shono
Advertisement

‘আমি এখনও BJP ছাড়িনি, তবে..’, একান্ত সাক্ষাৎকারে রাজনীতি প্রসঙ্গে পার্ণো

২০২১ সালে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
Posted: 07:15 PM Mar 08, 2024Updated: 09:30 PM Mar 08, 2024

শুক্রবারই সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে রাজদীপ ঘোষ পরিচালিত ‘বনবিবি’। ছবির অন্যতম মুখ‌্য চরিত্র পার্নো মিত্র (Parno Mittra)। সিনেমা, ব্যক্তিগত জীবন থেকে রাজনীতি, সব নিয়ে কথা বললেন অভিনেত্রী। শুনলেন শম্পালী মৌলিক

Advertisement

অনেকদিন পরে আপনি ছবির প্রধান মুখ। ভালোলাগা আছে নিশ্চয়ই?
এর আগে ‘তারকার মৃত্যু’ এসেছিল। তবে হ্যাঁ, এই ছবির মুখ আমি আর দিব্যেন্দুদা (ভট্টাচার্য)। হ্যাঁ, ভালোলাগা আছে। কারণ, ছবিটা ভালো, মন দিয়ে পার্ট করেছি। অনেকদিন পর আমার অভিনীত একটা ছবি রিলিজ হচ্ছে, ভালো লাগছে। মুখ‌্য চরিত্র হলাম কি হলাম না, সেটা ম‌্যাটার করে না, দিনের শেষে ভালো কাজটাই ম‌্যাটার করে।

সুন্দরবনের মানুষের স্ট্রাগল ছবির মূল ফোকাস। সেটার শুটিং পর্বও নিশ্চয়ই কষ্টসাধ‌্য ছিল?
অসম্ভব স্ট্রাগল করতে হয়েছে। বলে বোঝাতে পারব না, ওই দশটা দিন ওখানে কীভাবে কাটিয়েছি বা শুটিং করে ফিরে এসেছি জানি না। ওখানে জলপথ ছাড়া অন‌্যভাবে ট্র‌্যাভেল করা যায় কি না, ওটাই সব থেকে সহজ উপায়। সারাদিন লঞ্চেই বসে থাকতাম। আর ওখানে কোনও ভ‌্যানিটি ভ‌্যান নেই, বসার জায়গা বলতে লঞ্চই ছিল। ওখানেই ডাইনিং স্পেস, ওখানেই ভ‌্যানিটি, চেঞ্জিং স্পেস, সব কিছু ওটাই (হাসি)। ওই কাদার মধ্যে হাঁটা বোধহয় সবচেয়ে শক্ত ছিল। পায়ের তলায় ক্রমাগত ম‌্যানগ্রোভের কাঁটা ফুটছে, কিন্তু স্বাভাবিক দেখাতে হবে, কারণ শট দিতে হবে। সব মিলিয়ে খুবই কষ্টকর ছিল।

ছবি: ফেসবুক

আপনার চরিত্র ‘রেশম’। টু‌র গাইড সে, সদ‌্য রপ্ত করা ইংরেজিতে কথা বলে। তার জীবনের একটা স্ট্রাগল রয়েছে। আপনার আকর্ষণের জায়গা ছিল কোনটা?
কোথাও গিয়ে মনে হয়েছে, শি ইজ ভেরি ফিয়ার্স। অনেক স্তর আছে এই চরিত্রে। রেশমের অনেকটা জার্নি দেখানো হয়েছে। ওর বিয়ের আগে, বিধবা হওয়ার পরে এবং একসময় বয়সে বেশ ছোট ছেলের সঙ্গে তার প্রেম হচ্ছে। সমাজকে এড়িয়ে সেই প্রেম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন‌্য সাহস লাগে। ওর এই জার্নিটা ইন্টারেস্টিং। সেই জন‌্যই ‘রেশম’-এর চরিত্রটা করতে চেয়েছি। তাছাড়া রাজদীপ (ঘোষ) আমার খুব পুরনো বন্ধু। ২০০৯ থেকে ওকে চিনি। সেটাও ছবিটা করার একটা কারণ।

আর প্রযোজক রানা সরকারও তো একটা ফ‌্যাক্টর? যাঁর মাধ‌্যমে আপনি ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’-র মতো ব্রেক থ্রু পেয়েছিলেন।
হ্যাঁ। তবে ‘রঞ্জনা’-র সময় আমি রানাদাকে সেভাবে চিনতাম না, অঞ্জনদাই (দত্ত) কাস্ট করেন আমাকে। পরে রানাদা-মৌ-এর সঙ্গে আলাপ হয়। তারপর সময়ের সঙ্গে সম্পর্কটা ফ‌্যামিলির মতো হয়ে গিয়েছে। তখন গোয়া থেকে সবে ফিরেছি, চন্দনের ছবিটা (সুজি কিউ) করে। সেদিনই রাতে ফোন পাই রানাদার। বলে ‘তুই ফিরেছিস? আমরা আসছি’। বলতে পারো আমি রানাদার ঘরের মেয়ে। তখনই বলে, ‘এই ছবিটা করবি?’ আমি জানিয়েছিলাম, কেন করব না। ভালো কনটেন্ট হলে।

