সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুজোর (Durga Puja 2023) ছুটিতে বেড়ানোর জন্য নিজের পছন্দ করা জায়গাতে বুকিং পাচ্ছেন না? দেরি করে বুকিং করার তোড়জোড় শুরু করায় ঝামেলায় পড়েছেন? এদিকে পরিবারের সবাই পুজোর ছুটি অন্যরকম ভাবে কাটাতে চাইছেন? একদমই ভাববেন না। পুজোর বেড়ানোর অফ বিট ঠিকানা হতে পারে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়তলির বলরামপুরের কুমারীকানন। অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের নয়া ঠিকানা। বাংলার পর্যটনে এখনও সেভাবে উঠে আসেনি এই কেন্দ্র। তবে সরকারি শিলমোহরেই এই কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। গুগল ম্যাপে সার্চ করেও দেখে নিতে পারেন কুমারীকানন ইকো ট্যুরিজম কমপ্লেক্সের অবস্থান।
পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা পর্যটন কেন্দ্র যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি। হারিয়ে যাওয়ার নিশ্চিন্ত ঠিকানা। একেবারে গ্রাম্য পরিবেশে অন্যরকম পর্যটনের স্বাদ। রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ বা সিএডিসির অযোধ্যা পাহাড় প্রকল্পের অন্তর্গত এই কুমারীকানন ট্যুরিজম কমপ্লেক্স। গত দু’বছর আগে সিএডিসির এই ফার্মের ৭৫০ একর জায়গার মধ্যেই এই পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। এলাকার ১৬ থেকে ১৭ জন যুবক এই কেন্দ্রে কাজ করেন। তাদের বেতন সহ সমস্ত দেখভালের দায়িত্ব এই প্রকল্পের। এইসব খরচ দিয়েও সরকারের ঘরে আয়ের মুখ দেখাচ্ছে সিএডিসি।
[আরও পড়ুন: জমিদার বাড়ির পুজো দেখতে চান? ভাবছেন কীভাবে যাবেন? মুশকিল আসান পর্যটন দপ্তর]
এই কেন্দ্রে গোল ঘর নামে গেস্ট হাউস থাকলেও মাটির বাড়ির চেহারায় কটেজ। সেই সঙ্গে রয়েছে তাঁবু। কটেজ বা তাঁবু থেকেই দেখা যায় অযোধ্যা পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ গজাবুরু, তিলাই পাহাড়ের তলায় কাশের বন। এই জঙ্গলের রাস্তায় পাহাড়ি পথে ট্রেকিংও হবে। আর খাওয়া-দাওয়া তো একেবারেই পরিবেশ বান্ধব। জৈব সার দিয়ে তৈরি নানান মরশুমি সবজি। যা দেখা মিলবে একেবারে চোখের সামনেই। নিজেই পছন্দ করে নিতে পারবেন কোন সবজি দুপুর বা রাতের পাতে খাবেন। একইভাবে সিএডিসি-র ফার্মে হাঁস, মুরগি প্রতিপালন। মিলবে দেশি মুরগির মাংস, ডিম। এই ফার্মে চাষ হচ্ছে নানান মাছের। রুই, কাতলা, চারা পোনা, গলদা চিংড়ি, শোল, কৈ, পাবদা, ভেটকি, চিতল। যা খেতে চাইবেন সবই মিলবে। সঙ্গে পাওয়া যাবে ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’-র মাংস।
অযোধ্যা পাহাড়ে প্রতিপালন হওয়া বাংলার কালো ছাগলের সুস্বাদু মাংস মিলবে দুপুরের লাঞ্চে বা রাতের ডিনারে। এখানেই যে চাষ হয় বাংলার কালো ছাগলের। বিনোদনের জন্য এই ফার্মের বিভিন্ন জলাশয়ে মাছও ধরতে পারবেন। কেনাকাটা করতে পারবেন সিএডিসির স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে তৈরি নানা হস্ত সামগ্রীও। বর্তমানে এই কেন্দ্রে গেস্ট হাউস, মাটির কটেজ, তাঁবু মিলিয়ে ৫০ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। আগামী আর্থিক বছরে তা ১০০ জনের করা হবে বলে জানিয়েছেন সিএডিসির অযোধ্যা পাহাড় প্রকল্পের আধিকারিক সুশান্ত খাটুয়া।
তিনি বলেন, “অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের অন্যতম ঠিকানা কুমারীকানন ইকো ট্যুরিজম কমপ্লেক্স। এখানকার সবকিছুই একেবারে পরিবেশবান্ধব। অনলাইনে বুকিং করার সুযোগ রয়েছে।” www.cadc.com ও wbcadc.com ওয়েবসাইট থেকে বুকিং করা যাবে। এছাড়া বুকিং করার জন্য দুটি হেল্প ডেক্স রয়েছে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সিএডিসি কার্যালয় ও সল্টলেকের সিএডিসির মৃত্তিকা ভবনে। সিএডিসির অযোধ্যা পাহাড় প্রকল্পে অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় অতিথি আবাস অনেক আগেই বাংলার পর্যটনে জায়গা করে নিয়েছে। এবার অফবিট ট্যুরিজমের কেন্দ্র হিসাবে কুমারীকাননকে তুলে ধরতে চাইছে সিএডিসি।
দেখুন ভিডিও: