বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: পুরভোটের পর উপনির্বাচনেও (WB By-Elections) অক্সিজেন পেল বামেরা। বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তারা। তৃতীয় স্থানে থাকা বিজেপি (BJP) অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে বামেদের থেকে। তৃণমূলকে পিছনে ফেলে জয় এসেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Ex-Bengal CM Buddhadeb Bhattacharjee) ওয়ার্ডেও। রাজ্যের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
বাম জমানায় ২০০৬ সালেও বালিগঞ্জ বিধানসভায় (Ballygunge assembly election) জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। ২০১১, ২০১৬ এবং ২০২১ সালেও সহজ জয় পেয়েছে ঘাসফুল শিবির। এবার উপনির্বাচনেও বড় ব্যবধানে জয় পেলেন তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। তিনি জিতলেন ২০ হাজার ৩০ ভোটে। ১৮ রাউন্ড পর্যন্ত বাবুলের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৮ হাজার ১০৯ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম পেলেন ৩০ হাজার ১৯০ ভোট। আর বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষ পেয়েছেন ১২ হাজার ৩৫ ভোট। শতাংশের নিরিখে তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছেন ৪৮. ০৮ ভোট। আর বামপ্রার্থীর ঝুলিতে ৩৪.৩৬ শতাংশ ভোট। সেখানে বিজেপি এবং কংগ্রেস প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ দুই অঙ্ক পার করেনি। উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভায় এই আসনে বামেদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৫ শতাংশের আশেপাশে। বিজেপি পেয়েছিল ২০ শতাংশের বেশি ভোট।
[আরও পড়ুন: আসানসোল-বালিগঞ্জে তৃণমূলের জয়জয়কার, ‘নববর্ষের গিফট’, টুইট মমতার, উচ্ছ্বসিত অভিষেক]
বালিগঞ্জ বিধানসভার ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বুদ্ধবাবু। এবার এই ওয়ার্ড নিজেদের দখলে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বামেদের কাছে। মুখে চওড়া হাসি নিয়েই সেই চ্যালেঞ্জ জিতলেন সায়রা। গণনা শেষে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীর তুলনায় ৯১৮ ভোটে এগিয়ে রইলেন বাম প্রার্থী। শুধু ৬৫ নয়, ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডেও জয় পেয়েছে বামেরা। আর এই পুনরুজ্জীবনের পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বামেদের প্রাথমিক বিশ্লেষণ বলছে, বালিগঞ্জ বিধানসভায় প্রায় ৪৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটার। সেই কথা মাথায় রেখে একমাত্র সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়েছিল বামেরা। তাঁদের সেই ‘তাস’ অনেকাংশেই কাজে এসেছে। পাশাপাশি বামেদের দাবি, বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে মানুষের। রামে চলে যাওয়া ভোট ফিরে এসেছে বামে। এবারের ভোটে কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে জোটের পথে হাঁটেনি আলিমুদ্দিন। তাতে সাপে বরই হল বামেদের।
[আরও পড়ুন: বালিগঞ্জে জয়ী বাবুল, অগ্নিমিত্রাকে পিছনে ফেলে আসানসোলে বাজিমাত শত্রুঘ্নর]
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দেয় না সেখানে তাদের ভোট বামেদের বদলে তৃণমূলের ঝুলিতে যায়। এবার বালিগঞ্জ এবং আসানসোল কেন্দ্রে কংগ্রেস ও বাম আলাদাভাবে প্রার্থী দিয়েছে। ফলে কংগ্রেসের ভোট রয়ে গিয়েছে হাত শিবিরেই। আখেরে সেই লাভের গুড় পেয়েছে বামেরাই। তবে প্রশ্ন একটা থেকেই যাচ্ছে। বামেরা যদি সত্যিই অক্সিজেন পেয়ে থাকে তাহলে কেন আসানসোলে ঘুরে দাঁড়াতে ব্যর্থ হল তারা? কেন বালিগঞ্জে তৃণমূলকে ছাপিয়ে যেতে পারল না? সেই জবাব কে দেবে?