নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: গরু পাচার মামলায় বিপাকে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের দাবি, দাপুটে তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই নিয়ে গত একমাসের মধ্যে প্রথম সারির দু’জন তৃণমূল (TMC) নেতা গ্রেপ্তার হলেন। অনুব্রত তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি হওয়ার পাশাপাশি তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতিতেও রয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই পার্থর পর অনুব্রতর গ্রেপ্তারিতে কিছুটা অস্বস্তিতে শাসকদল। যদিও এখনই এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত বা অবস্থান জানাতে নারাজ তৃণমূল নেতারা। তাঁরা বলছেন, তদন্ত চলুক আইন মেনে। সঠিক সময়ে দল সিদ্ধান্ত নেবেন।
অনুব্রত প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন (Santunu Sen) বলছেন, “তৃণমূল কোনওরকম দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। কিছুদিন আগেই নজিরবিহীনভাবে এক অভিযুক্ত নেতাকে দল ও মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। যেটা অন্য কোনও রাজ্যে হয় না, সেটা এরাজ্যে হয়েছে।” শান্তনুর বক্তব্য, আইন আইনের মতো চলুক। সঠিক সময়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু সিবিআইয়ের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, ওদের তদন্তের গতি শ্লথ। তদন্ত শুরু হলে ১০-১২ বছরে শেষ হয় না। আমরা চাই এই মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ হোক। এরপর সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে ফের প্রশ্ন ছুঁড়েছেন শান্তনু, সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) এখনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে ঘুরে বেড়ান। বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য স্পষ্ট বলে দিচ্ছেন, যারা অন্যায় করবেন, তাঁরাই শাস্তি পাবেন। দল দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
[আরও পড়ুন: এখনই লোকসভা ভোট হলে রাজ্যে ৩৮ আসন পাবে তৃণমূল, দাবি দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায়]
বিরোধীরা অবশ্য সুযোগ বুঝে একযোগে আক্রমণে নেমে পড়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) বলছেন,”বন্যের বনে সুন্দর। চোরেরা জেলে। তৃণমূলের গোটা দলটাই চোর। এটা একটা চেইন বিজনেস। এই শৃঙ্খলের উপরই দলটা চলে।” দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলছেন, বাংলার রাজনীতির স্বার্থে এই ধরনের নেতাদের শাস্তি পাওয়া দরকার। তাঁর যে দাম্ভিকতা, যে কথাবার্তা, তাতে শাস্তি পেতেই হত। তৃণমূলের খেলা শেষ হয়ে এসেছে।”
[আরও পড়ুন: ৭০ কোটির সম্পত্তি, ২৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান, জেল হেফাজতে ঝাড়খণ্ডের আইনজীবী]
বামেরাও তীব্র আক্রমণ করেছে তৃণমূলকে। আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, আইনি পথে গ্রেপ্তারিটাই সঠিক পদক্ষেপ। আর কোনও উপায় ছিল না। এবার বড় মাথাদের দিকে এগোনো উচিত। সুজন চক্রবর্তী আবার সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) আক্রমণ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “অনুব্রতর খুঁটি ছিলেন মমতা। বারবার তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন তিনি কোথায়? আমি মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করছি।”