সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলে ফের ঘনাচ্ছে অশান্তির কালোমেঘ। লুটপাট ও সন্ত্রাস চালাচ্ছ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র শাখা ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)’-এর সদস্যরা। গত দুদিন ধরে সন্ত্রাসীরা তিনটি ব্যাঙ্কে হামলা চালিয়েছে। লুট করেছে। অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে। বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে থানায়। তার পর পুলিশের সঙ্গে তীব্র গুলির লড়াই চলে সন্ত্রাসীদের। অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশবাহিনী।
গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে রুমা উপজেলা সদরে অবস্থিত সোনালি ব্যাঙ্ক আক্রমণ, লুট ও ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। পরদিন দুপুরে পাশের থানচি উপজেলায় গুলি ছুড়তে ছুড়তে কৃষি ব্যাঙ্কের ভিতরে ঢোকে অস্ত্রধারীরা। তারা সেখানকার কর্মী, গ্রাহক ও নিরাপত্তারক্ষীদের বন্দি করে টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এর পর বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ প্রায় ২০০ জনের সশস্ত্র দল প্রথমে গুলি চালিয়ে সোনালী ব্যাংক লুট করতে আসে। সেই সময় পুলিশি বাধার মুখে পড়ে তারা। দুই পক্ষের গুলিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসীরা থানচি থানা ঘেরাও করে ব্যাপক গুলি ছুড়তে থাকে। বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ রায়হান কাজেমি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের মধ্যকার গুলি বিনিময় বন্ধ হয়।
[আরও পড়ুন: ‘তারেক বিএনপির জন্য অভিশাপ’, খালেদাপুত্রকে তুলোধোনা আওয়ামি লিগের]
এদিকে সন্ত্রাসী হামলা ও দুই দিনে তিনটি সরকারি ব্যাঙ্কের টাকা লুটের ঘটনায় বান্দরবানে থমথমে অবস্থা রয়েছে। অপহরণের দুই দিন পর গতকাল সন্ধ্যায় অপহৃত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন রাসেলকে উদ্ধার করেছে এলিটবাহিনী র্যাব। নিজাম উদ্দিনকে মুক্তি দিতে কেএনএফ ২০ লাখ টাকা পণ দাবি করেছিল। তিনটি ব্যাঙ্কের ডাকাতির ঘটনায় কেএনএ-র নাম আসায় শান্তি সংলাপ স্থগিত করেছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। বলে রাখা ভালো, এর আগেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল কেএনএ-র সদস্যরা। এর পর গত বছরের ৩০ মে বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে এই শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠিত হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কমিটির আহ্বায়ক বলেন, এখন যা পরিস্থিতি তাতে আর কেএনএফের সঙ্গে বৈঠক করা সম্ভব নয়। জানা গিয়েছে, এখনও পাহাড়ের পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক।