চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: আটষট্টি ছুঁয়েও তিরিশের কোঠার নয়া জীবনসঙ্গী খুঁজে নিয়ে নজর কেড়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার অরুণলাল। সেলুলয়েডের দাপুটে ‘ভিলেন’ আশিস বিদ্যার্থী তো এই সেদিন ষাটের কোঠায় পৌঁছেও ফের বসলেন বিয়ের পিঁড়িতে। ৭৭ বছরে, তরুণী ভার্যায় মজে এবার শিরোনামে বিপত্নীক রাজনীতিক লক্ষ্মণ শেঠ।
অসুস্থতার জেরে প্রথম স্ত্রী তমালিকা পণ্ডা শেঠের মৃত্যুর সাত বছরের মাথায় ফের বিয়ে করলেন প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ তথা কংগ্রেসের বর্তমান এই রাজ্য সহ সভাপতি। পাত্রী কলকাতার ফুলবাগানের বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের মানসী দে। হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাস করার পর কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে উচ্চ পদে কর্মরত ছিলেন। রেজিস্ট্রি বিয়ের পাট চুকেছে। আনুষ্ঠানিক বধূবরণটুকুই বাকি। আরও খবর, সম্ভবত ঘরকন্নায় মন দিতেই চাকরি ছেড়েছেন ‘মিসেস শেঠ’। কানাঘুষো উড়িয়ে মঙ্গলবার লক্ষ্মণবাবু নিজেই খোলসা করেছেন তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের বৃত্তান্ত, ‘‘যা শুনেছ ঠিক। আমি বিয়ে করেছি। কলকাতার পাশাপাশি হলদিয়াতেও রিসেপশন হবে। বাকি কথা পরে বলব।’’ শেষ খবর, আগামী ২৪ জুন সেই রিসেপশনের প্রস্তুতি আপাতত তুঙ্গে। নববধূর আগমন উপলক্ষে বেশ কয়েক দিন ধরে নামি শিল্পীদের নিয়ে জমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও পাকা।
[আরও পড়ুন: স্ক্রিন শেয়ার থেকে নাম, নম্বর লুকিয়ে ফেলা! WhatsApp আনছে নতুন ফিচার!]
২০১৬ সালে ২৯মে প্রথম স্ত্রী তমালিকাকে হারানোর পর অনেকটাই ভেঙে পড়েন লক্ষ্মণ। দুই ছেলে সায়ন্তন এবং সুদীপ্তন পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন। হলদিয়ার কদমতলার কাছাকাছি সিপিএমের একসময়ের পার্টি অফিস লক্ষ্মণ কংগ্রেসে যোগ দেওয়া পর থেকেই ‘গান্ধী ভবন’ নামে পরিচিত। সেখানেই এখন থাকেন তিনি। রাজনীতি তাঁর রক্তে। সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’ নামে দল গড়েন। কিন্তু সাড়া না পেয়ে যোগ দেন বিজেপিতে। কিন্তু সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের রাজনীতি পছন্দ না হওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে শেষমেশ যোগ দেন কংগ্রেসে। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, রাজ্য কংগ্রেসের সহ সভাপতি হিসেবে কাজ শুরুর পর দলের রাজ্য দপ্তরেই মানসীর সঙ্গে আলাপ হয় লক্ষ্মণের। কয়েকমাস মেলামেশার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দুজনে। বেশ কিছু মিটিং-মিছিল করে পুরনো রাজনৈতিক জমি উদ্ধারে কাজ সম্প্রতি শুরু করেছেন একসময়ের দাপুটে নেতা লক্ষ্মণ শেঠ। এই আবহে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনেও নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে।
ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই ছেলে পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন। দলীয় কাজ, ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ এবং দলীয় কর্মীদের আনাগোনা নিয়ে ব্যস্ততা থাকলেও দিনের শেষে লক্ষ্মণ ছিলেন নেহাতই একা । সেই একাকীত্ব দূর করতেই অবশেষে নতুন জীবনসঙ্গী বেছে নিলেন তিনি। তাঁর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান ‘আইকেয়ারে’র অধীন হলদিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এইচআইটি) ক্যাম্পাসে জোর কদমে এখন চলছে বাংলো ঢেলে সাজানোর কাজ। এইচআইটি’র অধ্যক্ষ এই বাংলোয় থাকতেন। ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান এবং নববধূর জন্য এই জায়গা ছেড়ে তাঁকে উঠে যেতে হবে বিকল্প ভবনে। শেষ-জুনের আসন্ন বিবাহ বাসর ঘিরে ক্যাম্পাসে ক্রমশ দানা বাঁধছে উৎসবের আবহ।