shono
Advertisement

ইঁদুরবাহিত রোগে আক্রান্ত রাজ্যের ১৫ শতাংশ! চিন্তা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য

স্বাস্থ‌্য দপ্তরের তথ‌্য বলছে, রাজ্যের জনসংখ‌্যার ১২-১৫ শতাংশ এমন রোগের কবলে।
Posted: 02:21 PM Apr 25, 2023Updated: 02:21 PM Apr 25, 2023

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: জ্বর, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা, গায়ে র‌্যাশ। প্রস্রাবে রক্ত। থুতুর সঙ্গেও টাটকা রক্তের ছিটে। রোগী দিনদিন কাহিল। কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক‌্যাল মেডিসিন, মেডিক‌্যাল কলেজ বা এনআরএস মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে সম্প্রতি ভরতি হওয়া এমন বেশ কয়েকজনের চিকিৎসা করতে গিয়ে মারাত্মক এক তথ্যের সম্মুখীন চিকিৎসকরা। দেখা যাচ্ছে, তাঁরা ইঁদুরবাহিত এক রোগে আক্রান্ত, যা কিনা দীর্ঘ চার দশক বাদে ফের থাবা বসিয়েছে রাজ্যের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে।

Advertisement

স্বাস্থ‌্য দপ্তরের তথ‌্য বলছে, রাজ্যের জনসংখ‌্যার ১২-১৫ শতাংশ এর কবলে। অর্থাৎ করোনা, ডেঙ্গু, অ‌্যাডিনোর পর এক নয়া অশনি সঙ্কেত এই ‘লেপ্টোস্পাইরা ইক্টেরোহেমারেজিকা’ (Leptospirosis Icterohaemorrhagica)। ব‌্যাকটিরিয়াঘটিত সংক্রমণটি মূলত ছড়ায় ইঁদুরের মূত্র থেকে, কিছু ক্ষেত্রে মরা ইঁদুরের শরীর থেকেও। মানে জুনোসিস রোগ, ঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে মৃত‌্যুও হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই জনস্বাস্থ‌্য আধিকারিকরা বেশ উদ্বিগ্ন। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল থেকে এই রোগে আক্রান্ত বেশ কিছু কিশোর, বৃদ্ধ কলকাতার ট্রপিক‌্যাল ও নানা মেডিক‌্যাল কলেজে ভরতি হয়েছেন।

ঘটনা হল, কলকাতার হাতে গোনা কয়েকটি হাসপাতাল ছাড়া রাজ্যে এই রোগ নির্ণয়ের তেমন ব‌্যবস্থা কার্যত নেই। তাই চিকিৎসায় বিভ্রাট ঘটছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রথমে টাইফয়েড বা জন্ডিস ভেবে চিকিৎসা হচ্ছে। দিন পাঁচেক অ‌্যান্টিবায়োটিক খেয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেও রোগ আবার ফিরে এসে রোগীকে কাবু করে ফেলছে। কলকাতায় আনা হলে রক্তের অ‌্যালাইজা টেস্টে ধরা পড়ছে লেপ্টোস্পাইরা ব‌্যাকটিরিয়ার উপস্থিতি।

[আরও পড়ুন: স্তনবৃন্তে তাক করা বন্দুক, উরফির নয়া কাণ্ড দেখে তাজ্জব নেটদুনিয়া]

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাঠেঘাটে খালি পায়ে হাঁটলে বা পায়ে ক্ষত বা ঘা থাকলে দ্রুত রোগ সংক্রমিত হয়। তবে চটজলদি চিকিৎসা হলে আশঙ্কার কিছু নেই। রাজ‌্য স্বাস্থ‌্য অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ নিয়োগী সোমবার বলেন, ‘‌‘সংক্রমণ হলেও দ্রুত রোগ নির্ণয় হচ্ছে। তাই উদ্বেগের কিছু নেই।’’ জনস্বাস্থ‌্য বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, স্প্রিংয়ের মতো আকারের ব‌্যাকটিরিয়াটি সরাসরি ফুসফুস, কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিকল করে দেয়। তাই দ্রুত রোগ নির্ণয় সবচেয়ে জরুরি।

স্কুল অফ ট্রপিক‌্যাল মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ অধ‌্যাপক ডা. বিভূতি সাহার কথায়, ‘‘লেপ্টোস্পাইরা ব‌্যাকটিরিয়ার সঙ্গে টাইফয়েডের মিল ব‌্যাপক। তাই টাইফয়েড ভেবে চিকিৎসা করে ভাল হয়ে গেলেও ফের সংক্রমণ মাথাচাড়া দিতে পারে।’’ সূত্রের খবর, আগে গ্রীষ্ম থেকে বর্ষার শেষ পর্যন্ত লেপ্টোস্পাইরার সংক্রমণ দেখা দিত। এবার রীতিমতো উদ্বেগের চেহারা নিয়েছে। জনস্বাস্থ‌্য অধ‌্যাপক ডা. আশিস মান্নার মন্তব‌্য, ‘‘গ্রামের মানুষ বুঝতেই পারেন না, কখন ব‌্যাকটিরিয়া ঢুকে পড়েছে। শরীরে রোগের অ‌্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার পরে লক্ষণ স্পষ্ট হয়।’’

আশিসবাবু জানান, যাঁরা নর্দমা ও নিকাশির ময়লা সাফ করেন, তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের হার তুলনায় বেশি। রোগ ঠেকাতে জুতো পরতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। মাটির ঘরে ইঁদুর থাকে বেশি। তাই ইঁদুর তাড়ানোও সমান প্রয়োজনীয়।

[আরও পড়ুন: অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়াচ্ছেন কোন লাভের আশায়? টুইটে বিদ্বজ্জনদের বিঁধলেন অমিত মালব্য ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement