সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ ও অর্পিতাকে প্রায় এক সঙ্গে গ্রেপ্তার করে ইডি। একজন জামিনে মুক্ত হয়েছেন। অন্যজন জামিনের আবেদন নিয়ে নিম্ন আদালত থেকে হাই কোর্ট হয়ে সুপ্রিম দরবারে কড়া নাড়ছেন। অর্পিতার জামিনের পর সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইঞার বেঞ্চে পার্থের তরফে দাবি করা হল অর্পিতার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্কই নেই। জামিনের সওয়াল-জবাবের সময় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী মুকুল রোহতগি জানান, "এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত অর্পিতার বাড়ি থেকে পাওয়া টাকা, ও সোনার গয়নার সঙ্গে পার্থর কোনও সম্পর্ক নেই। অর্পিতার সঙ্গেও তাঁর কোনও সম্পর্কই নেই।" জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবীর দাবি, পার্থ প্রভাবশালী, জামিন পেলে প্রমাণ লোপাট হতে পারে।
২০২২ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের 'ঘনিষ্ঠ' অর্পিতার আবাসন থেকে প্রায় ৫০কোটি টাকা ও বহুমূল্যের গয়না বাজেয়াপ্ত করে ইডি। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হন পার্থও। এর পরই পার্থ ও অর্পিতার ঘনিষ্ঠতা সামনে আসতে থাকে। শান্তিনিকেতনে 'অপা' নামের বাড়ির খোঁজ পাওয়া যায়। আরও জানা যায়, অর্পিতার ৩১টি বিমায় নমিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সেই 'সম্পর্ক' নস্যাৎ করে তাঁর আইনজীবী মুকুল রোহতগি আদালতে জানিয়েছেন, যাঁর বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছিল, যাঁর বয়ানের ভিত্তিতে পার্থকে গ্রেপ্তার করা হয়, সেই অর্পিতা জামিন পেয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতির আরও দুই অভিযুক্ত, মাণিক ভট্টাচার্য ও তাঁর ছেলে সৌভিকও জামিন পেয়েছেন।
তাঁরা আরও জানান, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ৪৭৯ ধারায় রয়েছে, সাজার সর্বোচ্চ মেয়াদের অর্ধেক সময়ের বেশি অভিযুক্তকে জেলে রাখা যাবে না। অভিযুক্তের আগের কোনও অপরাধ না থাকলে তারও আগে জামিন মিলবে।
পালটা ইডির আইনজীবী জানান, সিবিআইয়ের চারটি মামলা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ৪৭৯ ধারায় জামিন পাওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে সাড়ে তিন বছর আটক করে রাখা যেতে পারে। ইডির আইনজীবী বলেন, "এটা ৫০ হাজার শিক্ষকের জীবন, জীবিকার প্রশ্ন। বড় বিষয়।" আদালত প্রশ্ন করে, ইডির কনভিকশন রেট কত? অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল বলেন, "এক্ষেত্রে ১০০ শতাংশই হবে, মিলিয়ে নেবেন।" এর পরই আদালত কড়াভাবে ইডিকে প্রশ্ন করে, এভাবে কতদিন কাউকে আটকে রাখা যায়? তাছাড়াও পার্থ চট্টোপাধ্যায় সিবিআই, ইডি ও জেল হেফাজতে কতদিন করে থেকেছেন, তার বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইঞার বেঞ্চ। আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানি।