ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দলীয় সংগঠনকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে চলতি সপ্তাহে বৈঠকে বসছে উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব। তার মধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম ও সাংসদ অর্জুন সিংয়ের দ্বন্দ্ব। লোকসভা ভোটের আগে প্রকাশ্যে এ নিয়ে অস্বস্তির কথাও স্বীকার করেছেন দলের সিনিয়র নেতারা। সেই পরিস্থিতি সামলাতে এবার শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ দাবি করল জেলা নেতৃত্ব। দলের নীতির কথা মনে করিয়ে তাঁরা জানাচ্ছেন, এলাকার সাংসদ বা বিধায়কের মধ্যে কোনও সমস্যা হলে তাতে শীর্ষ নেতৃত্ব ছাড়া কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান দরকার। সেই কারণেই রাজ্য নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
১৪ ডিসেম্বর বারাসতের তিতুমির হলে জেলা নেতৃত্বের বৈঠক। সমস্ত বিধায়ক, ব্লক নেতাকে সেই বৈঠকে ডেকেছে জেলা নেতৃত্ব। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেপ্তারের পরই এলাকায় সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করতে নিজেদের মধ্যে ১৫ দিন অন্তর বৈঠকে বসার কথা বলে দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বারাসতে দলের জেলা নেতৃত্বের বৈঠক। তার মধ্যেই নতুন করে বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের দুই হেভিওয়েট নেতার প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দলে অস্বস্তি বাড়িয়েছে বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন একাধিক সিনিয়র নেতা। তবে তা নিয়ে আগবাড়িয়ে কোনও মন্তব্য করতে বা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার এক্তিয়ার কারও নেই বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। দলের ওই জেলার নেতা এমন এক সিনিয়র নেতার কথায়, “আমরা চাই সমস্যার সমাধান হোক। যে কারণে দলকে একজোট করে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে বসতে বলেছেন, এইসব ঘটনা সেখানেই ফাঁক তৈরি করে দিচ্ছে। এই অবস্থায় দলের সিনিয়ররা ছাড়া কেউই এই পরিস্থিতির মধ্যে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।”
[আরও পড়ুন: দুবছরের মাথায় বেলডাঙা বিস্ফোরণে চার্জশিট পেশ NIA’র, রয়েছে TMC নেতা-সহ ৭ জনের নাম]
১৪ তারিখের বৈঠকে বিধায়কদের ডাকা হলেও সাংসদদের ডাকা হয়নি। ফলে বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম ওই বৈঠকে থাকলেও সাংসদ অর্জুন সিং ওই বৈঠকে থাকছেন না। তবে সাংসদ না থাকলেও ওই বৈঠকে বিধায়কের তরফে বা অন্য কোনও মহল থেকেও সাংসদ-বিধায়কের দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ যে উঠবে না তা নিশ্চিত করে জেলা নেতৃত্ব বলতে পারছে না। ফলে বৈঠকে এ নিয়ে সমাধানের দাবি উঠলে, তখন সম্ভাব্য উপায় বাতলাতে জেলা নেতাদের মুখ খুলতেই হতে পারে বলে জানিয়েছেন আরেক জেলা নেতা। তাঁর কথায়, “জেলার বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তখন তো নেতৃত্বে থাকা কয়েকজনকে এ নিয়ে বলতেই হবে। সেটা পরিস্থিতির বিচারে কাউকে কাউকে বলতে হতেই পারে।” তবে গোটা পরিস্থিতি সমাধানের জন্য রাজ্য নেতৃত্বের উপরই ভরসা করছে জেলা নেতৃত্ব।