ছবিতে আর্য দাশগুপ্তর সঙ্গে আপনার চরিত্রের ঘনিষ্ঠতা বোঝা যাচ্ছে ট্রেলার দেখে। আপনার অনেক জুনিয়র আর্য। কতটা কমফর্টেবল ছিলেন?
ওকে আমাদের পরিচালক রাজদীপ এত বকেছে, শিশুর মতো হয়ে গিয়েছিল সেটে। ও খুবই ভালো ছেলে। হি ইজ ভেরি গুড ইন দ‌্য ফিল্ম। শুটিংয়ে যাওয়ার আগে অবধি বুঝতে পারিনি আর্য এতটা ভালো করবে। এইরকম কমপ্লেক্স গল্প, ওকে এত ইনোসেন্ট দেখতে, সব মিলিয়ে আমাদের দুজনের চরিত্রের কনট্রাস্ট দারুণ হয়েছে।

ছবি: ফেসবুক

[আরও পড়ুন: দেবের এতটা বিবর্তন ভাবাই যায় না, দারুণ: সৃজিত]

‘রেশম’-এর স্ট্রাগলের সঙ্গে নিজেকে কানেক্ট করতে পেরেছিলেন? আপনার নিজেরও একার লড়াই আছে।
আমার-তোমার বা রেশমের, আমাদের সকলেরই লড়াই আলাদা। দিনের শেষে আমাদের সকলের লড়াই চারপাশের সঙ্গে, জাজমেন্টের সঙ্গে। প্রত্যেকেরই লড়াই আছে। আজকে একজন পুরুষকে যেটা সহজে কেউ বলে না, মহিলাকে কিন্তু বলতে পারে। কিছুদিন আগে আপনার শ্রীলঙ্কা বেড়ানোর ছবি সোশ‌্যাল মিডিয়ায় দেখেছে মানুষ। তার একটা মুগ্ধতার জায়গা যেমন আছে, আবার ট্রোলিংয়ের জায়গাও রয়েছে। দুই ধরনের প্রতিক্রিয়াই
দেখা গিয়েছে।

তবু আপনি নিজের টার্মসে বাঁচাটাই বেছে নিয়েছেন।
আমি অ‌্যাকচুয়ালি তখন জানতাম না ট্রোল হয়েছে (হাসি)। ফিরে আসার পর বন্ধুরা বলেছে– তুই তো ভাইরাল হয়েছিস! ভাইরালের দুটো দিক থাকে– ভালো আর খারাপও । ঠিক আছে, সবার আমাকে ভালো লাগতে হবে না। আর আমারও সবাইকে ভালো লাগবে না। তাই না (হাসি)? এটাই পৃথিবীর নিয়ম। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমরা এটাই শিখেছি, খারাপ-ভালো দুটোই মেনে নিতে হবে।

মাঝখানে ছবিতে আপনাকে কম পাচ্ছিলাম। একসময় আপনার বাবাকে হারান, পরিবারে আপনিই আর্নিং মেম্বার। এই সময়টা ফিরে তাকালে কী মনে হয়? যদিও সেই সময়টা পেরিয়ে গেছেন…
হ্যাঁ, দশটা বছর চলে গেছে। ইটস পার্ট অফ লাইফ। আমি একা করছি না, অনেকেই আছে, যারা এরকম সংসার চালায়। অ‌্যাকট্রেস বলে সেটাকে গ্লোরিফাই করার যুক্তি নেই মনে করি (হাসি)। কত সিঙ্গল মাদার আছেন, আমার বয়সি কিংবা আমার থেকে ছোট মেয়েরাও আছে যারা বাবা বা মায়ের সঙ্গে থেকে সংসার চালায়। তাদেরও একাই করতে হয়।

অঞ্জন দত্ত, কৌশিক গঙ্গোপাধ‌্যায়, মোস্তাফা সরওয়ার ফারুকি, সৃজিত মুখোপাধ‌্যায় বা রাজ চক্রবর্তীর মতো পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন। আরও একটু বেশি সুযোগ আপনার প্রাপ‌্য ছিল না কি?
দেখো, লোভের তো শেষ নেই। আরও আরও চাই আমরা সবসময়। যেটুকু পেয়েছি ঠিক আছে। নিশ্চয়ই আরও হবে সকলের সঙ্গে (হাসি)। নতুনদেরও সুযোগ দিতে
হবে। তাদের সঙ্গেও কাজ করতে হবে।

এরপর কি সিনেমা, না ছোটপর্দার কাজ করতে চান?
যেটা হবে। যেটা ভালো লাগবে বেছে নেব। ছবির মধ্যে ‘অঙ্ক কি কঠিন’ মুক্তির অপেক্ষায়। আর রয়েছে ‘সুজি কিউ’।

বিজেপি-র সঙ্গে যোগ রয়েছে এখনও?
আমি এখনও ছাড়িনি। আই অ‌্যাম নট ইন অ‌্যাকটিভ পলিটিক্স, এটুকুই বলতে পারি।

আর কী আগ্রহী সক্রিয় রাজনীতিতে?
এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে পারছি না। পরবর্তীকালে কী হবে বলতে পারছি না। যখন যেটা মনে হয়, তখন সেটা করি।

[আরও পড়ুন: মাধবনের তাণ্ডবে জাগ্রত ‘শয়তান’, কীভাবে মোকাবিলা করলেন অজয়? পড়ুন রিভিউ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement