shono
Advertisement

এখনও দলের সদস্যপদ নবীকরণ করাননি অনিলকন্যা অজন্তা, সিপিএম ছাড়ছেন?

ইতিপূর্বে তৃণমূল নেত্রীর ঢালাও প্রশংসা উঠে এসেছিল তাঁর কলমে।
Posted: 09:56 PM Apr 26, 2022Updated: 10:04 PM Apr 26, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: সিপিএমের (CPIM) সদস্যপদ নবীকরণ করাননি অধ্যাপক অজন্তা বিশ্বাস। রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা, তাহলে প্রবাদপ্রতিম সিপিএম নেতা, একসময় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের (Anil Biswas) মেয়ে কি শেষপর্যন্ত পার্টির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের পথে হাঁটছেন? এ বিষয়ে মঙ্গলবার দু’টো দিক উঠে এসেছে। এক, অনিল কন্যা নিজে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি। দুই, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, পার্টি মনে করলে সদস্যপদ নবীকরণের এখনও সুযোগ আছে। তাই এখনও শেষ কথা বলার সময় আসেনি। কিন্তু প্রথমে যে নির্ধারিত সময়সীমা ছিল তার মধ্যে ২০ বছরের পুরানো সিপিএমের প্রাথমিক সদস্যপদ নবীনকরণ করাননি অনিল-কন্যা।

Advertisement

পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, মার্চে পার্টির প্রাথমিক সদস্যপদের পুরনো মেয়াদ শেষ হয়। কলকাতা জেলা কমিটির অধ্যাপক শাখায় তাঁর সদস্যপদ ছিল। কিন্তু সূত্রের খবর, মঙ্গলবার পর্যন্ত সদস্যপদ নবীকরণই করাননি অজন্তা বিশ্বাস। জানা গিয়েছে, পার্টির জেলা দপ্তর থেকে ফোন করা হলে অজন্তা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আর রাজনীতিতে থাকছেন না। কলকাতা জেলা সিপিএমের সম্পাদক কল্লোল মজুমদার জানিয়েছেন, “সদস্যপদ নবীকরণ ইচ্ছা—নির্ভর। এখনও প্রক্রিয়া চলছে। নবীনকরণ করবেন কী করবেন না সেটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।”

[আরও পড়ুন: রোগীর আত্মীয় সেজে মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানি, কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে চাঞ্চল্য]

প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় এসএফআই করতেন সক্রিয়ভাবে। সঙ্গে ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর কন্যা সুচেতনা। দুই কন্যার হাত ধরে দীর্ঘদিন পর প্রেসিডেন্সিতে ছাত্রসংসদ দখল করেছিল এসএফআই। ব্যক্তিগত মেধায় পরবর্তীতে অধ্যাপনা শুরু করেন অজন্তা। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক হিসাবে গত বছর আগস্টে তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলায় তাঁর লেখায় তুলে ধরেছিলেন, বাংলার রাজনীতিতে নারীশক্তির ভূমিকা। জাগো বাংলা দৈনিক হওয়ার পর বাংলার রাজনীতিতে নারীশক্তি নিয়ে একটি ধারাবাহিক লিখেছিলেন। সেখানে বাম নেত্রীদের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন অনিল—কন্যা। এই লেখার পরই হুলস্থুল পড়ে গিয়েছিল সিপিএমে। বিস্তর চটে যায় সিপিএম। অজন্তা বিশ্বাসকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করে দল। তখনও কোনও বিতর্কে জড়াননি অজন্তা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, নীরবেই পার্টির প্রাথমিক সদস্যপদটাও নবীকরণ করালেন না।

পার্টির নিয়ম অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে পার্টির সদস্যপদ নবীকরণের সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। অবশ্য তারপরও সময় রয়েছে। এখন স্ক্রুটিনি চলার কথা। রাজ্য সম্মেলন ও পার্টি কংগ্রেসের জন্য স্ক্রুটিনির কাজ করতে একটু দেরি হয়েছে। সেই স্ক্রুটিনির কাজ শেষ হওয়ার সময়ই ধরা পড়েছে পার্টির সদস্যপদ নবীকরণ করাননি অজন্তা। প্রেসিডেন্সিতে পড়ার সময়ই ছাত্রফ্রন্ট থেকে পার্টিতে এসেছিলেন অজন্তা। প্রশ্ন উঠেছে, এখন কি তাহলে পার্টির যা অবস্থা তাতে ছাত্র সংগঠনের প্রাক্তন নেত্রীরা কি বীতশ্রদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন? পার্টির যে নব্য সংস্কৃতি ও অবক্ষয় তাতে রীতিমতো এঁরা বীতশ্রদ্ধ। একটা গবেষণাধর্মী লেখা লিখেছিলেন অজন্তা বিশ্বাস। কোনও রাজনৈতিক লেখা ছিল না। তা সত্ত্বেও কার্যত তাঁকে অপমান করেছিল সিপিএম। সেক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত তাঁর পার্টির প্রাথমিক সদস্যপদ নবীকরণ না করানো তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার।

[আরও পড়ুন: তীব্র গরম কাড়ল আরও এক প্রাণ, হিট স্ট্রোকের বলি যাদবপুর বিদ্যাপীঠের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী]

সিপিএম সূত্রে খবর, পার্টির একটি মহল চাইছে যেকোনওভাবে হোক হাতে-পায়ে ধরে তাঁকে সদস্যপদ নবীকরণ করাতে। জানা গিয়েছে, পার্টির মুখ বাঁচাতে কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদারকে নির্দেশ দেওয়া হবে, যেভাবে হোক অজন্তা বিশ্বাসের সদস্যপদ নবীকরণটা করাও। নইলে পার্টি মুখ দেখাতে পারবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement