সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীরের পর এবার লাদাখে দাবদাহ! শুনতে আশ্চর্য লাগলেও বাস্তব এটাই। চির তুষারাবৃত এই পাহাড়ি উপত্যকাতেও এবার চড়ছে উষ্ণতার পারদ। পরিস্থিতি এটতাই খারাপ যে বাতিল করা হচ্ছে বিমান পরিষেবা। ভূস্বর্গে রেকর্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধির পর এবার লাদাখেও এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় স্বভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়ছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, গরমের জন্য লাদাখের বিমান বাতিলের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে আবহাওয়াবিদ প্রফেসর চেতন সোলাঙ্কির এক সোশাল মিডিয়া বার্তায়। তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে ১১ হাজার ফুট উচ্চতায় যেখানে তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি হওয়ার কথা সেখানে গরমের জন্য বিমান বাতিল করতে হচ্ছে! এই সমস্যার কথা তুলে ধরে সোলাঙ্কি বলেন, 'আশ্চর্যের বিষয় এটা নয় যে বিমান বাতিল হয়েছে। বরং উদ্বেগের বিষয় এটাই যে উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে অত্যধিক গরমের জেরে বিমান বাতিল করতে হচ্ছে। এটা জলবায়ু পরিবর্তনের অশনি সংকেত। আজ আমরা এই পরিস্থিতির শিকার হচ্ছি, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর আরও ভয়াবহ মাশুল গুনতে হবে। আমাদের উচিত অবিলম্বে এই বিষয়ে সচেতন হওয়া।
[আরও পড়ুন: কেরলের ওয়ানড়ে ভয়ংকর ভূমিধস, শিশু-সহ মৃত ৬, আটকে শতাধিক]
জানা গিয়েছে গত সপ্তাহে সন অ্যান্ড আর্থ ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে লাদাখ যাচ্ছিলেন আইআইটি বম্বের অধ্যাপক তথা পরিবেশবিদ চেতন সোলাঙ্কি। দুপুর ১টা নাগাদ ইন্ডিগোর একটি বিমানে লাদাখ যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। যদিও বাতিল করা হয় সেই বিমান। কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, লাদাখে বাতাসের তাপমাত্রা বেশি থাকায় বাধ্য হয়েই বাতিল করতে হচ্ছে বিমানটি। এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের দাবি, আসলে উচ্চতা বাড়লে বাতাসের ঘনত্ব কমতে শুরু করে। যার জেরে অধিক উচ্চতায় যাওয়া পর্বতারোহীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে নিতে হয়। লেহ বিমানবন্দরের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ হাজার ৭০০ ফুট উঁচুতে। ফলে দিল্লি বিমান বন্দরের তুলনায় সেখানে বাতাসের ঘনত্ব অনেক কম। তার উপর সেখানকার তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বাতাসের ঘনত্ব আরও কমে যায়। এই পরিস্থিতিতে সেখানে বিমান চালানো যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। এক্ষেত্রে খারাপ হতে পারে ইঞ্জিন। টেক অফেও সমস্যা হতে পারে। গত সপ্তাহে ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের তরফে জানা গিয়েছিল, লেহর তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলেছে যা রীতিমতো অস্বাভাবিক।
[আরও পড়ুন: ফের দুর্ঘটনার কবলে রেল, লাইনচ্যুত হাওড়া-মুম্বই এক্সপ্রেসের ১৮টি বগি, মৃত অন্তত ২]
তবে শুধু লাদাখ নয়, প্রবল গরমে পুড়ছে ভূস্বর্গ কাশ্মীরও। রিপোর্ট বলছে, গত রবিবার কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় রেকর্ড ছুঁয়েছে তাপমাত্রা। কাশ্মীরের আবহাওয়া দপ্তরের দাবি, গত ২৫ বছরের মধ্যে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল গত রবিবার। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে আগামী ২ দিনের জন্য কাশ্মীরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল। গত ২৫ বছরের রেকর্ড ভেঙে রবিবার কাশ্মীরের তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বরফের রাজ্য হিসেবে পরিচিত কাশ্মীর, লাদাখের এমন ব্যাপক তাপমাত্রা বৃদ্ধি আসলে বিপদের বার্তা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।