দেবব্রত দাস, খাতড়া: হোটেল, লজ খুলেছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে রাজ্যের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র বাঁকুড়ার (Bankura) মুকুটমণিপুর। করোনা সংক্রমণের জন্য রাজ্যে কড়া বিধিনিষেধের জেরে গত মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জঙ্গলমহলের জনপ্রিয় এই পর্যটনকেন্দ্রের সমস্ত হোটেল, লজ, রেস্তরাঁ নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছিল মুকুটমণিপুর।
গত ১ জুলাই থেকে কড়া বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হলে মুকুটমণিপুরের (Mukutmanipur) সমস্ত হোটেল, লজ, রেস্তরাঁ, নৌকা, স্টল, ভিউ পয়েন্ট খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য। প্রশাসন সূত্রে খবর, কোভিড (COVID-19) বিধি মেনে পুরো এলাকা স্যানিটাইজড করার পর ফের চালু হয়েছে এখানকার হোটেল, লজ, রেস্তরাঁ। আর পর্যটনকেন্দ্র খোলার সঙ্গে সঙ্গে এবার পর্যটকদের আনাগোনাও শুরু হয়েছে। পর্যটকদের উপস্থিতিতে এবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে বাঁকুড়ার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র মুকুটমণিপুর। তবে এখন পর্যটকদের সংখ্যা কিছুটা কম বলেই দাবি স্থানীয়দের।
একদিকে, শাল-পিয়ালের জঙ্গল। কংসাবতীর জলাধার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মুকুটমণিপুর পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমণপিপাসু বাঙালিদের যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। শীতের মরশুমে এই পর্যটনকেন্দ্র ভিড়ে টইটম্বুর থাকে। বছরের অন্যান্য সময়ে একটু কম হলেও ভিড় থাকে। কিন্তু এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পরই বিধানসভা ভোটের পরে সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: Dooars Tourism: সবুজে ঘেরা ডুয়ার্স ঘোরাবে কাচে মোড়া বিশেষ ট্রেন, খরচ কত জানেন?]
সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী হওয়ায় রাজ্য সরকারের নির্দেশে পর্যটনকেন্দ্র খুলেছে। হোটেল, লজে ফের শুরু হয়েছে পর্যটকদের বুকিং। মুকুটমণিপুর পর্যটনকেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। ফলে খুশি এখানকার হোটেল, লজ, রেস্তরাঁ থেকে নৌকাচালক সকলেই। মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিক তথা খাতড়ার মহকুমা শাসক মৈত্রী চক্রবর্তী বলেন, “কোভিড বিধি মেনে কম সংখ্যক কর্মী নিয়ে মুকুটমণিপুরে হোটেল, লজ-সহ দোকানপাট চালু হয়েছে। প্রতিটি জায়গায় সরকারি বিধি মেনে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে।”
মুকুটমণিপুর হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ সাহু, সম্পাদক তাপস মণ্ডল বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে কোভিড বিধি মেনে হোটেল, লজে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি হোটেলে স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। কম সংখ্যক কর্মী নিয়েই হোটেল আপাতত চালু করা হয়েছে। এরই মধ্যে পর্যটকরা ফের আসার জন্য বুকিং শুরু করেছেন। অনেকেই এখানে আসতে শুরু করেছেন। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে মুকুটমণিপুর। আমরা খুশি। তবে সপ্তাহের শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার পর্যটকদের ভিড় হচ্ছে। বাকি দিনগুলিতে পর্যটকদের সংখ্যা হাতে গোনা।”
[আরও পড়ুন: Toy Train: দার্জিলিং-NJP লং রুটে চালু হল টয় ট্রেন, এই সফরে সেরে নিতে পারেন জঙ্গল সাফারিও]
একই সঙ্গে হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিদ্যুৎ বিল মকুবের দাবি জানানো হয়েছে। যদিও বিদ্যুৎ দফতরের তরফে এই ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে মুকুটমণিপুর হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ সাহু জানিয়েছেন। স্থানীয় নৌকাচালক সুকেশ সিং সর্দার বলেন, “করোনা পরিস্থিতির জন্য গতবছর থেকে জলাধারে মাঝে মাঝেই নৌকা চলাচল বন্ধ ছিল। এখন পর্যটকরা ফের আসছেন। পর্যটকরা এলেই আমাদের রোজগার হবে।” পুজোর আগে মন্দা কাটিয়ে ফের ছন্দে ফিরছে শাল-পিয়ালের জঙ্গলে ঘেরা বাঁকুড়ার সৌন্দর্যের রানি মুকুটমণিপুর।