দীপঙ্কর মণ্ডল: আগামী বছরের মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিক ফের খাতা-কলমেই নেওয়া হবে। তবে দিল্লি বোর্ডগুলির মত দু’দফায় নয়, একবারেই হবে পরীক্ষা। টেস্ট হবে কি না তা স্কুলগুলির উপর ছেড়ে দেবে রাজ্য সরকার। বুধবার স্কুলশিক্ষা দপ্তরে মধ্যশিক্ষা (Madhyamik) পর্ষদ ও উচ্চমাধ্যমিক (HS) শিক্ষা সংসদ এই প্রস্তাব পাঠিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, আগামী বছর মার্চে মাধ্যমিক ও এপ্রিলে উচ্চমাধ্যমিক হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি মিললে রুটিন ঘোষণা করা হবে।
সিবিএসই ও সিআইএসসিই বোর্ড দশম ও দ্বাদশস্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা অফলাইনে নেওয়ার ঘোষণা করেছে। পর্ষদ ও সংসদের কর্তারা মুখ খুলতে না চাইলেও নিশ্চিত করেছেন, সরকারি সিলমোহর মিললে ওই সময়েই ফের খাতায় কলমে দুই মেগা পরীক্ষা হবে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এপ্রিলের শেষে। সিবিএসই দশম এবং দ্বাদশ–এর পরীক্ষার দিন জানিয়ে দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: Alapan Banerjee: ‘ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন’, আলাপন ইস্যুতে কলকাতা হাই কোর্টে মুখ পুড়ল কেন্দ্রের]
সিআইএসসিই ঘোষণা করেছে দু’টি সেমেস্টারের মাধ্যমে পরীক্ষা হবে। দু’টি দিল্লি বোর্ডের তুলনায় এ রাজ্যে বেশ কয়েকগুন বেশি ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিকে বসে। গত বছর মার্চ মাস থেকে স্কুল বন্ধ থাকায় কোনও ক্লাসের পরীক্ষাই হয়নি। অফলাইনে পরীক্ষা না নিলে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ছিল সমস্যার। ১৬ নভেম্বর থেকে খুলছে স্কুল। নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস হবে। এবার পরীক্ষা নিতে অসুবিধা হবে না বলে মনে করছে পর্ষদ এবং সংসদ। এদিন দু’টি পরীক্ষার খসড়া রুটিন জমা পড়েছে স্কুলশিক্ষা দপ্তরে। নবান্নের সায় মিললে চূড়ান্ত ঘোষণা হবে।
মাধ্যমিক—উচ্চমাধ্যমিক মিলিয়ে চলতি বছরে প্রায় কুড়ি লক্ষ ছাত্রছাত্রী করোনার প্রকোপে পরীক্ষায় বসতে পারেনি। তবে প্রত্যেকেই মার্কশিট পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে পর্ষদ এবং সংসদ আগামী বছর অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে প্রস্তাব পেশ করেছে। এক অফিসার জানিয়েছেন, এবার শুধু মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি মেলার অপেক্ষা।
[আরও পড়ুন: ‘আক্রান্ত’ শামির জন্য সরব গোটা বিশ্ব, দুঃসময়ে পাশে পেলেন না স্ত্রী হাসিন জাহানকে]
মাধ্যমিকের মার্কশিট তৈরি হয়েছিল নবম শ্রেণিতে পাওয়া নম্বরের অর্ধেক ও দশমে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে পাওয়া নম্বরের পাঁচগুন যোগ করে। উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়নে জোর দেওয়া হয় মাধ্যমিক ও একাদশে প্রাপ্ত নম্বরের উপর। কিন্তু চলতি বছরে কোনও পরীক্ষাই হয়নি। এরফলে ২০২২ সালের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার সময় পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া সমাধানের কোনও পথ পাননি পর্ষদ ও সংসদের কর্তারা। পাশাপাশি ২০২১–এর মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিকে পড়ুয়াদের থেকে ফি নেওয়া হলেও প্রশ্নপত্র ছাপা, তা বিলির জন্য গাড়ি, উত্তরপত্র বিলি, খাতা দেখার জন্য শিক্ষকদের সাম্মানিক, পরীক্ষকদের ভাতা ইত্যাদি খাতে খরচ হয়নি। আগামী বছরের বছরের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের জন্যও ফি নেওয়া হয়েছে। করোনার প্রকোপও কমছে। সবদিক খতিয়ে দেখে খাতায় কলমে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে সায় দিয়েছে পর্ষদ এবং সংসদ।