দুলাল দে, দোহা: কার সঙ্গে প্রেম করছেন কিলিয়ান এমবাপে? তিনি কি এই মুহূর্তে দোহাতে? হাইভোল্টেজ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর সেই ‘রহস্যময়ী’ প্রেমিকা কি এমবাপের সঙ্গে দেখা করার জন্য এসেছিলেন ফ্রান্স হোটেলে? নেইমারের আগেই বিদায় হয়েছে। এবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বিদায়ের পর দোহায় উপস্থিত সারা বিশ্বের মিডিয়াকুলের এখন নজর একজনের দিকে। তিনি ফরাসি তারকা কিলিয়ন এমবাপে (Kylian Mbappe)। অবশ্যই আছেন লিওনেল মেসি। কিন্তু স্ত্রী-তিন সন্তানকে নিয়ে দোহায় সুখী সংসার আর্জেন্টিনা অধিনায়কের। সেখানে পেজ-থ্রি মার্কা খবরের মশলা কোথায়? আর তাই সবার লক্ষ্য বছর তেইশ বছরের মহাতারকা এমবাপে। আর বিশ্বকাপের (Qatar World Cup) শুরুর দিন থেকে যে ভাবে দৌড় শুরু করেছেন, মনে হচ্ছে পরপর দুটো বিশ্বকাপ ছোঁয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন। সেটা হলে পেলেকে ছুঁয়ে অনন্য রেকর্ড গড়ে ফেলবেন তিনি। আর এমবাপে তাই এখন বিশ্বকাপের ভাঙা হাটে ‘হটকেক’।
ভদ্রলোকের নাম ফ্রান্সিসকো ব্রুটো দ্য কোস্তা। প্যারিসের এক পোর্টালের সাংবাদিক। আমরা কলকাতায় যেমন ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ক্লাবে প্র্যাকটিস কভার করতে যাই, ব্রুটোও সেরকম প্রায় নিয়মিতি যান পিএসজি-তে। ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে বেশ সুসম্পর্ক আছে বলেও দাবি তাঁর। তাহলে তো এমবাপেকে রোজই দেখতে পান। ‘হাই, হ্যালো’-র সম্পর্কও নিশ্চয়ই আছে? কিন্তু এমবাপে নামটা শুনে এমন ভাবে তাকালেন যেন, জীবনে আমার সঙ্গে প্রথম তাঁর দেখা হল! অথচ রাশিয়া বিশ্বকাপের সময় আলাপ। এবারও এসেছেন। খুব ইচ্ছে, একবার কেরালায় ঘুরতে আসবেন। ব্রুটো নিজের দেশের গল্প বলেন। আমি আমার দেশের। সেই কারণেই জিজ্ঞসা করেছিলাম, পিএসজি-তে প্র্যাকটিস কভার করতে গেলে এমবাপের সঙ্গে কথা হয় কি না? ব্রুটো ঠোঁট উল্টিয়ে বললেন, ‘‘কোনও চান্স নেই। ওর এজেন্টের সাহায্য ছাড়া এমবাপের সঙ্গে কথা বলার কোনও সুযোগ নেই। আসলে এমবাপেও চায় না কথা বলতে। সেই কারণেই ফরাসি মিডিয়ার সঙ্গে ক্রমে ওর দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে। আর গত ইউরো কাপে হারের পর থেকে তো ফরাসি মিডিয়ার সঙ্গে এমবাপের অহি-নকূল সম্পর্ক।’’ ব্রুটোই বলছিলেন, জানুয়ারিতে বোধহয় পিএসজি ছেড়ে চেলসিতে চলে যাবেন এমবাপে। ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে একদমই বনিবনা হচ্ছে না তাঁর। এহেন এমবাপের প্রেম নিয়ে কাতার বিশ্বকাপে ফ্রান্স শিবির সরগরম।
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে হারের বেদনায় এখনও মুষড়ে ব্রাজিল শিবির, সতীর্থদের চ্যাট ফাঁস করে বিতর্কে নেইমার]
