গৌতম ভট্টাচার্য: ভোটের দরবারে তিনি সকলের ‘মিত্র’। ১২ কিলোমিটার হেঁটে এসেই সেজেগুজে ক্যামেরার সামনে দিব্যি দাঁড়িয়ে পড়েন। নিজেকে তৃণমূলের একনিষ্ঠ সৈনিক হিসেবে দাবি করেন। সেই মদন মিত্রর (Madan Mitra) কণ্ঠেই উলটো সুর! সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের ফেসবুক লাইভে (Facebook Live) দিব্যি বলে দিলেন দলত্যাগীরা সত্যিই কিছু পাননি। কেন একথা বললেন মদন মিত্র? আচমকা কী এমন হল তাঁর? ঘটনা হল, ব্যঙ্গের ছলে দলছুটদের বিঁধলেন কামারহাটির ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল প্রার্থী (TMC Candidate)।
সোমবার প্রচারের ফাঁকেই ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-এর ফেসবুক লাইভে ধরা দিয়েছিলেন মদন মিত্র। সেখানেই দলত্যাগীদের সম্পর্কে কথা বলতে গিয়েই বিদ্রুপের সুরে বলেন, “দলত্যাগীরা সত্যিই কিছু পায়নি। অর্জুন সিংয়ের নোবেল পাওয়া উচিত ছিল। বিশ্বভারতীর ভাইস চ্যান্সেলর করা উচিত ছিল শুভেন্দুকে। দক্ষিণেশ্বরে মুকুল রায়ের একটা মন্দির করা উচিত ছিল।” নিজের চেনা ছন্দে বলে দিয়েছিলেন, “অমানুষগুলো বেরিয়ে গিয়েছে। এখন এটা মানুষের দল হয়ে গিয়েছে।” ভোটের পর ‘শান্তিকুঞ্জ’ প্রাক্তন ক্ষমতার ‘অধিকারী’ হয়ে যাবে বলেও কটাক্ষ করেন মদন মিত্র। শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee) ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাননকে শোভন করেছিলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় এখন তা শোভন-বৈশাখী হয়ে গিয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ‘জনগণ দিন তালি, সব চেয়ার খালি’, বিজেপি নেতাদের ফাঁকা জনসভা নিয়ে শ্লেষ মমতার]
রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন মদন। সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে তাঁর কথায়। তিনিই রাজ্যের সেরা ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন একথা খোদ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) তাঁকে বলেছিলেন বলে জানান মদন। তারপরই টালিগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়কে বিঁধে বলেন, “অরূপের ধাঁচ অরূপের মতো, একেক জন একেক রকম হয়। টালিগঞ্জে অরূপ নামটা ফ্যাক্টর নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফ্যাক্টর। বাবুল সুপ্রিয় ভাল গান গাইতে পারে, কিন্তু শুধু গান গাইলেই তো আর হবে না!” বিধানসভা (WB Assembly Election 2021) ভোটে দাঁড়ানো সাংসদদের দোজবর বলে কটাক্ষ করেন মদন মিত্র। জানান, প্রার্থী না পেয়েই সাংসদদের প্রার্থী হিসেবে বাছতে হচ্ছে।
“বাংলা নিজের মেয়েকে চায়, আর কামারহাটি নিজের ছেলেকে চায়।” এ সংলাপও শোনা গেল মদন মিত্রর মুখ থেকে। জোরাল গলাতেই বলেন, ”খেলা হবে চোখে চোখে, খেলা হবে নখে নখে। নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় আসছে।”
ভোটের আগেই ‘লাভলি’ মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করেছেন মদন মিত্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও। প্রচারে সেই গান শোনানোর আবদারও আসে। আবার সেলফি তোলার সময় নাকি মহিলারা কানে ‘লাভলি’ও বলেন। এভাবেই মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন বলে বিশ্বাস মদন মিত্রর। তাই ভোটে জেতার বিষয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী তিনি।
দেখুন বিস্তারিত-