নবেন্দু হাজরা: যাত্রী নিজেই সতর্ক ছিলেন না। বিপদ জেনেও তাড়াহুড়োয় ট্রেনে উঠতে গিয়েছিলেন, চোখের সামনে দরজা বন্ধ হতে দেখা সত্ত্বেও। আর সেই কারণেই হাত আটকে যায় বন্ধ দরজার মাঝে। চলন্ত ট্রেন তাকে নিয়েই চলতে শুরু করে। মৃত্যু হয় সজল কাঞ্জিলালের। ১৩ জুলাই পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনের সেই সাড়া জাগানো দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্টে সজলবাবুর অসতর্কতা ও তাড়াহুড়োকেই দায়ী করল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ফলে তাঁর পরিবার ক্ষতিপূরণের দাবিদার হতে পারেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে মেট্রো।
[আরও পড়ুন: পুজোর আগেই সুখবর, টালি নালার উপর খুলছে জোড়া সেতু]
১৩ জুলাই সন্ধেয় পার্ক স্ট্রিট স্টেশনের ওই দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে মেট্রো রেল সেফটি কমিশনারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গড়া হয়েছিল। বুধবার প্রকাশিত হয়েছে সেই কমিটির তদন্ত রিপোর্ট। সেখান বলা হয়েছে, ঘটনার দিন যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের বয়ান খতিয়ে দেখা হয়েছে। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিও যাচাই করে দেখেছে মেট্রোরেল। তাতেই স্পষ্ট, রেলের কোনও গাফিলতিই ছিল না। স্টেশনে নির্দিষ্ট সময় দাঁড়ানোর পরেই সেদিন মেট্রো প্ল্যাটফর্ম ছাড়ে। চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়েছিলেন মৃত ব্যক্তিই। এদিকে রিপোর্ট সামনে আসার পরেই ক্ষোভে ফুঁসছেন সজল কাঞ্জিলালের আত্মীয়রা।
মৃত সজল কাঞ্জিলালের পিসতুতো ভাই চন্দন দাস জানিয়েছেন, “মেট্রোরেল একতরফা রিপোর্ট দিয়েছে। আমাদের একবারও ডাকা হয়নি। নিজেদের দোষ ঢাকতে তারা এই রিপোর্ট বানিয়েছে। প্রয়োজনে আমরা এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।” এই রিপোর্ট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানিয়েছে সজলের পরিবার। মেট্রোয় ছেষট্টি বছরের ওই প্রৌঢ়ের প্রাণহাণির পরেই একগুচ্ছ দাবি তুলেছিল তাঁর পরিবার। যার মধ্যে ছিল পরিবারের একজনকে চাকরি দিতে হবে। পার্ক স্ট্রিটে সজলের মূর্তি বসাতে হবে। দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। কিন্তু মিলবে না কিছুই।
[আরও পড়ুন:তৃণমূলেই থাকছেন দেবশ্রী! অভিনেত্রীর বিধানসভায় আসা ঘিরে নয়া জল্পনা]
প্রসঙ্গত, ঘটনার পর মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন মেট্রোরেলের মুখপাত্র ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়। সজলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, মেট্রো বিভাগের রেল সুরক্ষা কমিশনার ঘটনার তদন্ত করবে। সেদিন যাঁরা মেট্রোয় ছিলেন তাদের সকলের বয়ান নেওয়া হবে। সেইমতো মেট্রো রেলের হেড অফিসে প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি নেওয়ার কাজ শুরু হয়। প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের বয়ান দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে খবরের কাগজে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল মেট্রোভবনের দরজাতেও। ঘটনা তদন্তে পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনে গিয়েছিলেন মেট্রো সার্কেলের রেল সুরক্ষা কমিশনার জিপি গর্গ। বিশেষ ওই রেক খতিয়ে দেখেন তিনি। তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে হাতে এসেছে এই রিপোর্টই।
The post অসতর্কতাতেই মৃত্যু সজলের, দায় এড়িয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার মেট্রো কর্তৃপক্ষের appeared first on Sangbad Pratidin.