নিরুফা খাতুন: সুন্দরী মহিলারা এবার কার্যত ‘ঘুম’ কেড়েছে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানা (Zoological Garden, Alipore) কর্তৃপক্ষের। ভিড়ে কোলে ছোট্ট শিশুকে নিয়ে অপরূপ সুন্দরীকে দেখলে আরও সচেতন থাকার পরামর্শও দিচ্ছেন কর্তারা। ১৫ ডিসেম্বর থেকেই বাড়ানো হচ্ছে পুলিশি নিরাপত্তা।
সপ্তাহখানেক আগে এক মহিলা সঙ্গে বাচ্চা নিয়ে চিড়িয়াখানায় অন্য দর্শকদের মতোই ঘুরছিলেন। তাঁকে দেখে সাধারণ দর্শক ছাড়া অন্য কিছু ভাবার উপায় নেই। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরায় বেরিয়ে এল আসল তথ্য। ওই মহিলা ভিড়ের মাঝেই দর্শকদের ব্যাগ থেকে টাকা, ফোন তুলে নিয়েছেন! পরে কোলের শিশুর ডায়াপার থেকে মিলল ফোন, টাকার ব্যাগ। এমন ঘটনা আরও ঘটেছে। অপরূপ সুন্দরী। বয়স খুব বেশি নয়। স্ট্রেটনিং করা চুল। পরনে জিনস, টপ। হাতে দামি ফোন। গড়গড় করে ইংরেজিতে কথা বলছেন। এহেন মহিলা কি না পকেটমার! হতবাক কর্মী থেকে আধিকারিক।
[আরও পড়ুন: ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্যের ‘শাস্তি’, রাতের অন্ধকারে বন্দুকের বাঁট দিয়ে যুবককে মার দুষ্কৃতীদের]
শীতের মরশুমে চিড়িয়াখানার ভিড়ে কেপমারি নতুন নয়। সিসিটিভি লাগানোর পর কেপমারদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমেছিল। তবে এখন আবার বেড়ে গিয়েছে। পোশাক ও আদবকায়দা দেখে কেউ কল্পনা করতে পারবেন না যে, এই মহিলা একজন পকেটমার। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত বললেন, “আগে পকেটমারদের দেখলে বোঝা যেত। অনেক সময় কর্মী, নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদের সহজে চিহ্নিত করতে পারতেন। এখন কেপমারি গ্যাং মহিলাদের ব্যবহার করছে।” একদিন এক কর্মচারী হাতেনাতে এক পকেটমারকে ধরে ফেলেন। অধিকর্তার কথায়, “আমরা দেখে তাজ্জব হয়েছি। অল্পবয়সি সুন্দরী মহিলা। পরনে জিনস-টপ। হাতে দামি ফোন। ইংরেজিতে গড়গড় করে কথা বলছেন। এইরকম মহিলা যে পকেটমার, দেখে বিশ্বাস করতে সময় লেগেছিল।”
কেপমারি গ্যাং শুধু মহিলাদের ব্যবহার করছে না। অনেক সময় বাচ্চাদেরও সঙ্গে পাঠাচ্ছে। চিড়িয়াখানায় সাধারণত বাচ্চাদের ভিড় বেশি থাকে। এরা আবার একসঙ্গে চিড়িয়াখানায় ঢুকছে না। যেসব খাঁচায় দর্শকদের ভিড় বেশি হয়, সেগুলিকে নিশানা করছে। সাধারণত চিড়িয়াখানায় সবথেকে বেশি দর্শক টানে শিম্পাঞ্জি বাবু, বাঘ, সিংহ ও সাপের ঘর। চিড়িয়াখানার কর্মীরা জানান, সাপের ঘরে বেশি কেপমারির ঘটনা ঘটছে। ছোট জায়গা হওয়ায় সাপের ঘরে কেপমাররা দর্শকদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছেন। ভিড়ের মধ্যে তাঁরা সহজে হাত সাফাই করে ফেলছে। সামনে বড়দিন, নতুন বছর আসছে। এই সময় চিড়িয়াখানায় দর্শকদের ভিড় উপচে পড়ে। তার আগে কেপমারি ঠেকাতে চিড়িয়াখানার নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে। অধিকর্তা জানান, কেপমারি রুখতে ১৫ ডিসেম্বর থেকে চিড়িয়াখানায় বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।