সুমন করাতি, হুগলি: মধ্যযুগীয় বর্বরতা কোন্নগরে! সম্পত্তির লোভে যুবতীর গায়ে গরম জল ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল হুগলিতে। গ্রেপ্তার অভিযুক্ত বাবা ও ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,কোন্নগরের শরৎচন্দ্র চ্যাটার্জি লেনের বাসিন্দা প্রণবকুমার আদক। তাঁর মেয়ে বছর ২৫-এর ঐশ্বর্য আদক। অভিযোগ, ২ আগস্ট সন্ধেয় যুবতীর গায়ে গরম জল ঢেলে দেয় তাঁরই নিজের পিসতুতো ভাই। গরম জলে শরীর, মুখ ঝলসে যায়। ঘটনায় মদত দেয় যুবতীর পিসি ও পিসেমশাই। প্রণববাবুর অভিযোগ, তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে ওই বাড়ি থেকে উৎখাত করতে নানারকম ফন্দি এঁটেছেন তাঁর বোন ভগ্নীপতি।
[আরও পড়ুন: ‘বন্ধু’ উদ্ধবের ডাকে সাড়া, এবার মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রচারে যাচ্ছেন মমতা!]
ঘটনার দিন প্রণববাবু কাজে গিয়েছিলেন। রাত নটা নাগাদ বাড়ি ফিরে মেয়ের কাছে জানতে পারেন নির্মমতার কথা। গরম ঢালা হয় ঐশ্বর্যের গায়ে। তার পর তাঁর পিসি বরোলিন লাগিয়ে দেন। পিসেমশাই আইসক্রিম খাওয়াতে নিয়ে যান, যেন ব্যাপারটা এমন কিছুই হয়নি। প্রণববাবু বলেন, "মেয়েকে দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। ও একটু জড়সড়, সব কথা গুছিয়ে বলতে পারে না, মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ। এমনভাবে ওঁর উপর অত্যাচার হয়েছে, এর বিচার চাই।" যুবতী বর্তমানে কোন্নগরের উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রনব আদক জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা পান্নালাল আদকের মৃত্যুর আগে বোন ভগ্নিপতি জোর করে তাঁদের বাড়ি নিজেদের নামে লিখিয়ে নেন। উত্তরপাড়ায় নিজের বাড়ি থাকলেও গত পাঁচ বছর তাঁরা এই বাড়িতেই এসে থাকছেন। সেই বাড়িতে তিনি তাঁর মেয়েকে নিয়ে থাকেন। গত মে মাসে স্ত্রীর মৃত্যু হওয়ার পর ঐশ্বর্য একা হয়ে গিয়েছেন। প্রণববাবু বেসরকারি জায়গায় কাজ করেন। মেয়েকে রেখেই কাজে যেতে হয়।আর সেই সুযোগে তাঁর উপর চলে অত্যাচার। এর আগে একবার প্রণববাবুর মাথায় জলভর্তি পিতলের বালতি ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছিল তাঁর ভাগ্না।
[আরও পড়ুন: ‘জুতো খুলে মারব…’ ভিড় জনতার সামনে সরকারি আধিকারিককে হুমকি বিজেপি বিধায়কের!]
উত্তরপাড়া থানার পুলিশ অভিযুক্ত দীপঙ্কর মৈত্র ও তাঁর নাবালক ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃত দীপঙ্কর মৈত্রকে শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হবে। তাঁর ছেলেকে জুভেনাইল আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, সম্পত্তি নিয়ে ভাইবোনের মধ্যে অনেক দিনের অশান্তি। অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন,"সম্পত্তির জন্য মানুষ যে এত নির্মম হতে পারে তা দেখে খারাপ লাগছে। ঘটনা যদি সত্যি হয় পুলিশ তার ব্যবস্থা নেবে। অভিযুক্তদের পক্ষে কেউ থাকবে না।"