ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য ও নিরুফা খাতুন: তীব্র দাবদাহে হাসফাঁস বঙ্গবাসী। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে লু বইবার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রোদের তেজে বাড়ির বাইরে বের হওয়া মুশকিল। ইতিমধ্য়ে রাজ্যে গরমে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। শুক্রবার থেকে এই বিপদ বাড়বে বলে আশঙ্কা আবহাওয়াবিদদের। কারণ, আগামী চারদিন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায় তাপপ্রবাহ চলবে। একই পরিস্থিতি হবে উত্তরের তিন জেলাতেও।
আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে চার-পাঁচ ডিগ্রি বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বইবে লু। গরম শুষ্ক হাওয়া থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে নবান্ন। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কী করবেন আর কী করবেন না।
[আরও পড়ুন: ভোরের কলকাতায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, দোকানের ভিতর ঝলসে মৃত বাবা-ছেলে]
কী করবেন
- রোদে বেরতে অবশ্যই ব্যবহার করুন ছাতা।
- ছাতা ব্যবহার না করলে মাথা-কাঁধে ভিজে গামছা-তোয়ালে-কাপড় দিয়ে ঢাকুন।
- বাইরের কাজ দুপুরের আগেই সেরে ফেলুন।
- ঠান্ডা জল সঙ্গে রাখুন। তেষ্টা না পেলেও বারবার জল পান করুন।
- নুন খাওয়া নিষিদ্ধ হলে জলে নুন মিশিয়ে পান করুন।
- পাতলা ঢিলেঢালা, হালকা রঙের সুতির জামাকাপড় পরুন।
- রোদ চশমা-টুপি-দস্তানা ব্যবহার করুন।
- চড়া রোদে মাথা ঘোরা/অত্যন্ত ক্লান্তি/বমি-বমি ভাব/মাথা যন্ত্রণা/জ্বর জ্বর ভাব অনুভূত হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঠান্ডা ছায়া জায়গায় বসে বা শুয়ে বিশ্রাম করুন। ঠান্ডা জল পান করুন। মুখে-ঘাড়ে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন।
কী করবেন না
- সকাল ১১ টা থেকে চারটা পর্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরবেন না।
- বেশিক্ষণ রোদে না থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
- রোদে দাঁড় করানো গাড়িতে শিশুদের শুইয়ে রেখে যাবেন না।
- অতিরিক্ত চা-কফি-বোতলের ঠান্ডা পানীয় বা মদ্যপান করা ঠিক নয়।
[আরও পড়ুন: গোপালকে পরীক্ষা করতে নিজেও টেট ‘পাশ’ করেন! ইডি’র কাছে চাঞ্চল্যকর দাবি কুন্তলের]
চিকিৎসকদের অভিমত, তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় উচ্চরক্ত চাপে ভোগা রোগীদের। সামান্য পরিশ্রমে ঘামে শরীরে লবনের পরিমান কমে যায়। দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই হালকা খাবার খেতে হবে। পেট খালি রাখা যাবেনা। একইরকম সমস্যা হয় স্কুল পড়ুয়াদেরও। বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জয়দেব রায়ের কথায়,‘‘স্কুল থেকে বাড়ি বাথরুমে না গিয়ে ফ্যানের সামনে বসে জামা-কাপড় হালকা করে নিতে হবে। অন্তত অাধঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে ওআরএস মেশানো জল খেতে হবে।’’ মেডিক্যাল কলেজের শিশু রোগ বিভাগের প্রধান ডা: কল্পনা দত্তের কথায়, ‘‘বাচ্চাদের দিনে অন্তত তিনবার স্নান করতে হবে। হালকা খাবার খাবে। বাড়িতে ফলের রস বা ফল খাবে। যেসব বাচ্চা পুলকারে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে তাদের অবশ্যই জলের বোতলে ওআরএস মিশিয়ে দিতে হবে। কারন একসঙ্গে অনেক বাচ্চা থাকলে হইচই করবে। ঘাম হবে। তীব্র গরমে বাচ্চা যদি নেতিয়ে পড়ে বা হাস-পায়ের পেশি শক্ত হয়, তবে দ্রুত ফ্যান চালিয়ে দিয়ে মুখে-ঘাড়ে জলের ঝাপটা দিতে হবে। তবে পাউডার একদম ব্যবহার নয়। রোমকুপ বন্ধ হয়ে যায়। ঘাম বেরোয়না।’’