দীপালি সেন: কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনীতে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এবছর রাজ্যজুড়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭২৪ জন। সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে পরীক্ষার্থীরা হাতে পেয়ে যাবে প্রশ্নপত্র। ১৫ মিনিট প্রশ্নপত্র দেখার পর বেলা ১২টা থেকে লেখা শুরু করবে তারা। দুপুর ৩টে পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা।
পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রছাত্রীদের ঢুকতে দেওয়া হবে সকাল সাড়ে দশটা থেকেই। সাড়ে ১১টার মধ্যে পৌঁছে যেতে বলা হয়েছে তাদের। মাধ্যমিকের পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ২৮৬৭টি। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনায় প্রতিটি কেন্দ্রেই আঁটসাঁট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। প্রথমবার প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে সিসিটিভি নজরদারি, কেন্দ্রের ভিতরে পুলিশি প্রহরা, কেন্দ্রীয়ভাবে সব পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি চালাতে নয়া অ্যাপ-থাকছে এরকমই নানা ব্যবস্থা। কোনওভাবেই পরীক্ষা শুরুর আগে বা পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্নপত্রের কোনও ছবি পরীক্ষাকেন্দ্রের না বেরিয়ে আসে, তা নিশ্চিত করতে একাধিক সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘গোপনাঙ্গে হাত দিয়েছে পৃথ্বী’, শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে বিস্ফোরক স্বপ্না গিল]
মোবাইল থাকবে শুধুমাত্র সেন্টার সেক্রেটারি, অফিসার ইনচার্জ, ভেন্যু সুপারভাইজার এবং অতিরিক্ত ভেন্যু সুপারভাইজারদের কাছে। বাকি সকল শিক্ষক ও কর্মীদের মোবাইল বা স্মার্ট ঘড়ি নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। কেন্দ্রের ভিতরে থাকা স্বাস্থ্য ও পুলিশকর্মীরা শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন ফোন। প্রশ্নপত্র কাস্টোডিয়ানদের কাছ থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে পৌঁছনো শুরু হয়ে যাবে সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে। সেই প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার সময় থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকেই পরীক্ষাকেন্দ্র ছেড়ে বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হবে না। নকল রুখতে পরীক্ষাকেন্দ্রে জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। ৫০০ মিটারের মধ্যে জেরক্সের দোকানগুলিও বন্ধ থাকবে। অভিভাবকদের পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ।
পরীক্ষার্থীদেরও মেনে চলতে হবে একাধিক বিধিনিষেধ। তারা মোবাইল ফোন, স্মার্ট ঘড়ি, ক্যালকুলেটর, ক্যামেরার মতো বৈদ্যুতিন যন্ত্র নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারবে না। লেখার জন্য কোনও দাগ না থাকা ট্রান্সপারেন্ট বোর্ড নিয়ে ঢোকার অনুমতি রয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পরই মিলবে শৌচালয়ে যাওয়ার অনুমতি। কেউ ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর নিজের উত্তরপত্র জমা দিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চাইলে উত্তরপত্রের সঙ্গে জমা নেওয়া হবে পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রটিও। পরীক্ষা শেষের পরে পরীক্ষার্থী চাইলে ইনভিজিলেটরের থেকে তা সংগ্রহ করতে পারবে।
[আরও পড়ুন: জঙ্গি মুসার মল আক্রমণে জেরবার পার্থ! জেলে পায়চারি ‘উদ্বিগ্ন’ অর্পিতার]
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কন্ট্রোল রুম চালু রয়েছে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে। কন্ট্রোল রুমের নম্বরগুলি হল, ০৩৩২৩২১৩৮২৭ ও ০৩৩২৩৫৯২২৭৪। আজ সকাল সাড়ে ৭টা থেকে চালু হয়ে যাচ্ছে রাজ্যস্তরের কন্ট্রোল রুমও। ৭৯০৮৫০১০০৮-এই নম্বরটিতে ফোনের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপও করা যাবে। চালু থাকবে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। পরীক্ষা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা বা অসুবিধায় পড়লে এই নম্বরগুলিতে ফোন করতে পারবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে পরীক্ষার্থী, অভিভাবক সকলেই। পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পর্ষদ সভাপতির বার্তা, “মাধ্যমিক জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। কিন্তু, শেষ বড় পরীক্ষা নয়। ভালোভাবে, মন ঠাণ্ডা করে পরীক্ষা দাও। ফলাফল ভালো হবে এটাই আশা করব।”
আজ থেকেই শুরু হচ্ছে মাদ্রাসা পরীক্ষাও। হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল মিলিয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৮১ হাজার। এবছর প্রায় ৬ হাজার পরীক্ষার্থী কমেছে। এবার মোট ২০৪টি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা হবে। পরীক্ষা শুরু হবে বেলা ১২টায়, শেষ হবে দুপুর তিনটেয়। পরীক্ষার্থীদের ১১টা ৪৫-এর মধ্যে পৌঁছতে বলা হয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের তরফে।