রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: দিঘায় ঝাউ জঙ্গলে ঘেরা নেচার পার্কে এবার পাখিদের আস্তানা তৈরির পরিকল্পনা নিল দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ। জগন্নাথ ধামের ঠিক উলটোদিকে মূল রাস্তার ধারে ঝাউগাছে ঘেরা বনাঞ্চলের মধ্যে নেচার পার্ক তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। প্রকৃতির কোলে এই পার্ক ঘিরে ইতিমধ্যেই পর্যটকদের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রবেশপথে দুটি জিরাফের মডেল বসানো হয়েছে, যা গলা তুলে পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছে। জঙ্গলের মধ্যে পেভার ব্লক দিয়ে মোড়া সুদৃশ্য রাস্তা তৈরি হয়েছে। আগামী ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ায় জগন্নাথধামের উদ্বোধন হবে। জগন্নাথধাম দর্শনে আসা মানুষজন যাতে পার্কে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে যেতে পারেন, পাখির কুজন শোনার সুযোগ পান, তার জন্য এই উদ্যোগ বলে দাবি দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের।
এই পার্কটি তৈরি করতে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করছে উন্নয়ন পর্ষদ। পার্ক গড়ে তুলতে ঝোপঝাড়ে এই নেচার পার্কে তৈরি হবে পাখিদের আস্তানা। দিঘায়। ঢেকে থাকা ছোট জলাশয় পরিষ্কার করা হয়েছে। এমনিতেই এখানকার বনাঞ্চলে ঝাউ-সহ অন্যান্য গাছগাছালিতে প্রচুর পাখির আনাগোনা লেগেই থাকে। জলাশয় পরিষ্কার হলে আরও পাখি আসবে। পাখিরা এসে যাতে বসতে পারে তার জন্য ঝুলন্ত খাঁচা, হাঁড়ি-সহ অন্যান্য পরিকাঠামোও তৈরি করা হচ্ছে। পাখিরা যাতে বসে খাবার খেতে পারে সেই ব্যবস্থাও থাকছে।
এই পার্কটি তৈরি করতে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করছে উন্নয়ন পর্ষদ। নিজস্ব ছবি।
জানা গিয়েছে, এই পার্কের প্রবেশপথে জিরাফ ছাড়াও একাধিক হরিণ, হাতির মডেল বসানো হয়েছে। আগামী দিনে কুমির, জেব্রা-সহ আরও বেশকিছু বণ্যপ্রাণীর মডেল বসানো হবে বলে জানা গিয়েছে। আর তার মাধ্যমেই পার্কটি শিশুদের কাছেও অন্যতম আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন পর্ষদের কর্তারা। জগন্নাথ মন্দিরের সামনে থেকে একেবারে সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত একটি পাকা রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মূল রাস্তা দিয়ে পার্কে ঢুকে পর্যটকরা যাতে সমুদ্রতীরে যেতে পারেন তার জন্য একাধিক রাস্তা সংযুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ একদিক দিয়ে ঢুকে সবদিক দিয়েই বেরতে পারবেন পর্যটকরা। পার্কে পর্যটকরা যাতে বিশ্রাম নিতে পারেন তার জন্য কাঠের বেশকিছু আসন তৈরি করা হয়েছে। শুধু পার্ক নয়, সামনে জাতীয় সড়কের ধারে নয়ানজুলির চারদিক সাজানো হয়েছে। লাল পাথর দিয়ে নয়ানজুলির পাড় বাঁধানো হয়েছে। সেখানে পর্যটকদের বসার আসন তৈরি করা হবে। আলো দিয়ে সাজানো হবে নয়ানজুলির আশপাশ।
দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক অপূর্বকুমার বিশ্বাস বলেন, “প্রথম পর্যায়ে অনেকটাই কাজ হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি কাজ হবে। তার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। নেচার পার্কে পাখিদের আস্তানা গড়ে তোলার বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য বন্য জীবজন্তুর মডেল বসানো হয়েছে। এই পার্ক পর্যটকদের নজর কাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।"