সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অচলাবস্থা কাটাতে তৎপর প্রশাসন। সোমবার বিকেলে নবান্নে বৈঠকের জন্য সময় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও অনশন তুলে নেওয়ার 'শর্ত' না মেনেই বৈঠকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। অচলাবস্থা কাটাতে আদৌ জুনিয়র ডাক্তাররা চাইছেন কি না, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়। এই পরিস্থিতিতে ফের তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের নিশানায় আন্দোলনকারী দুই জুনিয়র চিকিৎসক। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ধর্মঘটের নামে কোনও রোগীর ক্ষতি হলে এফআইআর দায়েরের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল নেতা।
X হ্যান্ডেলে কুণাল ঘোষ লেখেন, "যদি মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠক পরিকল্পিতভাবে অন্যায্য জেদে ভেস্তে দিয়ে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ধর্মঘটের নামে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা হয়, তাহলে বাংলার কোনও রোগীর কোনও ক্ষতি হলে নিকটবর্তী থানায় ডাঃ দেবাশিস হালদার ও ডাঃ অনিকেত মাহাতোর নামে যেন FIR হয়। তাঁরাই চক্রান্তের মাতব্বর। তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসকের নাম যোগ করবেন। চিকিৎসা আপনার মৌলিক অধিকার। প্ররোচনা দিয়ে তা থেকে বঞ্চিত করা আইনত অপরাধ।" তাঁর মত, "অনশনের কারণে যদি জুনিয়রদের কারও কোনও ক্ষতি হয়, তাহলেও মূলত এরা দুজন, এদের প্ররোচনাদাতারা দায়ী থাকবে।" আরও একবার আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের অনশন প্রত্যাহারের আর্জিও জানান কুণাল। তাঁর কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী বারবার অভিভাবকোচিত সংবেদনশীলতা দেখাচ্ছেন। তাতে সাড়া দিয়ে অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনা হোক। বাম, অতি বাম, বিরোধীদের ফাঁদে পা দেবেন না।"
যদিও কুণাল ঘোষের FIR হুঁশিয়ারির বিরোধিতা করেছেন জুনিয়র চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ। তাঁর মতে, অনশনের সিদ্ধান্ত ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের তরফে নেওয়া হয়েছে। দেবাশিস কিংবা অনিকেত একা নেননি।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। সুবিচার, নিরাপত্তা-সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলনে শামিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। টানা কর্মবিরতিও করেন তাঁরা। সেই সময় থেকে আন্দোলনকারীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যভবনের সামনে ধরনা মঞ্চে নিজে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আর্জি জানান। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন জুনিয়ররা।
তবে এবার আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ৮ জন চিকিৎসক। তাঁদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য প্রশাসন। সে কারণে শনিবার মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব ধর্মতলার অনশন মঞ্চে যান। মুখ্যসচিবের মারফৎ ফোনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনার টেবিলে বসার আর্জি জানান। তবে তা সত্ত্বেও নিজেদের অবস্থানে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। সোমবার বিকেলে নবান্নের বৈঠকে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অচলাবস্থা কাটে নাকি মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ধর্মঘটে চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হতে হয় আমজনতাকে, সেটাই এখন দেখার।