গৌতম ব্রহ্ম: এই মহানগরই পুরুষ পীড়নের বিরুদ্ধে প্রথম গর্জে উঠেছিল। পীড়িত পুরুষদের এক করে শুরু করেছিল আন্দোলন। এবার ভোপালকে টেক্কা দিয়ে ‘ব্রেক আপ’ পার্টিরও আয়োজন করতে চলেছে কলকাতাও।
আগামী ১৯ নভেম্বর আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস (International Men’s Day)। ওইদিনই ১৯ জন বিবাহবিচ্ছিন্ন পুরুষকে নিয়ে ‘ব্রেক আপ’ পার্টি বা ডিভোর্স পার্টির আয়োজন করা হবে। এমনটাই জানিয়েছেন ‘অল বেঙ্গল মেনস ফোরাম’-এর সভাপতি নন্দিনী ভট্টাচার্য। তাঁর পর্যবেক্ষণ, দেওয়ালে পিঠ ঠেকলেই পুরুষ মানুষ ডিভোর্সের পথে হাঁটে। কিন্তু অনেকেই ‘লোকে কী বলবে’ ভেবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পান। সব অন্যায় অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করেন। এই নিপীড়িত পুরুষদের আলো দেখাতেই এই ‘ব্রেক আপ পার্টি’-র পরিকল্পনা। ১৬ সেপ্টেম্বর, বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে জনস্বার্থ মামলার চূড়ান্ত শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। তারপরই তিলোত্তমার প্রথম ব্রেক আপ পার্টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবে ফোরাম।
[আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাঁশ-ইট-লাঠি নিয়ে হাজির BJP কর্মীরা, জলকামানে প্রতিরোধ পুলিশের]
এ দেশের মানুষকে প্রথম ব্রেক আপ পার্টির কথা জানিয়েছিল বলিউড সিনেমা ‘লাভ আজ-কাল’। কিন্তু সম্প্রতি এমনই পার্টির আয়োজন করে হইচই ফেলে দিয়েছে পুরুষ অধিকার নিয়ে কাজ করা ভোপালের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভাই ওয়েলফেয়ার’। ১৮ জন বিবাহ বিচ্ছিন্ন পুরুষকে নিয়ে এই ডিভোর্স পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। ছাপানো হয়েছে নিমন্ত্রণপত্রও। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল।
আর কলকাতার ‘অল বেঙ্গল মেনস ফোরাম’ ১৯ জনকে নিয়ে পার্টির আয়োজন করছে। বিবাহবিচ্ছিন্নদের মোটিভেট করতেই এমন অভিনব পার্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। পুরুষবাদীদের পর্যবেক্ষণ, ডিভোর্সের জেরে মানসিক ট্রমা হয় পুরুষ এবং তাঁর পরিবারের। স্বাধীনতা সেলিব্রিট করলে সেই ট্রমা কেটে যাবে। জীবনের মূল স্রোতে ফিরবেন বিবাহবিচ্ছিন্নরা। সেই সঙ্গে একটা বার্তাও দেওয়া যাবে যে, ‘লোকে কী বলবে’ ভেবে অন্যায়কে আর মুখ বুঝে সহ্য করবে না পুরুষ। জোটবদ্ধ প্রতিবাদ হবে। প্রতিবাদের সেলিব্রেশনও হবে।
[আরও পড়ুন: জনজীবন বিপন্ন করে নবান্ন অভিযান কেন? বিজেপির বিরুদ্ধে হাই কোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা]
কিন্তু এই ‘ব্রেক আপ পার্টি’ ডিভোর্সের মতো বিষয়কে উৎসাহিত করবে না? ফোরাম অবশ্য তা মনে করছে না। নন্দিনীর পর্যবেক্ষণ, পুরুষ দিবস ১৯ নভেম্বর বলে ১৯জন পুরুষকে নিয়ে পার্টি। দীর্ঘ আইনি লড়াই শারীরিক ও মানসিকভাবে খারাপ প্রভাব ফেলে। হেনস্তার শিকার হওয়া বহু পুরুষ আত্মহত্যা করছেন! সংখ্যাটা ২০২০-র তুলনায় ২০২১ সালে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ‘বয়কটম্যারেজ’, ‘ম্যারেজস্ট্রাইক’-এর মতো হ্যাশট্যাগ আন্দোলন ট্রেন্ডিং হচ্ছে। সমস্যা যে হচ্ছে এগুলিই তার প্রমাণ। এমন পার্টি হলে ডিভোর্সি পুরুষরা চাপমুক্ত হয়ে আগের মতো আনন্দ করে দিনগুলি কাটাতে পারবেন।’’ তবে ভোপালের মতোই আইনি জটিলতা এড়াতে কলকাতার ১৯ নভেম্বরের পার্টিতেও স্ত্রীদের নাম-পরিচয় গোপন রাখা হবে। কোনও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে আনা হবে না।