সৈকত মাইতি, তমলুক: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছিলেন। বিচারপতি থেকে হয়ে উঠেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের 'মসিহা'। সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচারব্যবস্থা থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন। রাজনীতির ময়দানে শুরু করেছেন নয়া ইনিংস। তমলুকে বিজেপির প্রার্থী তিনি। এবার তাঁর বিরুদ্ধে আইএসএফের বাজি এক চাকরিপ্রার্থী। মাহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে মাহিকে টিকিট দিল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। এছাড়া আরও তিনটি লোকসভা কেন্দ্রে শনিবার প্রার্থী ঘোষণা করল ISF। জঙ্গিপুরে লড়ছেন শাহজাহান বিশ্বাস। বনগাঁর প্রার্থী দীপক মজুমদার। কৃষ্ণনগরে লড়ছেন আফরোজা খাতুন (মণ্ডল)।
চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের মুখ মাহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে মাহি। ধর্মতলার SSC ধরনা মঞ্চের সভাপতি ছিলেন। ২০১৬ সালে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলা দায়ের করেছিলেন। ভোটে জিতলে বঞ্চিতদের কথা সংসদে তুলে ধরবেন বলেই জানান মাহি। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের মুখে গত ৩ মার্চ, দুপুরে বোমা ফাটিয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এর পর রাজনৈতিক ইনিংস শুরু করেন। বিজেপিতে যোগ দেন।
[আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতি মামলা: জ্যোতিপ্রিয়-সহ ৩ জনের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ইডির]
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে লড়ছেন তিনি। চাকরিপ্রার্থীদের 'মসিহা' হয়ে ওঠা বিচারপতির বিজেপিতে যোগে চাকরিপ্রার্থীরা যে খানিকটা বিমর্ষ হয়েছিলেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সেই আবেগকে হাতিয়ার করে তাঁর বিরুদ্ধে মাহিকে প্রার্থী করেছে ISF। তিনি যেহেতু নিজেও এক চাকরিপ্রার্থী। আর তথ্য বলছে, পূর্ব মেদিনীপুরে নিয়োগ দুর্নীতির শিকার সবচেয়ে বেশি। সে কারণেই হয়তো মাহিকে বাছল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট।
এদিকে, তৃণমূলের রাজ্য আইটি সেলের সভাপতি দেবাংশু ভট্টাচার্যই এবার তমলুকের ঘাসফুল শিবিরের প্রার্থী। দেবাংশুর নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের আইটি সেল বুঝিয়ে দিয়েছে শুধু রাজনীতির ময়দানেই লড়াই নয়, বিরোধীদের সঙ্গে জোর টক্কর চলবে সোশাল মিডিয়াতেও। সেই দেবাংশুই এবার লোকসভার মতো হাইভোল্টেজ নির্বাচনে তৃণমূলের মুখ। রাজনীতিতে নব্য না হলেও, তুলনামূলক তরুণ মুখ দেবাংশুতেই আস্থা রেখেছে ঘাসফুল শিবির। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে শেষ পর্যন্ত কে জয়ের হাসি হাসে, সেটাই এখন দেখার।