অর্ক দে, বর্ধমান: বাংলায় ক্ষমতা হারিয়ে একেবারেই দুর্বল হয়ে গিয়েছে বামেরা (Left Front)। বর্ধমানে দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমন স্বীকার করলেন সিপিএমের (CPM) পলিটব্যুরো সদস্য প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত (Prakash Karat)। বামেদের কোনও শীর্ষস্তরের নেতৃত্ব এভাবে বাংলায় পার্টির ‘রক্তক্ষয়’ নিয়ে ইদানীংকালে স্বীকারোক্তি দেননি।
পাশাপাশি কারাত গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ”বিজেপি কেবলমাত্র একটি রাজনৈতিক দল নয়। কেবল ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা রাজনীতি করে না। দেশের সার্বভৌমত্ব ও ধর্মনিরপেক্ষতা নষ্ট করে দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আধিপত্য কয়েম করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। দেশের কোনও একক শক্তির ক্ষমতা নেই বিজেপিকে পরাস্ত করার। বিজেপির মতো শক্তিকে পরাস্ত করতে বামপন্থী সংগঠনগুলিকে এক হতে হবে।”
[আরও পড়ুন: ১৩ দিনে রাশিয়ার ৩ নাগরিকের রহস্যমৃত্যু ভারতে, এবার কার্গো জাহাজে মিলল রুশ ইঞ্জিনিয়ারের দেহ]
এদিন বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে প্রয়াত বাম নেতা নিরুপম সেনের স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রকাশ কারাত। সেই সভায় বিজেপিকে তুলোধনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক কাঠামোয় বদল আনাই বিজেপির মূল লক্ষ্য। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিগত ৮ থেকে ৯ বছর ধরে দেশে স্বায়ত্ব শাসন করার চেষ্টা করছে। বিজেপি এমন একটি রাজনৈতিক দল যারা আরএসএস-র সঙ্গে যুক্ত হয়ে হিন্দুরাষ্ট্র তৈরির চেষ্টা করছে। এই লক্ষ্যে বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। এমনকী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও সন্ত্রাস তৈরি করা হচ্ছে। দেশের পুঁজিপতিদের সঙ্গে মিলে হিন্দুরাষ্ট্রের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে বিজেপি।’’
এদিন তৃণমূলকেও নিশানা করেছেন প্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল মূলত বামেদের বিরোধিতা করে ক্ষমতায় এসেছে। গণতন্ত্র ও মানুষের মতামতকে দমন করার কাজ করে চলেছে। দল দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বিজেপির সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা তাদের নেই।’’ দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে লড়াই করতে হলে বামপন্থীদের কোনও দলের প্রতি নরম মনোভাব রাখলে চলবে না। দেশের প্রতিটি রাজ্যের আলাদা আলাদা চরিত্র রয়েছে। একতা বজায় রাখতে ও মানুষের অধিকার নিয়ে লড়াই করতে বামপন্থী দলগুলিকে একত্রিত হয়ে লড়াই করতে হবে।’’