রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: জীবন তো খণ্ড-বিখণ্ড কয়েকটা মুহূর্তের সমাহার। আনন্দ, শোক, হর্ষ, বিষাদ, ঘৃণা, ভালবাসা নামের কিছু কিছু অনুভূতিমালা। জীবনের আয়ু যতটা, ততটাই অভিজ্ঞতা, ততটাই চাওয়াপাওয়ার হিসেব কষা। তাই তো চিন্তকরা বলেন, কোনও ধাক্কায় নিজেকে শেষ হতে না দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে নতুন পথচলা শুরুটাই জীবনের আসল চরিত্র। সে যে ক্ষেত্রেই হোক। আটষট্টি বছর বয়সী বঙ্গ রাজনীতিক তথা হলদিয়ার একসময়কার দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা লক্ষ্ণণ শেঠ (Lakshman Seth) বিবাহিত জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর পর বোধহয় এসব কথা ফের উপলব্ধি করছেন। সদ্যই সেরেছেন রেজিস্ট্রি বিয়ে। অনুষ্ঠান এখনও বাকি। শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে মুখ খুললেন লক্ষ্মণ শেঠ।
১৯৭৯ সালে বিশিষ্ট লেখিকা তমালিকা পণ্ডা শেঠের (Tamalika Panda Seth) সঙ্গে বিয়ে হয় সেসময়ের দাপুটে রাজনীতিক লক্ষ্মণ শেঠের। দীর্ঘ দাম্পত্যের পর ২০১৬ সালে আচমকাই মৃত্যু হয় তমালিকাদেবীর। একা হয়ে যান লক্ষ্ণণবাবু। তারপর তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার অনেক ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সিপিএম (CPM) থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর বিজেপিতে যান তিনি। সেই দল ছেড়ে নিজে ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’ তৈরি করেন। কিন্তু তাতে বিশেষ সাড়া না পেয়ে কংগ্রেসে (Congress) যোগ দেন লক্ষ্ণণ শেঠ।
[আরও পড়ুন: ‘আমায় শেষ করতে চায় শুভেন্দু’, বিস্ফোরক লক্ষ্ণণ শেঠ, কী প্রতিক্রিয়া কুণাল ঘোষের?]
এভাবেই চলছিল জীবন। কিন্তু একটা জীবন এভাবে কাটিয়ে দেওয়া কি এতই সহজ? মোটেই না। তাই দ্বিতীয়বার জীবনসঙ্গী খুঁজে নিলেন ৬৮ বছরের রাজনীতিক। মানসী দে নামে বছর বিয়াল্লিশের নারীকে বিয়ে করলেন। পাঁচতারা হোটেলে উচ্চপদে কর্মরত মানসী এখন পুরোদস্তুর ‘মিসেস শেঠ’। রেজিস্ট্রি আর মালাবদলেই জীবনসঙ্গীর অঙ্গীকা করেছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: নেই নিজস্ব আবাস, প্রায় ৫ কোটি টাকার ভাড়াবাড়িতে থাকেন আমাজনের মালিক!]
শুক্রবার সাংবাদিকরা তাঁকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে লক্ষ্মণ শেঠের সাফ জবাব, ”আমার একজন সর্বক্ষণের প্রিয় মানুষকে দরকার ছিল। কাছের মানুষকে পাশে রাখতে এই সিদ্ধান্ত। যাকে বিয়ে করেছি তিনি সুশিক্ষিতা, কোনও রাজনীতি করেননি। তবে তিনি রাজনীতি সচেতন। এমন একটা মানুষকে দরকার যাঁর সঙ্গে দিন শেষে গল্প করা যায়।” এই-ই আসল কথা। এ জীবনের সমস্ত লেনদেন শেষে অন্ধকার নেমে এলে মুখোমুখি বসার ‘বনলতা সেন’ সকলের কাছেই বড় দামি।