সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সব জল্পনায় জল ঢেলে, জেলার কর্মী-সমর্থকদের আপত্তি ফুৎকারে উড়িয়ে ফের হুগলি থেকে লোকসভার টিকিট পেলেন লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। আসন্ন লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election 2024) উপলক্ষে শনিবার বিজেপির তরফে যে ২০ জনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হল সেখানে ৩ নাম নিয়ে রীতিমতো চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, বাঁকুড়ার সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার ও বিষ্ণুপুরের সৌমিত্র খাঁ। এই তিন সাংসদকে আসন্ন নির্বাচনে যাতে টিকিট না দেওয়া হয় তার জন্য জেলায় দফায় দফায় দেখা গিয়েছিল বিক্ষোভ। তবে ক্ষোভ, বিক্ষোভকে ফুৎকারে উড়িয়ে পুনরায় নিজ নিজ কেন্দ্রে টিকিট পেলেন এই ৩ নেতানেত্রী।
লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ‘বহিরাগত’, ‘পরিযায়ী’ বলে অভিযোগ করে সম্প্রতি হুগলির (Hooghly) একাধিক জায়গায় পোস্টার দিতে দেখা যায় স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বকে। শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি-সহ হুগলির একাধিক জায়গায় পোস্টারে লেখা হয়, ‘তৃণমূলকে হারাতে শ্রীরামপুরের ভূমিপুত্র চাই। কোনও বহিরাগতকে চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।’ এমনকী লকেটের পরিবর্তে একাধিক নামে দেওয়াল লিখনও দেখা যায় এই কেন্দ্রে। তবে শনিবার বিজেপির তরফে যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হল, সেখানে দেখা গেল লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। স্বাভাবিকভাবেই আশঙ্কা করা হচ্ছে, লকেটকে ফের প্রার্থী করায় ক্ষোভ বাড়তে পারে হুগলি বিজেপির অন্দরে।
[আরও পড়ুন: ত্রিপুরা ভেঙে নয়া রাজ্য? আদিবাসীদের শান্ত করতে ঐতিহাসিক ত্রিপাক্ষিক চুক্তি শাহের]
অন্যদিকে, নিজ কেন্দ্রে দলীয় ক্ষোভকে পাশ কাটিয়ে এবার ফের টিকিট পেয়েছেন বাঁকুড়া (Bankura) কেন্দ্রের ডাঃ সুভাষ সরকার ও বিষ্ণুপুরের সৌমিত্র খাঁ। সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন দীর্ঘদিন ধরেই জ্বলছে বাঁকুড়া কেন্দ্রে। নতুনগঞ্জে দলের জেলা কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকারকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিজেপি থেকে ‘বহিষ্কৃত’দের একাংশ। এদিন প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গ সফরের দিনেও মাচানতলায় ডাঃ সুভাষ সরকারের ছবিতে কালি লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেতা কর্মীরা। একইসঙ্গে দলীয় পতাকা হাতে বিজেপি কর্মীদের স্লোগান দিতে দেখা যায়, ‘তৃণমূলের দালাল সুভাষ সরকার দূর হটো’ বলে। একই অবস্থা দেখা যায় বিষ্ণুপুরের সৌমিত্র খাঁ-র ক্ষেত্রেও। বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে সৌমিত্রের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায় জেলা কর্মী, সমর্থকদের। এলাকায় পোস্টার পড়ে – যখন বিজেপি কর্মীদের ওপর অত্য়াচার হয়, তখন এলাকা ছেড়ে সৌমিত্র পালান। জেলা নেতৃত্বের ক্ষোভ বিক্ষোভ এড়িয়ে পুনরায় এই ৩ নেতৃত্বের টিকিট পাওয়া দলের অন্দরে অসন্তোষ তৈরি করবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
[আরও পড়ুন: হুগলিতেই লকেট, দেবের বিরুদ্ধে হিরণ, বাংলার ২০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা বিজেপির]
এছাড়া শনিবার বঙ্গে যে ২০ কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকা কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফে প্রকাশ করা হয়, সেখানে দেখা যায় গুটি কয়েক নতুন মুখ ছাড়া পুরনো প্রার্থীদের উপরই ভরসা রেখেছে দল। কোচবিহার থেকে ফের প্রার্থী করা হয়েছে নিশীথ প্রামাণিককে, বালুরঘাটে ফের সুকান্ত মজুমদার, মালদহ উত্তরে খগেন মুর্মু, রানাঘাটে জগন্নাথ সরকার, বনগাঁয় শান্তনু ঠাকুর, পুরুলিয়ায় জ্যোর্তিময় সিং মাহাতোকে ফের প্রার্থী করেছে বিজেপি।