অভিরূপ দাস: সূর্য ওঠার আগেই পুজোয় জল দেবে কলকাতা পুরসভা(KMC)। পঞ্জিকা অনুযায়ী এবছর সকাল ছটা চব্বিশে সন্ধিপুজো। জোগাড়যন্ত্র করতে হবে রাত থেকেই। শাস্ত্রজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুধু অষ্টমী নয়, পঞ্জিকায় এবছর পুজোর সময় সারণী এমনই। সপ্তমী থেকে দশমী দুর্গাপুজোয় বসতে হবে ভোর হতে না হতেই। সাধারণের কথা ভেবে, সেই অনুযায়ী জলের সময় বদলে দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার কলকাতা পুরসভার ‘পুজো বৈঠকে’ মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, এবছর পুজোর চারদিন পুরসভার জল দেওয়া হবে ভোর তিনটে থেকে।
মেয়র জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো(Durga Puja 2024) বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। যে কোনও পুজোতেই জলের প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী। স্নান সেরে পুজোয় বসতে হয়। পুজো চলাকালীন তো বটেই, উপাদান সামগ্রী ধোয়ার জন্যেও জলের প্রয়োজন। সবদিক চিন্তা করেই পুজোর চারটে দিন পুরসভার জল আসবে ভোর তিনটের সময়। এদিন দুর্গাপুজো বৈঠকে এই প্রসঙ্গ প্রথম তোলেন মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়েছেন মেয়র। এদিন কলকাতা পুরসভায় পুজো বৈঠকে সমস্ত বিভাগের মেয়র পারিষদরা ছাড়াও হাজির ছিলেন পুর কমিশনার ধবল জৈন। ছিলেন দেবব্রত সরকার ডিসি সেন্ট্রাল (দুই), ডিসি ট্রাফিক শ্রীকান্ত জগন্নাথরাও, সিইএসসি, ক্যালকাটা ট্রাম কোম্পানি, দমকল বিভাগ, ক্যালকাটা পোর্ট ট্রাস্টের আধিকারিকরা।
পুজোর আর একমাসও বাকি নেই। শহরের একাধিক রাস্তার অবস্থা তথৈবচ। দ্রুত এদিন তা সারানোর নির্দেশ দিয়েছেন ফিরহাদ। খারাপ রাস্তাগুলোর মধ্যে উঠে এসছে আনন্দপুর রোড, হাইড রোড, সোনাগাছা রোড, তারাতলা থানা থেকে তারাতলা মোড় যাওয়ার রাস্তা। এজেসি বোস উড়ালপুলের ওপরে রাস্তা ফেটে গিয়েছে। তা সারানোর জন্য এদিন এইচআরবিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। বর্ষার কলকাতায় তুমুল বৃষ্টির পরেও জল জমার তেমন খবর নেই। যার জন্য এদিন মেয়র ধন্যবাদ জানান, নিকাশি বিভাগকে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এখনই সন্তুষ্টি আসার সময় নেই। সামনে পুজো। পুজোর মুখে নিম্নচাপের সতর্কতা রয়েছে। কোথাও যেন জল না জমে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
এদিন পুজো বৈঠকে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, এলাকায় বেআইনি পার্কিংয়ের নামে তোলাবাজি চলছে। পুজোর সময় মণ্ডপের আশপাশে অসাধু চক্র বেআইনি পার্কিংয়ের নামে টাকা তুলছে। গোটা বিষয়টি দেখার জন্য ডিসি ট্র্যাফিকের কাছে আবেদন করেছেন মেয়র পারিষদ। দেবাশিস কুমার নিজে পুরসভায় পার্কিং বিভাগের দায়িত্বে। তাঁরই এলাকায় এ ধরনের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এদিন মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, পুজোয় রাত জেগে প্রতিমা দর্শন করে আমজনতা। সকলের কথা ভেবে ৫ থেকে ১২ অক্টোবর ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে শহরের সমস্ত সুলভ শৌচালয়। পুজোর কলকাতায় গোটা শহরজুড়ে চারশো বায়ো টয়লেটের বন্দোবস্ত করছে কলকাতা পুরসভা।