শুভঙ্কর বসু: বিধানসভা ভোটের (WB Assembly Polls) ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ হয়েছেন পরাজিত চার বিজেপি প্রার্থী। সম্প্রতি মামলা দায়ের করেছেন বিজেপি প্রার্থী বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সঠিক পদ্ধতিতে মামলাটি দায়ের করেছেন কি না, তা জানতে চাইলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি উচ্চ আদালতের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে সাত দিনের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে বলেন। বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলাটি গ্রহণযোগ্য হলে বাকি বিজেপি প্রার্থীদের মামলা গ্রহণেও কোনও সমস্যা থাকবে না, এমনই পর্যবেক্ষণ আইন বিশেষজ্ঞদের।
নন্দীগ্রামের ভোটের ফলকে চ্যালেঞ্জ করে প্রথম আদালতের দ্বারস্থ হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। পুনর্গণনার আবেদন জানান তিনি। সেই মামলার জল গড়িয়েছে বহু দূর। বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে মামলা হওয়া নিয়ে তৃণমূল লাগাতার আপত্তি জানায়। কারণ, বিচারপতি কৌশিক চন্দ বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ তৃণমূলের। শেষমেশ অবশ্য তিনি মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর পরপর আরও বেশ কয়েকজন পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীও আদালতে পুনর্গণনার আবেদন জানান। পালটা বিজেপি (BJP) প্রার্থীরাও একই আবেদনে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই সংখ্যা প্রায় ৮। পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে স্বল্প ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন দুই বিজেপি প্রার্থী। পাণ্ডবেশ্বরের প্রার্থী তথা প্রাক্তন তৃণমূল নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি তিন হাজারের সামান্য বেশি ভোটে হেরেছেন। মহিষাদলের প্রার্থীরও ব্যবধান ছিল তিন হাজারেরও কম। ফলে তাঁরা পুনর্গণনার আবেদন জানান। পাশাপাশি মানিকতলা ও জলপাইগুড়ির প্রার্থীরাও একই পথে হেঁটেছেন সম্প্রতি।
[আরও পড়ুন: ‘ইস্তফা নিয়ে করা মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে’, সাফাই বাবুল সুপ্রিয়র]
নিয়ম অনুযায়ী, ফলপ্রকাশের ৪৫ দিনের মধ্যে এই মামলা দায়ের করতে হয়। কিন্তু বিজেপি প্রার্থীদের অনেকেই সেই সময়সীমা পেরনোর পর মামলা করেছেন। তাই এদিন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জানতে চান, মহিষাদলের বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা মামলা সঠিক পদ্ধতিতে হয়েছে কি না। সাতদিনের মধ্যেই তা বিচারপতিকে জানাবেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। এমনই নির্দেশ বিচারপতির। আইনজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশের মত, যদি বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলাটি হাই কোর্টে গৃহীত হয়, তাহলে অন্যান্যদের মামলা গ্রহণেও কোনও সমস্যা থাকবে না। ফলে আগামী ৭ দিন পর রেজিস্ট্রার জেনারেল কী রিপোর্ট দেন, সেদিকে তাকিয়ে মামলাকারীরা।