সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সোমবার আর জি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সদার্থক না হলে ফের কাজ বন্ধ করবেন তাঁরা। জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির 'হুমকি' নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা মিডিয়া কমিটির সদস্য কুণাল ঘোষ। তাঁর প্রশ্ন, 'তদন্তে সিবিআই, মামলা সুপ্রিম কোর্টে। পুজো সামনে। কর্মবিরতির হুমকি। থ্রেট কালচার নয়?' এই 'অস্থিরতা'র নেপথ্যে কাদের মদত রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় সুবিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রায় দেড় মাস ধরে কর্মবিরতি পালন করেছেন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে দফায়-দফায় বৈঠক করেছেন। তাঁদের প্রায় সব দাবিই মেনে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিন কয়েক আগে কাজে ফিরেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এর মধ্যে ফের কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। শনিবার রাতের জিবি বৈঠক শেষে পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের প্রতিনিধিরা জানান, সোমবার সুপ্রিম রায় তাঁদের মনঃপুত না হলে ওই দিন বিকেল পাঁচটা থেকে সমস্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করবেন তাঁরা। কার্যত রাজ্য সরকারকে ডেডলাইন দিয়ে দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আর এই 'হুমকি' নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল ঘোষ। ফেসবুক পেজে লিখেছেন, 'আবার কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি। তদন্তে সিবিআই, মামলা সুপ্রিম কোর্টে। পুজো সামনে। কর্মবিরতির হুমকি। থ্রেট কালচার নয়?' তাঁর আরও সংযোজন,'পরিকাঠামো উন্নত হয়েছে, আরও কাজের চেষ্টা চলছে। তবু, আবার কর্মবিরতি? কারা, কেন, কাদের কথায়, কাদের মদতে এই অস্থিরতা চাইছে?'
শনিবারই 'সংবাদ প্রতিদিন'-এর প্রথম পাতায় একটি খবর প্রকাশিত হয়। যেখানে বলা হয়েছিল, আর জি করের ভয়ংকর ঘটনায় মৃতার ময়নাতদন্তে নানা তথাকথিত অসঙ্গতির তত্ত্ব মেলে ধরে নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের ন্যারেটিভ পোক্ত করতে জুনিয়র ডাক্তারবাবুরা এখনও আন্দোলনে অনড়। অথচ কী আশ্চর্য, ঘটনার দিন মৃতার ময়নাতদন্ত অন্য হাসপাতালে করার দাবি কিন্তু সেই জুনিয়র ডাক্তাররা একবারও তোলেননি! বরং তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে রীতিমতো চিঠি দিয়ে যে চার দফা শর্ত তারা দিয়েছিলেন, হুবহু সেই শর্তাবলী মেনেই হয়েছিল ময়নাতদন্ত। এবং ময়নাতদন্ত চলাকালীন দুজন জুনিয়র ডাক্তার সেখানে হাজিরও ছিলেন। এমনকী, ৯ আগস্টই আর জি কর হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের বিশ্রামকক্ষ, শৌচাগার তৈরির দাবি তুলে সরব হয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেই কাজ করতেই গত ১০ ও ১২ আগস্ট দু’দফায় সরেজমিনে পরিদর্শনের পর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ঘর ভাঙা বা ভোলবদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই পরিদর্শন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণপর্বেও শামিল হয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। শুধু তাই নয়, যে বৈঠকে সর্বসন্মত ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তার কার্যবিবরণীতে বাস্তুকার, কর্তব্যরত নার্সরা ছাড়াও জ্বলজ্বল করছে তিন জুনিয়র ডাক্তারের স্বাক্ষর। এ বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল। লিখেছেন, 'আবার কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি। অথচ বহুল প্রচারিত এই নথিগুলি সম্পর্কে নীরবতা। যাঁদের সই, সম্মতি বলে দৃশ্যমান, সত্যতা নিয়ে তাঁদের মুখেও কুলুপ।'