সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে একের পর এক বিস্ফোরক দাবি করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। 'ঢাকি সমেত বিসর্জনে'র হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তাঁর কলমের এক আঁচড়ে বাতিল হয়ে গিয়েছিল ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি। সেই মামলাতেই বড়সড় জয় পেলেন প্রাথমিক শিক্ষকেরা। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে চাকরি বহাল রইল তাঁদের। তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে নানা 'ত্রুটি' রয়েছে বলেও পর্যবেক্ষণ ডিভিশন বেঞ্চের। তবে কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন রায় দিয়েছিলেন অভিজিৎবাবু, স্বাভাবিকভাবে উঠছে সেই প্রশ্ন। আর এমন সন্দেহ প্রকাশ করে প্রাক্তন বিচারপতির বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার আর্জি তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের।
কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় ঘোষণার পর X হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "প্রাথমিকে ৩২০০০ নিয়োগ বহাল। চাকরি খাওয়ার রাজনীতির চক্রান্ত প্রমাণিত। সেই আইনজীবী, নেতা, সংশ্লিষ্ট শকুনেরা প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। কথাও কোনো অনিয়ম হলে সেসব ক্ষেত্রে তদন্ত হোক, ব্যবস্থা হোক। কিন্তু তার জন্য সকলের চাকরি খেয়ে চোখের জল নিয়ে রাজনীতির কারবারীদের মানুষ চিনে নিন।" তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম না করে তিনি লেখেন, "বিচারপতির চেয়ারে বসে রাজনীতির ইস্যু তৈরি করে সাংসদ হতে যাওয়া ব্যক্তির ভূমিকা তদন্তের আওতায় থাকা উচিত। কারণ উনি বিচারপতির চেয়ারে বসে অন্যায়ভাবে ইস্যু তৈরি করেছেন, তারপর চাকরি ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে সেই ইস্যুতেই রাজনীতি করেছেন। এটা বিচারব্যবস্থার পক্ষেও দুঃখজনক নজির হয়ে থাকল। আদালত এক্ষেত্রে নৈতিকতার প্রশ্নে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুরু করুক। তদন্ত করাক।"
বলে রাখা ভালো, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে আচমকা বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সকলকে চমকে দিয়ে হাতে তুলে দেন বিজেপির দলীয় পতাকা। সেবারের ভোটে টিকিটও পান। বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ তিনি। কেউ কেউ বলছেন, ঠিক ভোটের আগে রাজ্য সরকারকে প্যাঁচে ফেলতেই নিয়োগ দুর্নীতিকে তাস হিসাবে কাজে লাগিয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর সম্ভবত সে কারণেই এমন রায় দিয়েছিলেন তিনি। এদিকে, বুধবার হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ চাকরি বহাল রাখলেও, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চলবে বলেই জানিয়েছে। সেক্ষেত্রে পরবর্তীকালে তদন্তে আরও কোনও বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসে কিনা, সেটাই দেখার।
