বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: রাজ্যের সরকার অসংবেদনশীল। তাই জনগণের অর্থে আনিস খানের (Anis Khan) খুনিদের আড়াল করতে আদালতে সরকারি আইনজীবীদের দিয়ে সওয়াল করাচ্ছে। খুনিদের আড়াল করতে তৎপর সরকার ভূ-ভারতে নেই বলে দাবি করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। এছাড়াও বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেসমুক্ত ভারত চাইছে তৃণমূল, এমনই দাবি তাঁর। আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এহেন কটাক্ষের বিরুদ্ধে পালটা আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর বক্তব্য, অধীর চৌধুরী বিভ্রান্তিকর রাজনীতি করছেন। তাঁর সময় দল রাজ্যে শূন্যে পৌঁছেছে। একটা দলকে কীভাবে শূন্যে নামালেন, তার জবাব প্রদেশ সভাপতিকে দিতে হবে। শনিবার ছাত্রনেতা আনিস খানের খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ধর্মতলা অবস্থান বিক্ষোভ করে প্রদেশ কংগ্রেস। সেখান থেকেই অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, সংঘ পরিবার ক্ষুব্ধ হবে তাই আনিস খানের খুনের ঘটনায় জড়িতদের আড়াল করছে রাজ্য সরকার। বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তোলেন তিনি।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের (Congress)। কিন্তু একটা দল একটা নির্বাচনে পরাজিত হলেই সেই দল প্রাসঙ্গিকতা হারায় না। আর কংগ্রেস শতাব্দী প্রাচীন দল। ভারতের রাজনীতি থেকে কংগ্রেসের নাম মুছে দেওয়া কখনোই সম্ভব নয়। কিন্তু কংগ্রেসের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া তৃণমূল নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেসমুক্ত দেশ চাইছে। শনিবার এমনই সব বিস্ফোরক কথা শোনা গেল অধীররঞ্জন চৌধুরীর গলায়। এদিন ধর্মতলার অনশন মঞ্চ থেকে অধীর আরও অভিযোগ করেন, তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) ও আম আদমি পার্টি বিজেপির এজেন্ট হয়ে কাজ করছে। গোয়ায় ভোট কাটার কাজ করেছে তৃণমূল। আরব সাগরের পাড়ের রাজ্যে ক্ষমতা দখল নয় বিজেপিকে মসনদে বসাতেই গিয়েছিল তৃণমূল। তাঁরা সেই কাজে সফল বলে মনে করেন প্রদেশ সভাপতি।
[আরও পড়ুন: আগামী মাসেই রাজ্যের ২ কেন্দ্রে উপনির্বাচন, দিনক্ষণ জানাল জাতীয় নির্বাচন কমিশন]
পাল্টা কুণাল ঘোষ আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম দিয়েছিলেন। কারণ কংগ্রেস সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াইটা করছিল না। বাংলার মানুষ তাঁকে মান্যতা দিয়েছেন। তাঁর দলকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এটাই আসল কংগ্রেস। তারাই সরকার গঠন করেছে। যে সিপিএম তাদের ৫৫ হাজার সদস্য খুন করল, সেই অধীরবাবু আর কংগ্রেস রক্তাক্ত সন্ত্রাসের হাতে হাত মিলিয়ে ২০১৬ সালে এরাজ্যে ভোটে লড়েছিল। একুশে আবার সেই সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অধীর চৌধুরীরা লড়েছেন। কী উদ্দেশ্য? তৃণমূলের ভোট কেটে বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ করে বিজেপিকে জিতিয়ে দেওয়া।”
[আরও পড়ুন: লক্ষ্য ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ভোট, বাংলায় লড়াইয়ের জমি তৈরি করতে ‘আপে’র ‘পদার্পণ যাত্রা’]
গোয়া নিয়ে কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “বিজেপির দালালের ভূমিকা পালন করেছে সিপিএম আর কংগ্রেস। গোয়ায় কেন তৃণমূলকে যেতে হল? সেখানে গতবার তো কংগ্রেস জিতেছিল। কিন্তু সরকার করতে পারল না। সেখানে বিজেপির সরকার যারা করল তারা তো কংগ্রেসের বিধায়ক। তৃণমূল তিন মাসের মধ্যে ৬ শতাংশ ভোট। জোটের অঙ্ক ধরলে ১২ শতাংশ ভোট, যা আপ-ও পায়নি। বিহারে কী হয়েছিল? তেজস্বীর কাছ থেকে একগাদা আসন নিয়ে ফেল করে এনডিএ-কে সুবিধা করে দিয়েছিল। আমাদের নেত্রী কখনও বলেননি কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে চলো। বলেছেন নেতৃত্ব ফেল করছে।”