আগেরদিন হ্যারি কেনের পেনাল্টি মিসের পর এমবাপের হাসির ভিডিও প্রকাশ নিয়ে বিশ্বকাপের বাজারে যা চলল, এদিন সেটাকেও ছাপিয়ে গেল তাঁর প্রেমের কাহিনি। শোনা যায়, ৩২ বছরের ট্রান্সজেন্ডার মডেল ইনেস রাউয়ের সঙ্গে নাকি গভীর প্রেম তেইশ বছরের এমবাপের। প্রায় ন’বছরের বড় মডেলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই চর্চা। প্লে বয় ম্যাগাজিনের কভার ফটোতে জায়গা পাওয়া মডেল ইনেস রাউয়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার ছবি দু’জনের ইনস্টাগ্রামে গেলেই পাওয়া যাবে। তেইশের এমবাপের বত্রিশের ইনেস রাউয়ের সঙ্গে প্রেম প্রকাশ্যে আসার পর না কি ধুন্ধুমার পড়ে যায় প্যারিসে। কারণ মোটেই বয়স নয়। ইনেসই ফ্রান্সে পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরিত হওয়া প্রথম মডেল, যিনি কিনা জায়গা পেয়েছিলেন ‘প্লে বয়’ ম্যাগাজিনের কভার ফটোতে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরিত হন ইনেস। আর দু’জনের ঘনিষ্ঠ ছবি এবং প্রেমের গুঞ্জন শোনার পর এমবাপে এবং ইনেস রাউকে যখনই সংবাদমাধ্যম এই নিয়ে প্রশ্ন করেছে, এড়িয়ে গিয়েছেন দু’জনেই। কেউ স্বীকার করেননি প্রেমের সম্পর্ক।
আবার কোনও পক্ষ থেকে অস্বীকারও করা হয়নি। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপে মরক্কোর বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল খেলতে নামার আগে এমবাপেকে নিয়ে প্রেমের নতুন গুঞ্জন। ২৮ বছরের বেলজিয়ান মডেল রোজ বেরট্রামের সঙ্গে না কি চুটিয়ে প্রেম করছেন তিনি। ব্রুটো বলছিলেন, রোজ বেরট্রাম নাকি এই মুহূর্তে দোহাতেই আছেন। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ চারে ওঠার পর ফরাসি শিবিরেও গিয়েছিলেন তিনি। ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশঁ জানেন, পরপর দু’বার বিশ্বকাপটা দেশে নিয়ে যেতে হলে, শারীরিক-মানসিক দু’দিক থেকেই চাঙ্গা রাখতে হবে দলের সেরা তারকা কিলিয়ন এমবাপেকে। তাই ইংল্যান্ডকে হারানোর পর একটা দিন পুরোপুরি নিজের মতো থাকতে দিয়েছিলেন তারকা ফরোয়ার্ডকে।
তবে এমবাপের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে শুধু এই দুই মহিলার নামই নয়। এর আগেও ফরাসি অভিনেত্রী এমা স্মেট এবং মডেল এলিসিয়া এইলিসের নাম জড়িয়েছিল। তবে দোহাতে যা শোনা যাচ্ছে, বেলজিয়ান মডেল রোজের সঙ্গে প্রেম নিয়ে নাকি ফরাসি তারকা খুবই সিরিয়াস। সেরকম হলে বিশ্বকাপ জেতার পরেই তাঁদের এই সম্পর্কের কথা ঘোষণাও করে দিতে পারেন এমবাপে। রোজও নিজগুণে বেশ বিখ্যাত। এই মুহূর্তে তিনি ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় মডেল। তবে নতুন করে প্রেমে মজুন বা যা খুশি করুন, ফরাসিরা কিন্তু মরক্কোর বিরুদ্ধে এমবাপের গতির সঙ্গে ড্রিবলটাই শুধু দেখতে চাইছেন। আর কিছু নয়।