কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: রোগিনীর বাঁ পা ভেঙেছিল। হাসপাতালে ডাক্তাররা ডান পা অস্ত্রোপচার করেন বলে অভিযোগ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (Murshidabad Medical College) চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ঘটনা জানাজানি হতে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতালে বিক্ষোভও দেখানো হয়। ওই ভুলের পরে রোগিনীকে অন্যত্র স্থানান্তর করার চেষ্টাও হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
সুতি থানার ছাপঘাটি মোল্লা পাড়ার সেকেন্দার আলির স্ত্রী বছর ৬২-এর রেনু বিবি। পরিবার সূত্রে খবর, রেনু বিবি বুধবার বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে যান। বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। এক্সরে এবং বিভিন্ন রিপোর্ট দেখে জানা যায় তাঁর কোমর ও বাঁ পা ভেঙে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ ওই বৃদ্ধার অস্ত্রোপচার হয়। পরে তাঁকে দেখে চমকে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। বাঁ পায়ে ভাঙা হাড়ের অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল। কিন্তু ডান পায়ে ওই অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে অভিযোগ।
ঘটনা জানাজানি হতেই হাসপাতালে বিক্ষোভ শুরু হয়। রেনু বিবির নাতি আবদুল সেলিম বলেন, "ডান পায়ের ক্ষতি করে দিল হাসপাতালের ডাক্তাররা। ঠাকুমা আর হাঁটতে পারবে না। এই দায় কে নেবে!" রোগিনীর ছেলে মহম্মদ রোহীমুদ্দিন বলেন, "জেলার একমাত্র মেডিক্যাল কলেজে যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে অন্য হাসপাতালগুলিতে কি হবে! ঘটনার বিচার চাইছি আমরা।" তাঁর আরও অভিযোগ, "বেগতিক দেখে ডাক্তাররা মাকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দিয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে চেঁচামেচি করতে মাকে এখন হাসপাতালে রাখা চামেচ। তবে মা কথাবার্তা বলছে না।"
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার ডান পায়ে ট্রাকশন বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ডান পায়ে রড ঢোকানো হয়েছে। তবে যে পায়ে হাড় ভেঙেছে সেই পায়ে নতুন করে ট্রাকশন দেওয়া হয়েছে! সরকারি হাসপাতালে কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল? সেই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে উঠেছে। এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সুপার ডাঃ অনাদি রায় চৌধুরী বলেন, "লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনার তদন্ত অবশ্যই হবে। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।" ওই ঘটনায় বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রোগীর পরিবার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
