shono
Advertisement

বাড়িতে অক্সিজেন জোগান দিতে লাগান তুলসী-অ্যালোভেরা, কেন একথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

আর কোন কোন গাছ বাড়িতে লাগানো ভাল?
Posted: 09:21 AM Apr 26, 2021Updated: 09:21 AM Apr 26, 2021

স্টাফ রিপোর্টার: ঘরে অক্সিজেনের (Oxygen) জোগান রাখতে তুলসী (Tulsi), অ্যালোভেরা (Aloe Vera) লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা। করোনা (Corona Virus) দেশের অক্সিজেন সংকট সামনে এনে দিয়েছে। অনেকে আতঙ্কে প্রয়োজন ছাড়া অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে রাখছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ (Corona Second Wave) অক্সিজেনের গুরুত্ব কতটা তা দেশবাসী টের পাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে বেশি করে বৃক্ষরোপণের পরামর্শ দিচ্ছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। সেইসঙ্গে ঘরে পরিশুদ্ধ বাতাসের জন্য ইন্ডোর প্ল্যান্টেশনে জোর দিতে বলছেন পরিবেশবিদরা।

Advertisement

দূষণে জর্জরিত শহর। গাছ কেটে জলাশয় বুজিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে গগনচুম্বী বহুতল। ঘিঞ্জি এলাকায় গায়ে গা ঠেকে রয়েছে ফ্ল্যাটগুলো। আলো-হাওয়া চলাচলের জায়গাটুকু সেখানে নেই। ফ্ল্যাটে ঘরগুলো দমবন্ধ কর পরিবেশ। ঘরে ভিতরে এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাটাতে পারে তুলসী, স্নেক প্ল্যান্ট, অ্যালোভেরা। পরিবেশবিদ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী জানান, হিন্দু বাড়িতে তুলসী গাছ পুজো করা হয়। প্রতিদিন গাছে জল দেওয়া হয়। আগেকার লোকজন পড়াশোনা জানতেন না। তবুও তাঁরা অনেক বিজ্ঞানসম্মত কাজ করতেন। আসলে ঘরে তুলসী পাতার জুড়ি মেলা ভার। সর্দি-কাশিতে খুবই উপকারী। আবার ঘরের বাতাস দূষণমুক্ত রাখে তুলসী। তিনি আরও বলেন, “একটি তুলসী গাছ ২০ ঘন্টা পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে।

[আরও পড়ুন: আধুনিক পদ্ধতিতে সোনায় লগ্নি করুন, একেবারে নিশ্চিন্তে, পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞ]

কার্বন মনোঅক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং সালফার ডাই অক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস শোষণ করে ঘরের ভিতরে বাতাস পরিশুদ্ধ করে থাকে তুলসী। শুধু তুলসী নয় অন্দরসজ্জায় থাকা অ্যালোভেরার গুরুত্বও অপরিসীম। বাংলায় একে ঘৃতকুমারী বলে থাকে। এখন ঘরের বাতাস পরিশুদ্ধ করতে এয়ার পিউরিফায়ার বসাতে হচ্ছে। কিন্তু একটা অ্যালোভেরা গাছ ঘরের বাতাসের স্বাস্থ্য উন্নত করে দিতে পারে। স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী জানান, একটি অ্যালোভেরা গাছ ৯টি এয়ার পিউরিফায়ারের কাজ করে থাকে। অ্যালোভেরা দ্রুত বাতাসে ক্ষতিকারক টক্সিনকে শোষণ করে নিতে পারে।

ইন্ডোর প্ল্যান্টেশনের মধ্যে স্নেক প্ল্যান্ট সবথেকে জনপ্রিয়। অনেক ঘরের ডাইনিং, বেডরুমে এই গাছ লাগিয়ে রাখেন। ঘরের সৌন্দর্যের পাশাপাশি এই গাছ বাতাসে টক্সিন শোষণ করে নেয় এই গাছ। আমেরিকার নাসার স্বীকৃতি পেয়েছে এই গাছ। পরিবেশবিদ নবা দত্ত জানান, একটা স্নেক প্ল্যান্ট বাতাসে ট্রাইক্লোরোথাইলিন এবং ফরমাল ডিহাইড জাতীয় শোষণ করে থাকে। স্টাইরিন গ্যাসোলিন জাতীয় টক্সিন‌ও শুষে নিতে পারেন। এতে বাতাস পরিশুদ্ধ হয়। প্রায় ২০০ বর্গমিটার এলাকার বাতাস পরিশুদ্ধ করতে পারে এই গাছ। এছাড়া এই গাছ রাতেও অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে।

বাতাসের দূষিত কণা টোলুইন, ক্ষতিকারক টক্সিন বেঞ্জিন ও ফর্ম্যালডিহাইডকে শোষণ করে ঘরে অক্সিজেন লেভেল বাড়াতে সক্ষম বাঁশ গাছ‌ও। এইসব গাছগুলোর জন্য বড় জায়গা লাগে না। ঘরে ছোট টপে এগুলো বেড়ে উঠতে পারে। এদের যত্ন পরিচর্যার বিশেষ প্রয়োজন হয় না। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ের অধ্যাপক কৃষ্ণেন্দু আচার্যের বক্তব্য, “করোনা একদিন চলে যাবে। কিন্তু অক্সিজেন সংকট দিনে দিনে বাড়বে। জনসংখ্যা বাড়ছে। গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যেভাবে সবুজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এতে একদিন দোকান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে নিঃশ্বাস নিতে হবে। তাই বৃক্ষরোপণের সঙ্গে এখন থেকে ইন্ডোর প্ল্যান্টেশনে জোর দেওয়া দরকার।” তিনি বলেন, “ঘরে এয়ারপিউরিফায়ার লাগানোর বদলে জানলাতে একটি গাছ লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়। ইন্ডোর প্ল্যান্টেশন জায়গা বেশি লাগে না। জানালা, বারান্দা ছাদ যে কোনও জায়গায় টবে জলের বোতলে গাছ লাগানো যায়। এছাড়া ভার্টিকাল গার্ডেন করা যায়। সেখানে সবজি, ফুল, বাহারি সব ধরনের গাছ লাগানো যায়। আর সবুজ থাকলে সেখানে কার্বনের মাত্রা কমবে।

[আরও পড়ুন: বাড়ি বদলের সময়ে আসবাবের ভার বইতে পারছেন না? রইল সহজ কিছু টিপস]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement