সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোভিড-১৯ (COVID-19) চিকিৎসায় ‘যুক্তিহীন’ এবং ‘অবৈজ্ঞানিক’ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে কনভ্যালেসেন্ট প্লাজমা (Plasma)। এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে দেশের প্রধান বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা ডক্টর বিজয় রাঘবনকে চিঠি লিখলেন একদল চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য আধিকারিক এবং বিশেষজ্ঞ। এইমস (AIIMS) এবং আইসিএমআর (ICMR) সংস্থার প্রধানদেরও এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্লাজমা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা প্রয়োজন বলে মত তাঁদের। এ বিষয়ে সরকারি নজরদারি আরও বাড়ানোর পক্ষে বিশেষজ্ঞ দল।
করোনাজয়ীদের শরীরের রক্ত থেকে প্লাজমা নিয়ে কোভিডের চিকিৎসা করছে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল। এই প্লাজমাকে অ্যান্টিভাইরাল নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডির (Antibody) উৎস হিসাবে দেখা হচ্ছে। অর্থাৎ কোভিড থেকে সেরে ওঠা কারও রক্ত কোভিড রোগীর দেহে প্রবেশ করালে সেই রোগীর শরীরে কোভিডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে। এই বিশ্বাসে হাজার-হাজার কোভিড রোগীর আত্মীয় প্লাজমা ডোনারের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
[আরও পডুন: কেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেশি আক্রান্ত যুবপ্রজন্ম? জোড়া কারণ তুলে ধরল ICMR]
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্লাজমার এই ব্যবহার যুক্তিহীন এবং অবৈজ্ঞানিক। এই বিষয়ে বিভিন্ন পরীক্ষার ফল উল্লেখ করে চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘বর্তমান গবেষণায় প্রমাণিত, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় কনভ্যালেসেন্ট প্লাজমার কোনও উপকার নেই। তবু দেশের প্রচুর হাসপাতালে প্লাজমা দিয়ে করোনার চিকিৎসা চলছে। রোগীদের পরিবার হন্যে হয়ে প্লাজমা খুঁজছেন। প্লাজমার জোগান কমে আসছে।’
[আরও পডুন:
বিশেষজ্ঞরা এই আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন যে, প্লাজমা চিকিৎসা উলটে নতুন বিপদ ডেকে আনতে পারে। এতে করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) আরও সংক্রামক প্রজাতি জন্ম নিতে পারে। চিঠির বয়ান অনুযায়ী, ‘প্লাজমা থেরাপির অযৌক্তিক ব্যবহার অতিমারীকে আরও শক্তি জোগাতে পারে। কারণ, এতে আরও সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’ বিশেষজ্ঞদের আবেদন, ‘দয়া করে আপনারা কোভিড চিকিৎসার গাইডলাইন দ্রুত নতুন করে বিশ্লেষণ করুন। যে চিকিৎসার কোনও উপকার নেই, বরং যা রোগীদের ও তাঁদের পরিবারকে হেনস্তা করছে, অবিলম্বে তা বন্ধ করুন। কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের উপরেও চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যাতে তাঁরা প্লাজমা থেরাপির জন্য রক্তদান করেন।’