shono
Advertisement

গর্বের প্রাপ্তি! মাদ্রিদের বিখ্যাত ফুটবল মিউজিয়ামে মারাদোনার পাশে জায়গা পেয়েছে এক বাঙালির জার্সিও

জনসাধারণের জন্য মাদ্রিদের এই বিখ্যাত মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হবে আগামী বছরের মার্চে।
Posted: 05:00 PM Nov 20, 2022Updated: 08:30 PM Nov 20, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাদ্রিদের ফুটবল মিউজিয়ামে স্থান পেয়েছে এক বাঙালির জার্সি। সেই মিউজিয়ামে রয়েছে বিশ্ববন্দিত দিয়েগো মারাদোনার (Diego Maradona) বিখ্যাত ১০ নম্বর জার্সিও। মাদ্রিদের ফুটবল মিউজিয়ামের উদ্বোধন হবে আগামী বছরের মার্চে। সেখানে জায়গা পেয়েছে কৃষ্ণেন্দু রায়ের (Krishnendu Roy) ১২ নম্বর জার্সি। আর কোনও ভারতীয় ফুটবলারের স্মারক সেখানে নেই। বলা ভাল, মাদ্রিদের মিউজিয়ামে দেশের একমাত্র ‘প্রতিনিধি’ হিসেবে রয়েছে ডাকাবুকো এক বাঙালি রাইট ব্যাকের জার্সি। 

Advertisement

মাদ্রিদের (Madrid) নাম শুনলে ফুটবলপ্রেমীদের চোখে ভেসে ওঠে রিয়াল মাদ্রিদ, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ক্লাবের ছবি। মাদ্রিদ শহরের পুয়েরটা দেল সল এলাকায় তৈরি হয়েছে একটি ফুটবল মিউজিয়াম। তার নাম লিজেন্ডস (Legends)। প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি ফুটবল-দ্রষ্টব্য জায়গা পেয়েছে সেই জাদুঘরে। লিজেন্ডের উদ্বোধনের পরে ছ’শোটি ফুটবল সামগ্রী প্রদর্শন করা হবে। সেগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। ফিফা বিশ্বকাপ, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, কোপা আমেরিকা, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপে কোনও না কোনও সময়ে ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো। 

[আরও পড়ুন: আইএসএলে আজ মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ গোয়া, পুরনো দলের বিরুদ্ধে আজ ফেরান্দোর ভরসা টিম গেম]

১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল মেক্সিকোর অ্যাজটেকা স্টেডিয়ামে। আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয়েছিল জার্মানি। ফাইনালে দিয়েগো মারাদোনার আর্জেন্টিনা জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেই ফাইনালে মারাদোনাকে মার্কিং করেছিলেন লোথার ম্যাথাউজ। নব্বই মিনিটের শেষে জার্সি আদানপ্রদান করেছিলেন মারাদোনা ও ম্যাথাউজ। প্রাক্তন জার্মান অধিনায়ক দিয়েগো মারাদোনার স্মৃতি সম্বলিত জার্সি তুলে দিয়েছেন লিজেন্ডস মিউজিয়ামের কর্তৃপক্ষের হাতে। সেখানেই রয়েছে কৃষ্ণেন্দু রায়ের ১২ নম্বর জার্সি।  

কৃষ্ণেন্দু রায়।

কীভাবে জায়গা পেল সেই জার্সি? কৃষ্ণেন্দু রায় বলছেন, ”১৯৮৪ সালের নেহরু কাপে ভারতের সঙ্গে খেলা হয়েছিল আর্জেন্টিনার। সেবার কার্লোস বিলার্দো ছিলেন আর্জেন্টিনার কোচ। দিয়েগো মারাদোনা এবং দু-একজন ছাড়া বাকিরা খেলতে এসেছিলেন ১৯৮৪ সালের নেহরু কাপে। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে আমরা দারুণ লড়াই করেছিলাম। শেষ মুহূর্তে রিকার্ডো গারেকার গোলে আমরা ম্যাচ হেরে গিয়েছিলাম।” হর্হে বরুচাগা, পুম্পিদু. জুলিয়েন ক্যামিনোর মতো তারকারা খেলে গিয়েছিলেন নেহরু কাপে।

নেহরু কাপে ১২ নম্বর জার্সি পরে দেশের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন কৃষ্ণেন্দু। আর্জেন্টিনার খেলোয়াড় নেস্টর ক্লাসেনের সঙ্গে খেলার শেষে জার্সি আদানপ্রদান করেছিলেন কলকাতা ময়দানের বহুপরিচিত বান্টুদা। তাঁর ১২ নম্বর জার্সি স্থান পেয়েছে বুলফাইটিংয়ের দেশের ফুটবল মিউজিয়ামে। কৃষ্ণেন্দু রায় বলছেন, ”আর্জেন্টিনার মতো দলের বিরুদ্ধে খেলব সেটাই তো আমার কাছে ছিল দারুণ উত্তেজনার এক মুহূর্ত ছিল। আর আমার জার্সি মাদ্রিদের মিউজিয়ামে জায়গা পাবে সেটা তো স্বপ্নের মতো ব্যাপার। আমি অত্যন্ত গর্বিত। ভারতের হয়ে খেলেছিলাম বলেই আমার জার্সি আজ মাদ্রিদের জাদুঘরে জায়গা পেয়েছে। ওখানে এখনও অন্য কোনও ভারতীয় ফুটবলারের জার্সি জায়গা পায়নি। তবে আগামী দিনে হয়তো জায়গা পাবে এই আশা রাখি।”

ভারত-আর্জেন্টিনার সেই ম্যাচের পর কেটে গিয়েছে প্রায় তিন দশক। এই সময়ে বদলে গিয়েছে ফুটবলের দুনিয়া। কিন্তু কৃষ্ণেন্দুর মনে এখনও টাটকা মারাদোনার দেশের বিরুদ্ধে অদম্য লড়াই, মাঠে নামার রোমাঞ্চকর স্মৃতি। যে স্মৃতির স্মারক জায়গা পেয়েছে সুদূর মাদ্রিদে। এ তো কেবল কৃষ্ণেন্দুর ব্যক্তিগত কোনও প্রাপ্তি নয়। বলা যায়, বাঙালির ফুটবল ঐতিহ্যের এক নিদর্শনও বটে। যা মনে করিয়ে দেয়, বিশ্ব ফুটবলের ‘নিদ্রিত এক শক্তি’ হয়েও তার গরিমা পৌঁছে গিয়েছে ‘সাত সমুদ্দুর তেরো নদী’র পারের এক দেশে।

[আরও পড়ুন: উদ্বোধনী ম্যাচেই নামছে আয়োজক কাতার, একসময়ের প্রতিপক্ষকে ঢালাও সার্টিফিকেট ভারত-বাংলাদেশের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement