সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিরণ রাওয়ের কলকাতা কানেকশন দীর্ঘদিনের। এখানেই বেড়ে ওঠা। পড়াশোনা লরেটোতে। আর সেই প্রেক্ষিতেই শহর তিলোত্তমার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে কিরণ রাওয়ের। ঝরঝরে বাংলাও বলতে পারেন দিব্যি। আজও কলকাতায় এলে গড়িয়াহাট থেকে শুরু করে পুরনো আস্তানায় ঢুঁ মারেন। সাম্প্রতিক আর জি কর কাণ্ডের পর প্রতিবাদী কলকাতার 'স্পিরিট' দেখে মুগ্ধ কিরণ রাও। আর সেই অনুপ্রেরণাকে কাজে লাগিয়েই ইতিমধ্যে নিজের নতুন সিনেমার প্লট সাজিয়ে ফেলেছেন পরিচালক।
পঁচিশের অস্কার মঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে কিরণ পরিচালিত সাড়া ফেলে দেওয়া সিনেমা 'লাপাতা লেডিজ'। অস্কার নমিনেশনের পরই কলকাতায় ঢুঁ মারেন এক অনুষ্ঠানের জন্য। সেখানেই আর জি কর ইস্যু থেকে নারী নিরাপত্তা নিয়ে সরব হন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক জানিয়েছেন, "গোটা দেশেই কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুব জরুরী। কলকাতার এহেন প্রতিবাদী মুখ দেখে আমি অভিভূত। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেভাবে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমেছেন , সেটা আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।" কিরণ এও জানিয়েছেন যে, কলকাতার প্রেক্ষাপটে একটা গল্প সাজিয়েছেন তিনি। যেখানে চল্লিশের দশক থেকে বর্তমান প্রজন্মের নারীদের নানা কথা ফুটে উঠবে। প্রাথমিক পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে। এই ছবির শুটিংও কলকাতাতেই করার ইচ্ছে কিরণ রাওয়ের। শুধু তাই নয়। মেয়েদের পরিচয় প্রসঙ্গেও কথা বলতে গিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সিস্টেমকে প্রশ্ন করেছেন কিরণ রাও।
'লাপাতা লেডিজ' ছবিতে তিনি দেখিয়েছিলেন একটা ঘোমটার জন্য কীভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল দুই পরিবারকে। কেন পুরুষতন্ত্রের নিয়মের বেড়াজালে মহিলাদের ঘোমটার আড়ালে থাকতে হবে? হাস্যরস এবং ভালোবাসার গল্পের মোড়কে সেই প্রশ্নই তিনি তুলেছিলেন। যে ছবি প্রেক্ষাগৃহে রমরমিয়ে চলার পর ওটিটিতেও সফল ব্যবসা করে ফেলেছে। এবার দেশের হয়ে অস্কারের দৌড়ে 'লাপাতা লেডিজ'। নারী পরিচয় প্রসঙ্গ উত্থাপন করতেই কিরণ রাওয়ের মন্তব্য, "আমার পরিচয় আমার। সম্প্রতি আমি ড্রাইভিং লাইসেন্স রিনিউ করাতে গেলে আমাকে বাবার নাম জিজ্ঞেস করা হয়। কারণ আমি সেপারেটেড এবং স্বামীর নাম রাখিনি। আমি কোনও দিনই নিজের নাম-পদবী পরিবর্তনের পক্ষপাতী নই। নারীদের জন্য সত্যিই বিষয়টা অদ্ভূত। প্রাপ্তবয়স্কা হলেও বাবা কিংবা স্বামীর নামোল্লেখ করতে হয়।"