দাঁতে গর্ত? মাঝে মধ্যেই ব্যথা হচ্ছে! দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। ফেলে রাখলেই ছড়িয়ে যায় দাঁতে সংক্রমণ। যা প্রাণ সংশয়ও ডেকে আনতে পারে। সতর্ক করছেন ম্যাক্সিলোফেশিয়াল সার্জন ডা. শিবালিক মুখোপাধ্যায়।
এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে দাঁতের সমস্যা ফেলে রাখলে অনেক বিপত্তি। তাই যদি ডাক্তারবাবু বলেন, দাঁত তোলা কিংবা রুট ক্যানাল (Root Canal Treatment) করা ছাড়া কোনও উপায় নেই তাহলে তো দেরি করা মানে জেনে বুঝে বিপদ ডেকে আনা। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন। করোনা পরিস্থিতিতে আজ নয় কাল করতে করতে যারা দাঁতের সমস্যা বিশেষত, স্পেশ ইনফেকশন, লু়ডউইংস অ্যাঞ্জিনার মতো রোগ ফেলে রেখেছেন খুব সাবধান।
সংক্রমণ ছড়িয়ে গেলে দাঁত ক্ষয়ে ফুটো হয়ে গেলে প্রথমেই সচেতন হোন। না হলে তা বাড়তে বাড়তে ইনফেকশন দাঁতের মাড়ির ভিতরে চলে যায়। তখন আরটিসি করা বা দাঁত তোলা ছাড়া কোনও উপায় নেই। আর না করে ফেলে রাখলে সেখান থেকে সংক্রমণ মাড়ির হাড়ে চলে যায়। সেখান থেকে পুঁজ জমতে থাকে। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘পেরিয়াপিক্যাল অ্যাবসেস’। এই সংক্রমণ যদি মারাত্মক আকার নেয় তখন হাড় ভেদ করে মুখের ত্বকেও চলে যায়। আর এই অবস্থায় যদি আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে বিশেষত, ডায়াবেটিস, অঙ্গ প্রতিস্থাপন ইত্যাদি অসুখ থাকে বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খান সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। সংক্রমণ মারাত্মক আকার নেয়। মুখ ফুলতে থাকে। ফোলা জায়গা লাল হয়ে থাকে, অসম্ভব ব্যথা থাকে। মুখে খুলতেও সমস্যা হয়। তখন ওরাল অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ হয় না। এই সমস্যাকেই বলা হয় স্পেস ইনফেকশন।
[আরও পড়ুন: Coronavirus: মায়ের শরীর থেকেও করোনা আক্রান্ত হতে পারে শিশু, দাবি গবেষকদের]
এমন হলে তখন রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দিতে হয়। মুখের সমস্যায় খেতে অসুবিধার কারণে শরীর দুর্বল হয়ে যায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। তাই এই অবস্থাতেও ঠিকমতো খাবার বা পুষ্টিজাতীয় খাবার খেতে বলা হয়। তারপর অতিরিক্ত পুঁজ বাইরে থেকে ড্রেন করতে লাগে। এইভাবে চিকিৎসা করে তবে রোগীর দাঁতের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে
আনা হয়। লুড উইগস অ্যাঞ্জিনা হল, সংক্রমণ অল্প থেকে বেশিমাত্রায় ছড়িয়ে গিয়ে তা দাঁত থেকে গলায় চলে যায়। ফলে শ্বাস নিয়েও কষ্ট হয় অনেকেরই। এই অসুখ প্রাণসংশয়ও ডেকে আনতে পারে। কাজেই দাঁতের সমস্যা অল্প বলে তা ফেলে রাখবেন না। কখন মারাত্মক হয়ে যাবে কেউ-ই বলতে পারে না।