রঞ্জন মহাপাত্র ও ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সারদা (Saradha) ইস্যুতে এবার শুভেন্দুর গড়ে দাঁড়িয়ে তাঁকে বিঁধলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর অভিযোগ, সুদীপ্ত সেনের থেকে যে কাঁথি পুর এলাকায় বহুতল তৈরির নামে কোটি কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে, যেসব নথিতে সই ছিল ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর। শুভেন্দু ও সৌমেন্দুকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারির দাবি জানিয়েছেন তিনি। রবিবার কাঁথিতে কুণাল ঘোষের সভার পর অবশ্য পালটা সভা করেন শুভেন্দু অধিকারীও (Suvendu Adhikari)। রাজ্যে গণতন্ত্র নেই বলে অভিযোগ তুলে তা ফেরানো ও শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে স্লোগান তোলা হয় সেই সভা থেকে। রবিবার তৃণমূল-বিজেপির এই কর্মসূচিতে দিনভর সরগরম ছিল কাঁথি।
এদিন সভার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ”সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন (Sudipta Sen) কোর্টে লেখা বয়ানে বলেছেন, কাঁথিতে বহুতল করে দেওয়ার নাম করে ও পরে ব্ল্যাকমেল করে শুভেন্দু ও সহযোগীরা তাঁর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছিলেন। এর মধ্যে বাড়ির প্ল্যানের নাম করে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ড্রাফটে এবং বাকি বিপুল টাকা নগদে নেওয়া হয়েছিল। আমি এর তদন্ত চেয়েছিলাম। এতদিন শুভেন্দুরা এসব উড়িয়ে দিচ্ছিল। কিন্তু এখন পুরসভা থেকে প্ল্যান্ট ফাইল উধাও। কিছু নথি থেকে দেখা যাচ্ছে, পুরসভার রেকর্ড অনুযায়ী সারদার কাছ থেকে প্ল্যান বাবদ সেই টাকা নেওয়া হয়েছে। অনুমোদনে শুভেন্দুর ভাইয়ের সই আছে। এ থেকে প্রমাণ হচ্ছে, সুদীপ্ত সেনের কোর্টে লেখা বিবৃতি ঠিক। অবিলম্বে শুভেন্দু এবং সৌমেন্দুকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত হোক।” তিনি আরও বলেন, ”এটা নতুন কোনও অভিযোগ নয়। ২০১৩ সালেই আমি এই বিষয়টি বলেছিলাম। তখন কেউ কেউ আমাকে গ্রেপ্তার করিয়েছিল। এখন কালের নিয়মে সত্য সামনে আসার পর্ব চলছে।”
[আরও পড়ুন: ‘গণতন্ত্র বাঁচাতে আমাকে ভোট দিন’, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রাক্কালে আবেদন যশবন্ত সিনহার]
এরপর শুভেন্দুও পালটা সভা করেন। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার পক্ষ থেকে রামনগর বিধানসভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ স্লোগানকে সামনে রেখে মহামিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি অভিযোগ তোলেন, ”বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের মধ্যযুগীয় শাসনে গণতন্ত্রের গলা টিপে হত্যা করা হচ্ছে। বিরোধীরা প্রতিবাদ করতে গেলে খুন করা হচ্ছে, মেয়েদের ধর্ষণ নিত্য ঘটনা, সাধারণ মানুষের বাক্ স্বাধীনতা নেই।” উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সহ-সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিত,জেলা পর্যবেক্ষক ও রাজ্য কমিটির সদস্য মলয় সিনহা, জেলা সাধারণ সম্পাদক তাপস দোলাই ও মমতা মাইতি, প্রাক্তন বিধায়ক ও দলীয় নেত্রী বনশ্রী মাইতি।