shono
Advertisement

Breaking News

Mohammed Siraj

নির্দেশ নয়, ভালোবেসেই ঘরোয়া ক্রিকেটে! বোর্ডের বিশেষ অনুমতি নিয়ে ইডেনে সিরাজ

উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে ইডেনে খেলেছেন সিরাজ।
Published By: Anwesha AdhikaryPosted: 11:19 AM Dec 05, 2025Updated: 11:19 AM Dec 05, 2025

শিলাজিৎ সরকার: ভারতীয় ক্রিকেটের শীর্ষস্তরে উঠে আসার সিঁড়ির নাম ঘরোয়া ক্রিকেট। তবে একবার নীল জার্সির কৌলিন্য পেয়ে গেলে, আর পুরনো পথে খুব একটা আসতে চান না কেউ। গৌতম গম্ভীর কোচ হয়ে আসার পর থেকে সেই রীতিতে বদল এসেছে। আর তার সঙ্গেই তারকাদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে বিস্তর। বিরাট কোহলির মতো তারকা তো ঠারেঠোরে বুঝিয়েই দিয়েছেন, তাঁদের এখন রাজ্য দলে পাঠানো অর্থহীন। দেশজ ক্রিকেটে এহেন সংস্কৃতির মধ্যে মহম্মদ সিরাজ যেন ভিন্ন পথের পথিক। গত বুধবার ইডেনে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে উত্তরপ্রদেশের মুখোমুখি হয়েছিল হায়দরাবাদ। ভোররাতে শহরে পৌঁছে বিকালে সিরাজ সে ম্যাচে খেলেছেন, তা অজানা নয় কারও। রাজ্য দলের প্রতি তাঁর এমন দায়বদ্ধতা কুর্নিশযোগ্য। কিন্তু তারকা পেসারের ম্যাচ খেলতে আসার নেপথ্যের গল্পটা যে আরও চমৎকার, আরও তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

এমনিতে সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি সময় মাঠে থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে সিরাজ অন্যতম। বিদেশের মাটিতে পাঁচ টেস্টের সিরিজে সব ম্যাচ খেলেন, সতীর্থদের থেকে দ্বিগুণ ওভার বল করেন। তাঁর ক্ষেত্রে যেন 'ওয়ার্কলোড ম্যনেজমেন্ট' বা পর্যাপ্ত বিশ্রামের মতো শব্দবন্ধ অজ্ঞাতবাসে চলে যায়। আর হায়দরাবাদ পেসারও খেলে চলেন হাসিমুখে। শুধু খেলেন না, সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হন। আবার টেস্ট খেলে এসে রাজ্য দলের হয়ে মাঠে নেমে পড়েন। মুস্তাক অলির গ্রুপ পর্বে একটা ম্যাচই খেলেছেন সিরাজ। কিন্তু বাস্তবে ম্যাচটা খেলার কথা ছিল না তাঁর। আসলে সিরিজের মাঝে বিশ্রাম না পাওয়া সিরাজকে আপাতত ম্যাচ খেলতে বারণ করা হয়েছে ভারতীয় বোর্ডের তরফে। তাই মুস্তাক আলির গ্রুপ পর্বে তাঁর খেলার সুযোগ ছিল না। টিম নকআউটে উঠলে সিরাজকে পেত হায়দরাবাদ। ফলে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে তাঁর খেলার কোনও প্রশ্ন ছিল না। কিন্তু নকআউটে যাওয়ার ক্ষেত্রে ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল হায়দরাবাদের ক্ষেত্রে। বিষয়টি অজানা ছিল না সিরাজের। তাই নিজে থেকেই বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে আদায় করেন প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র। তারপর অনুমতি মিলতেই রওনা হন কলকাতার দিকে। অবশ্য সেখানেও বিমান বিভ্রাটের মুখে পড়েন তিনি। মধ্যরাতে শহরে পৌঁছানোর কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভোরের দিকে টিম হোটেলে ঢোকেন তিনি। তারপরও বিকালে ইডেনে এসে ম্যাচ খেলেন হায়দরাবাদ পেসার।

সিরাজের এমন দায়বদ্ধতা মানসিক শক্তি জোগায় সতীর্থদেরও। তাঁর সামনেই উত্তরপ্রদেশ ম্যাচে সেরা হয়েছেন তনয় ত্যাগরাজন। তিনি বলছিলেন, "ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে সিরাজ যে মানের ক্রিকেটার, তাতে ওর এই ম্যাচ খেলার প্রয়োজন নেই। তারপরও এতটা পথ এসে ও ম্যাচটা খেলেছে। শুধু খেলা নয়, নিজের সেরাটা দিয়েছে। এমন কাজ দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।" সেদিন চার ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়েছিলেন সিরাজ, একটা উইকেটও নেন। নকআউটের দ্বারপ্রান্তে থাকা হায়দরাবাদ শিবিরের স্বস্তি, পরের পর্বে উঠলে দলের শক্তি বাড়াতে হাজির হয়ে যাবেন দেশের তারকা পেসার।

রাজ্য দলের প্রতি দায়বদ্ধতার সঙ্গে সিরাজের কলকাতা আসার ক্ষেত্রে আরও একটা ফ্যাক্টর ছিল। সেটা বন্ধুত্ব। আসলে হায়দরাবাদ অধিনায়ক চামা মিলিন্দ এবং সিরাজ দীর্ঘদিনের সুহৃদ। রিঙ্কু সিংদের মুখোমুখি হওয়ার আগে মিলিন্দ সাহায্য চেয়েছিলেন প্রিয় বন্ধুর। সেই ডাক ফেরাননি সিরাজ। উদ্যোগী হয়ে নিজেই কলকাতা চলে আসেন এই ম্যাচ খেলতে। যে সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে তারকাদের পা পড়ে না, তাঁদের জন্য ফতোয়া জারি করতে হয় বোর্ডকে, সেই সময়ে সিরাজের এমন কাজ সত্যিই নজিরবিহীন। অবশ্য তিনি কবেই বা এসব 'স্টারডম' নিয়ে ভেবেছেন। সিরাজ যে একটা কাজই করতে চান। ক্রিকেট খেলতে। মঞ্চ যাই হোক, মহম্মদ সিরাজের কাছে যে শুধু খেলাটাই মোক্ষ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বিরাট কোহলির মতো তারকা তো ঠারেঠোরে বুঝিয়েই দিয়েছেন, তাঁদের এখন রাজ্য দলে পাঠানো অর্থহীন।
  • সিরিজের মাঝে বিশ্রাম না পাওয়া সিরাজকে আপাতত ম্যাচ খেলতে বারণ করা হয়েছে ভারতীয় বোর্ডের তরফে। তাই মুস্তাক আলির গ্রুপ পর্বে তাঁর খেলার সুযোগ ছিল না।
  • হায়দরাবাদ অধিনায়ক চামা মিলিন্দ এবং সিরাজ দীর্ঘদিনের সুহৃদ। রিঙ্কু সিংদের মুখোমুখি হওয়ার আগে মিলিন্দ সাহায্য চেয়েছিলেন প্রিয় বন্ধুর।
Advertisement