাজ্যের ক্লাবগুলিকে অনুদান, ‘খয়রাতি কেন?’, হাই কোর্টে ফের মামলা]
এদিন অভিযুক্তদের আইনজীবী আদালতে জানান, দুজন গোপন জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। যদিও সিবিআইয়ের দাবি, তাঁরা গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিংহ ও সুবীরেশ ভট্টাচার্যর আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত আবেদনে জানান, সিবিআইয়ের পক্ষ থেকেই জানানো হয়েছে, পর্ণা বসু ও সমরজিৎ আচার্য নামে এসএসসির দুই প্রাক্তন কর্তা ওএমআর শিটে বিকৃতি করেছেন। অথচ যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই শুধু পারিপার্শ্বিক প্রমাণ পেয়েছে। পর্ণা বসু কি সিবিআইয়ের ‘ফেবার চাইল্ড’ বলেই তাঁকে সিবিআই আড়াল করার চেষ্টা করছে? এই ব্যাপারে বিচারক সিবিআইকে প্রশ্ন করেন, ‘‘চার্জশিটে পর্ণা বসু ও সমরজিৎ আচার্যর নাম রয়েছে। তবু তাঁদের কেন ছেড়ে রেখেছেন?’’
সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, সুবীরেশ ও পর্ণার ভূমিকা আলাদা। সুবীরেশ নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড। বিচারক মন্তব্য করেন, এটি সত্যি যে, কাকে গ্রেপ্তার করা হবে বা কাকে করা হবে না, তা সিবিআইয়ের উপর নির্ভর করে। কিন্তু সংবিধান সাম্যের কথা বলেছে। সবার জন্য আইন এক। সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, পর্ণা বসু বা সমরজিৎ আচার্যকে সিবিআই ছেড়ে রাখেনি। তাঁদের দিয়ে যাঁরা এই কাজ করিয়েছেন, তাঁরা হেফাজতে রয়েছেন। তাঁরাই নির্দেশ দিয়ে তথ্য বিকৃতি করেছেন। আরও কারা নির্দেশ দিতেন, তা খুঁজে বার করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। সিবিআই জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষীদের প্রভাবিত করা, তথ্য প্রমাণ নষ্ট সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এই ব্যাপারে সিবিআইয়ের কাছে বিস্তারিত তথ্য চান বিচারক।