স্টাফ রিপোর্টার: এ রাজ্যে তৃণমূলই ‘ইন্ডিয়া’। লোকসভা ভোটের আবহ তৈরি হওয়ার অনেক আগে বঙ্গের ভোট-ভবিষ্যৎ নিয়ে এ কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ধূপগুড়ির উপনির্বাচনকে দৃষ্টান্ত করে বঙ্গের ভোট-কৌশল আরও একবার স্পষ্ট করে দিল তৃণমূল নেতৃত্ব। জানিয়ে দিল, ইন্ডিয়া জোটের ফর্মুলা মানবে না বাম-কংগ্রেসই। ধূপগুড়ির উপনির্বাচনই তা মানুষের সামনে স্পষ্ট করে দিয়েছে। মানুষও তাই ফলাফলে বুঝিয়ে দিয়েছে তারা বিজেপির সঙ্গে লড়াইয়ে শুধু তৃণমূলকেই চায়। সিপিএম, কংগ্রেস বা অন্য যে কোনও দলেরই ভূমিকা সেখানে শুধুমাত্র ‘ভোট কাটুয়া’র।
ইন্ডিয়া (INDIA Alliance) জোট গঠন হয় জুলাইতে। ধূপগুড়ির উপনির্বাচন হয় ৫ সেপ্টেম্বর। বিজেপির কাছ থেকে সাড়ে চার হাজার ভোটে হেরে থাকা আসন আরও সাড়ে চার হাজার ভোটে জিতেছে রাজ্যের শাসকদল। সব মিলিয়ে বিজেপির থেকে কমবেশি ৯ হাজার ভোটের ব্যবধান। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কথায়, “ধূপগুড়ির ফলাফল আমাদের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বিজেপির আসন জিতে আমরা প্রমাণ করে দিয়েছিলাম যে, বিজেপিকে আমরাই হারাতে পারি। সঙ্গে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস জোটের ভোট নিজেদের দিকে টেনেও আমরা বুঝিয়েছি যে, বাংলায় জোট ইন্ডিয়ার হয়ে বিজেপিকে হারাতে পারি আমরাই।” রাজ্য সভাপতির বক্তব্য, ধূপগুড়িতে বিজেপির আসন যেমন তৃণমূল ছিনিয়ে এনেছে, সেই সঙ্গেই ইন্ডিয়া জোটের পক্ষেও বাংলার মানুষ তাদেরই যে বিকল্প শক্তি হিসাবে গ্রহণ করেছে, তা তারাই স্পষ্ট করে দিয়েছে। তাই এই উপনির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ।
[আরও পড়ুন: টিম ইন্ডিয়ার সাজঘরে কীভাবে হল বিরাটের ৩৫তম জন্মদিন পালন? দেখুন ভাইরাল ভিডিও]
ধূপগুড়ির ভোটে কংগ্রেসের সমর্থনে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র রায়। ত্রিমুখী লড়াইয়ে বিজেপিকে সরাসরি পরাস্ত করেছিল তৃণমূল। তাদের প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের সঙ্গে লড়াইয়ে ১৩ হাজার ৭৫৮ ভোট পেয়ে জামানত জব্দ হয়েছিল সিপিএম-কংগ্রেসের জোটপ্রার্থীর। তখন জাতীয় স্তরে জোট ইন্ডিয়ার গঠন হয়ে গিয়েছে। তাদের শরিক হয়েও বাম-কংগ্রেস তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল রাজ্যের শাসকদল। শেষে সরাসরি আক্রমণের কৌশলে গিয়ে ধূপগুড়ি আসন জিতে নেয় তারা। রাজ্য সভাপতির কথায়, “মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কংগ্রেস আর বামফ্রন্ট এখানে স্রেফ ভোট কাটুয়া।”
লোকসভা ভোটে বঙ্গে কংগ্রেস, আইএসএফের হাত ধরা হবে কি না উৎসবের মরশুম শেষ করেই ফ্রন্টের বৈঠকে সেই আলোচনায় বসবে সিপিএম। কিন্তু তৃণমূলের বক্তব্য, ওই আলোচনা শুরুর আগেই তা ব্যর্থ। কারণ মানুষ ধূপগুড়িতে এই ফর্মুলাকে সামনে দেখেই তৃণমূলকে জিতিয়ে এনেছে। রাজ্যের শাসকদল মনে করিয়ে দিচ্ছে, ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের মাসখানেক আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট ২২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আর ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে সেই ভোট ৬ শতাংশে নেমে যায়। বিজেপি বিরোধী ভোট তাদের দিকেই এসেছে বলে দাবি তৃণমূলের। রাজ্য সভাপতি মনে করছেন, “রাজ্যের বিরোধী ভোটাররাও বুঝে গিয়েছেন, বিজেপিকে হারাতে কাকে ভোট দেওয়া উচিত।” তাই ধূপগুড়ির ফলকে সামনে রেখেই লোকসভা ভোটের ঘুঁটি সাজাতে চায় তৃণমূল।