সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দশটা ক্লাব দূরস্থান। চুক্তিবদ্ধ একটা ক্লাবও সুপার লিগ (Super League) প্রোজেক্ট ছেড়ে যেতে পারবে না! কারণ চুক্তিটা সেভাবেই করা হয়েছে। আর সুপার লিগের প্রধান স্পনসর জে পি মর্গ্যান গ্রুপ ছেড়ে চলে গিয়েছে, সে খবরও ডাহা মিথ্যে! সুপার লিগ আছে, সুপার লিগ থাকবে এবং সুপার লিগ হবে!
গোটা ফুটবলবিশ্ব যখন ধরে নিয়েছে বিদ্রোহী লিগের বিনাশ অঙ্কুরেই হয়ে গিয়েছে, ফুটবল পৃথিবীতে যখন জল্পনা চলছে বিদ্রোহী বারোর ভবিষ্যৎ নিয়ে, তখন সুপার লিগ নিয়ে নতুন করে হুঙ্কার দিয়ে রাখলেন রিয়াল মাদ্রিদ তথা সুপার লিগ প্রেসিডেন্ট ফ্লেরেন্তিনো পেরেজ (Florentino Pérez)। পেরেজ সোজাসাপ্টা বলে দিলেন, সুপার লিগ খেলবে বলে যে ইউরোপের বারোটা শক্তিধর ক্লাব চুক্তি সই করেছিল, তারা কেউ এখন ছেড়ে যেতে পারবে না। “সুপার লিগের চুক্তিটা বাইন্ডিং কন্ট্রাক্ট। এখন বাইন্ডিং কন্ট্রাক্ট কী, সেটা আমি বোঝাতে বসব না। কিন্তু একটা কথা বলে দিচ্ছি। কোনও ক্লাব এখন সুপার লিগ ছেড়ে যেতে পারবে না,” স্পেনীয় মিডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে দিয়েছেন পেরেজ।
[আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে পারবে রিয়াল, বার্সা-সহ বিদ্রোহী ১২ দল? কী জানাল UEFA?]
রিয়াল (Real Madrid), বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো, দুই ম্যাঞ্চেস্টার, চেলসি, লিভারপুল, আর্সেনাল, টটেনহ্যাম, দুই মিলান এবং জুভেন্তাসের মতো বারোটা মহাশক্তিধর ইউরোপীয় ক্লাবকে নিয়ে গঠন হয়েছিল বিদ্রোহী লিগ। সুপার লিগ যার পোশাকি নাম। যারা ঠিক করে ফেলেছিল, আগামী মরশুম থেকে উয়েফার ‘আশ্রয়ে’ তারা আর থাকবে না, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (Champions Legue) না খেলে, খেলবে সুপার লিগ। যে টুর্নামেন্টে কোনও ওঠা-নামা থাকবে না। কিন্তু ঘনঘন খেলা হবে মহাশক্তিদের। তাতে মুনাফা বাড়বে, কাটবে আর্থিক সংকটে পড়া ক্লাবগুলো, বাঁচবে ফুটবল। কিন্তু সেই সুপার লিগ ভূমিষ্ঠ হওয়ার আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই সব ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ফিফা হুমকি দিতে থাকে। উয়েফা শাসাতে থাকে। সবচেয়ে বড় কথা, ক্লাবগুলোর সমর্থককুল বিদ্রোহের পথে নেমে পড়ে। যার পর নতিস্বীকারে বাধ্য হয় বারোটার মধ্যে দশটা ক্লাব। রিয়াল আর বার্সেলোনা বাদে সবাই ঘোষণা করে দেয় যে, তারা আর সুপার লিগ প্রোজেক্টে নেই। তারা ভুল করেছিল। কিন্তু ভুল বুঝতে পেরে বর্তমানে ক্ষমাপ্রার্থী।
কিন্তু পেরেজ তিনি এখনও নিজের অবস্থানে অনড়। যিনি বলে দিচ্ছেন, সুপার লিগ প্রোজেক্ট আপাতত স্থগিত। কিন্তু মোটেও শেষ হয়ে যায়নি। “সমস্যা হল কিছু ক্লাব চাপে পড়ে বলতে বাধ্য হয়েছে যে, তারা সব কিছু ছেড়েছুড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রোজেক্টটা থাকবে, খুব তাড়াতাড়ি সেটা এগোবেও। কারণ, সুপার লিগ এখনও আছে, তার সদস্যরাও আছে। এখন কয়েকটা সপ্তাহ আমরা সময় নেব সব গুছিয়ে নিতে। আসলে কিছু লোক লাভের অংশ না পেয়ে ঝামেলা বাঁধাচ্ছে। তাই প্রোজেক্টটা শেষ করতে নেমে পড়েছে,” বলে দিয়েছেন পেরেজ। সঙ্গে যোগ করে দিয়েছেন, “অনেকেই বলছেন যে, জেপি মর্গ্যান গ্রুপ নাকি সরে গিয়েছে। সম্পূর্ণ বাজে কথা।”
[আরও পড়ুন: সরে গেল দশ ক্লাব, ৪৮ ঘণ্টাতেই মৃত্যুঘণ্টা ইউরোপিয়ান সুপার লিগের]
সুপার লিগ প্রেসিডেন্টের বক্তব্য হল, ক্লাব ফুটবলের একমাত্র ভবিষ্যৎ হল সুপার লিগ। নইলে ২০২৪ সালের মধ্যে সমস্ত ক্লাব দেউলিয়া হয়ে যাবে। “তখন দেখবেন সব ক্লাবে বিদ্রোহ বেঁধে গিয়েছে। একমাত্র সরকার যে সব ক্লাব চালানোর খরচ দেবে আর যে সব ক্লাব কোটিপতিরা নিজেদের ইচ্ছেপূরণের জন্য চালায়, যাদের লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসানে কিছু যায় আসে না, সে সব ক্লাবই থাকবে। অন্য কেউ নয়। তাই ঝামেলা করে লাভ নেই। সুপার লিগ হবেই,’’ স্পষ্ট বলে রেখেছেন পেরেজ।