নব্যেন্দু হাজরা: বৈঠক নিয়ে একাধিক চিঠি-চাপাটি, শর্ত আরোপ, শর্ত মেনে নেওয়া - এত কিছুর পরও নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী ও জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পথে। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপেক্ষা করার পরও গেলেন না আন্দোলনকারীরা। তাঁদের এক ও একমাত্র শর্ত, বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং না হলে তাঁরা আলোচনায় বসবেন না। অন্যদিকে, লাইভ স্ট্রিমিংয়ের শর্ত মানতে নারাজ রাজ্য সরকারও। কেন সেই আপত্তি? সন্ধেবেলা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তার যুক্তি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। বললেন, এটা বিচারাধীন বিষয়। সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। শীর্ষ আদালত যেভাবে লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারে, আমরা পারি না। এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টেরই নির্দিষ্ট নিয়ম আছে।''
বৃহস্পতিবার নবান্নের আমন্ত্রণে জুনিয়র চিকিৎসকদের ৩০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে যোগ দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। ৫ দফার মধ্যে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং। আর সেখানেই বার বার বাধা। লাইভ সম্প্রচার ছাড়া কিছুতেই বৈঠকে রাজি নন আন্দোলনকারীরা। নবান্ন অবশ্য ভিডিও রেকর্ডিংয়ের কথা জানিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী ২ ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করার পর বৈঠক ব্যর্থ হওয়ায় কার্যত হতাশ হয়েই বললেন, ''আমরা তিনটে ভিডিও ক্যামেরার ব্যবস্থা করেছিলাম। তাতে সব থাকত। আমরা পরে শেয়ার করতাম। কিন্তু ওঁরা এলেনই না!''
[আরও পড়ুন: ‘শূন্য ছিলি, শূন্য থাকবি’, বিতর্কিত পোস্টে ‘কমরেড’দের নিশানা পুলিশ ইন্সপেক্টরের, শুরু তদন্ত]
এর আগে লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে নবান্নের বাইরে আন্দোলনকারীদের বোঝাতে এসেছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কী কারণে তা করা সম্ভব নয়, তা বুঝিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, প্রশাসনিক বৈঠক যদি সরাসরি সম্প্রচার হয়, তাহলে এই বৈঠকটি হবে না কেন? তার জবাবে ডিজি জানিয়েছিলেন, ''বিচারাধীন বিষয় নিয়ে লাইভ স্ট্রিমিং করা সম্ভব নয়। তা বিধি বহির্ভূত। প্রশাসনিক বৈঠক লাইভ স্ট্রিমিং করা যায়। তা জনগণের জ্ঞাতার্থেই করা হয়। কিন্তু বিচারাধীন বিষয় নিয়ে তা করা যায় না।'' সেকথাই মুখ্যমন্ত্রীও বললেন।