সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha 2024) প্রথম দু'দফার ভোট ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ মঙ্গলবার। প্রথম এই তিন দফা মিলিয়ে দেশের অর্ধেকের বেশি আসনে ভোটগ্রহণ হয়ে গেল। একেবারে সঠিকভাবে বলতে গেলে দেশের ৫৪৩ আসনের মধ্যে ২৮৩টি আসনে ভোটগ্রহণ হল। এর মধ্যে প্রথম দুদফাতেই ভোট হয়েছে ১৯০ আসনে। মঙ্গলবার তৃতীয় দফায় ভোট হল ৯৩ আসনে।
ওয়াকিবহাল মহল বলছে, দেশে বিজেপির একাধিপত্য থাকা না থাকা অনেকটাই নির্ভর করছে এই তৃতীয় দফার উপর। কারণ তৃতীয় দফার যে আসনগুলিতে ভোট হল সেটা বিজেপির একেবারে শক্ত ঘাঁটি। ২০১৯-এ এই আসনগুলিতে অনবদ্য ফল করে গেরুয়া শিবির। লোকসভায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে হলে এই এলাকাগুলিতে ভালো ফল করতেই হবে গেরুয়া শিবিরকে।
[আরও পড়ুন: হতাশায় ঝুঁকে কাঁধ, কাঁদছেন রোহিত! কী এমন হল? ভিডিও ভাইরাল]
এই পর্বে সব মিলিয়ে ভোট হওয়ার কথা ছিল ৯৪ আসনে। তবে গুজরাটের সুরাটে বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ায় ভোট হল ৯৩ আসনে। এর মধ্যে এনডিএ জোট ২০১৯-এ জিতেছিল ৮১টি আসন। এবার সেই আসন ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ বিজেপির। আসলে কংগ্রেস শিবিরের দাবি, প্রথম দুদফায় বিজেপির পক্ষে ভোটাররা সেভাবে সাড়া দেননি। বরং বিরোধী ভোটাররা অনেকটা সক্রিয় ছিলেন। সেই ধারা বজায় থাকলে তৃতীয় দফাতেই বিজেপি সরকারের দফারফা হয়ে যাবে। বিজেপিও প্রথম দুদফা নিয়ে আর সেভাবে হম্বিতম্বি করছে না। চারশো পারের স্লোগানও এখন শোনা যাচ্ছে না মোদি-শাহদের (Amit Shah) মুখে। গেরুয়া শিবিরের অন্দরে আলোচনা, এই পর্বেও যদি ভোটাররা সাড়া না দেন, তাহলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
[আরও পড়ুন: ‘ধর্ষকের সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য করা যাবে না নির্যাতিতাকে’, নির্দেশ হাই কোর্টের]
আসলে এই পর্বে যে আসনগুলিতে ভোট হল, সেগুলির মধ্যে গুজরাটেরই ২৫টি আসন রয়েছে। গত দুই নির্বাচনেই এই রাজ্যের সব আসন গিয়েছে বিজেপির দখলে। কিন্তু মোদির নিজের রাজ্যেও রাজপুত ক্ষত্রিয়দের ক্ষোভ এবার মাথাব্যাথা বিজেপির। গেরুয়া শিবিরে সন্তুষ্ট নয় আদিবাসীরাও। আবার এই পর্বে ভোট হচ্ছে কর্নাটকের ১৪, মহারাষ্ট্রের ১১, উত্তরপ্রদেশের ১০, মধ্যপ্রদেশের ৯, ছত্তিশগড়ের ৭, বিহারের পাঁচ, অসমের চার, গোয়ার দুই এবং দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। গুজরাটের বাইরেও মধ্যপ্রদেশে আগেরবার সবকটি আসনে জিতেছিল বিজেপি, কর্নাটকেও বেশিরভাগ গিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের দখলে, বিহারেও সব আসন আগেরবার গিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের দখলে। মহারাষ্ট্রেও ভালো ফল হয়েছিল গেরুয়া শিবিরের। এবার এই ফলাফলের পুনরাবৃত্তি করাটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রথম দুই দফায় কিছুটা হলেও ক্ষতির মুখে গেরুয়া শিবির। ইন্ডিয়া (INDIA) জোট ভালো ফল করার ব্যাপারে আশাবাদী। এই পরিস্থিতিতে তৃতীয় দফাতে যদি উনিশের ফলের পুনরাবৃত্তি না করা সম্ভব হয়, তাহলে চাপে পড়ে যাবে এনডিএ (NDA)। ইন্ডিয়া শিবির আবার আশাবাদী, কর্নাটক, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রে তাঁরাই ভালো ফল করবে। গুজরাট, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশেও একাধিপত্য থাকবে না গেরুয়া শিবিরের। যদিও সবটাই বোঝা যাবে ৪ জুন।