নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বাংলার বালুচরি, কাঁথা স্টিচ শাড়িতে মন মজেজে রাজধানী দিল্লির বাসিন্দাদের। শুধু এই দুই শাড়িই নয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী ধনেখালি তাঁত, শান্তিনিকেতনের বাটিক প্রিন্টের শাড়ি থেকে চামড়ার জিনিসপত্র, দার্জিলিংয়ের চা, রায়গঞ্জের তুলাইপাঞ্জি চাল, সুন্দরবনের মধু, হরিণঘাটার ঘি, এমনকী, রসগোল্লাও দেদার বিকোচ্ছে আন্তর্জাতিক শিল্পমেলায় বাংলার প্যাভিলিয়নে।
করোনা অতিমারীর কারণে গত বছর কেনাবেচা কম হলেও চলতি বছরে বাংলার প্যাভিলিয়নের প্রায় সমস্ত স্টলেই মানুষের ঢল নেমেছে। বাংলার তৈরি সামগ্রী, বিশেষ করে জি আই ট্যাগ সম্বলিত জিনিসপত্র নিয়ে রাজধানীতে বিভিন্ন প্রদেশের মানুষের মনে আগ্রহ দেখে রীতিমতো খুশি পশ্চিমবঙ্গ সরকার তো বটেই, রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজাও। সদ্য শুক্রবারই তিনি শিল্পমেলায় বাংলার প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখেছেন। উপচে পড়া ভিড়ের মাঝে মঞ্জুষা থেকে তন্তুজ, বিশ্ববাংলা, এমনকী, রাজ্য সরকারের প্রাণিসম্পদ বিভাগের স্টলে কেনাকাটার হিড়িক দেখে মন্ত্রী যে বেজায় খুশি হয়েছে সেকথা ‘নোনতা থেকে মিষ্টি আমরা সবেতেই আছি’ বলে মজার ছলে প্রকাশও করেছেন।
[আরও পড়ুন: সামনেই বিয়ের মরসুম, ফ্যাশনে ইন কোন শাড়ি?]
রাজ্যর জি আই ট্যাগ (GI Tag) সম্বলিত পণ্যগুলিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকী, বিদেশে কীভাবে আরও জনপ্রিয় করে তোলা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন শশী পাঁজা। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “রাজ্যের ২১টি পণ্য জিআই ট্যাগ সম্বলিত। যা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয়। বাংলার মানুষ তো এ বিষয়েও জানেন। বাইরের মানুষের কাছেও যে এর জনপ্রিয়তা রয়েছে তা মেলায় স্বচক্ষে দেখলামও। এই জি আই ট্যাগ সম্বলিত পণ্যগুলিকে বিশ্বের দরবারে কীভাবে আরও তুলে ধরা যায় তা নিয়ে কিছু করার আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।”
বাংলার লোকসংস্কৃতির ঝলকও শিল্পমেলায় দেখানোর ব্যবস্থা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শুক্রবার মেলা প্রাঙ্গনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আম্পিথিয়েটারের ছৌ নাচের আসরে তিল ধারনের জায়গা ছিল না। সেই অনুষ্ঠানের পর থেকে বাংলার স্টলে জিআই ট্যাগ সম্বলিত ছৌ মুখোশের বিক্রি বেড়ে গিয়েছে। শনিবারও বাংলার প্যাভিলয়নে দেদার বিক্রিবাটা দোকানিদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। রবিবার মেলার শেষদিনেও হাসি অমলিন থাকার আশা রাজ্য সরকারের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের।